শামসুর রহিম ফারুক
বন্ধু, তোমাকে খুঁজি
যে আমার বন্ধু ছিল,
তাকে আমি চোখে দেখিনি।
পথের ধারে যেখানে দেবদারুর প্রলম্বিত ছায়া পড়েছিল
যেখানে শুকনো ছিন্নপাতা ধুলোয়-হাওয়ায় ওড়েছিল
বনবিথীকায়, পর্ণকুটিরে আমার যাবার অপেক্ষায় ছিল সে।
যে আমার বন্ধু ছিল,
শরতের শুভ্র বালুকাবেলায় কাশফুলের নরম ঝোপে
দাপিয়ে বেড়ানো কিশোর। বর্ষার প্রেমিকার চোখের মতো
স্বচ্ছ জলে, শাপলার চঞ্চল সমাবেশে ছিপ ফেলে বসে
থাকা দুরন্ত বালক আমাকে ডেকেছিল আনন্দ সলিলে।
বারিধারায় খুঁজে ছিল মসৃণ ঝিনুক শুনে ছিল ডাহুকের
বিরহ ডাক সেইতো স্রোত-স্নিগ্ধ অচেনা গাঁয়ে আমায় ডেকে ছিল।
যে আমার বন্ধু ছিল, আমার এই পৌরাণিক শহরে
বৃক্ষ শোভিত পাহাড়ি পথ ধরে হেঁটে যেত। নক্ষত্রের উপত্যকায় খুঁজে
ফিরেছে, আমাকে গড়ে দিবে বলে সপ্তর্ষীমন্ডল এনেছিল স্বপ্নবারতা।
এক দিন সাগরে ঝড়ঝঞ্ঝা-উত্তাল উর্মিমালায় পাল তুলেছিল সে।
আমি যাইনি বলে অমানিশার ঘোর অন্ধকারে অপেক্ষায় থেকে থেকে রাত পাড়ি দিল
নোনাজলে ঘূর্ণি হাওয়ায় ভেসে ছিল মৃত্যুর সম্মুখ দুয়ারে দাঁড়িয়ে সে ছিল প্রচন্ড নির্ভয়
তার নাম শুনিনি আমি, তাকে আমি চোখে দেখিনি।
"