শিশুদের ঈদ পোশাক
ঈদ উৎসবে শিশুদের আনন্দটাই থাকে সবচেয়ে বেশি। আর তাইতো যেকোনো উৎসবে সবার আগে প্রাধান্য দেওয়া হয় শিশুদের। শিশুদের ঘিরেই ঈদের আনন্দ। ঈদ মানেই তো শিশুর খুশি। শিশুদের জামাটা তাই কিনতে হয় সবার আগে। তাদের জামাটা হতে হয় একটু অন্যরকম, যেন সবার থেকে আলাদা।
ঈদবাজারে শিশুদের কথা মাথায় রেখে তাই আয়োজনেরও কমতি নেই। চলতি ট্রেন্ডের কথা মাথায় রেখে বাহুবলি-টু অথবা যে পুতুলটি নিয়ে সে খেলে, সেই ‘বার্বি ডলে’র গোলাপি ঝালরের পোশাকটি চাই তাদের। আবার কার্টুন চরিত্র ব্যাটম্যান, সুপারম্যানের মতো সাজতেও মন চায়। মেয়েশিশুরা অনেক সময় শাড়ি পরতে আগ্রহ দেখায়। অন্যদিকে ছেলেশিশুরা ঈদের নামাজে যেতে পাঞ্জাবির বায়না ধরে। ঈদ বলে কথা। তাই শিশুদের মুখে হাসি ফোটাতে তাদের বায়না মেটাতেই হয়।
এবারের ঈদে গরম আবার বৃষ্টি-এ বিষয় মাথায় রেখে অনেকটাই আবহাওয়া উপযোগী রকমারি ডিজাইন নিয়ে
এসেছে বিভিন্ন বুটিকস হাউস ও শপিং মলগুলো। দেশি পোশাকের সঙ্গে
শিশুদের জন্য রয়েছে ওয়েস্টার্ন ডিজাইনের পোশাক। ডিজাইনে
রয়েছে রঙের বৈচিত্র্যময় ব্যবহার।
সুতি, লিনেনের মতো আরামদায়ক কাপড়ের পোশাক প্রাধান্য পাচ্ছে এবার সবখানেই। মেয়েদের জন্য সুতির টুপিস, থ্রিপিস, স্কার্ট-টপ এবং এক ছাঁটের ফ্রকের বড় সংগ্রহ এনেছে বিভিন্ন ফ্যাশন হাউস। তবে এবারের ঈদে মেয়েদের পোশাকের মধ্যে ক্যাপগাউন আর সারারাটাই
চলছে বেশি।
ছেলেদের জন্য রয়েছে চেক আর ডোরাকাটা হাফ হাতা শার্ট, পাঞ্জাবি ও ফতুয়া। এ ক্ষেত্রে এবার সুতি কাপড়ের প্রাধান্য রয়েছে বেশি। গ্রামীণ চেকের হাফ হাতা শার্টের ওপর বিভিন্ন প্রিন্ট, লেখা, কার্টুন আর ছবির ডিজাইন। সঙ্গে রয়েছে হাফ, ফুল ও থ্রি কোয়ার্টার প্যান্ট। জিন্স ও গ্যাবাডিনের কাপড়ের প্যান্টই বেশি পছন্দ শিশুদের। এ ছাড়া অনেক শিশু শার্টের পরিবর্তে টি-শার্ট পরতে বেশি পছন্দ করে। শিশুর জন্য টি-শার্ট বেশি আরামদায়ক। প্রচলিত চেক ডিজাইনের টি-শার্টের পাশাপাশি বিভিন্ন রং, নকশা, ছবি, দৃশ্য আর ক্ষুদে বার্তায় নানা ডিজাইনের টি-শার্টও রয়েছে বাজারে।
অনেক শিশুই ঈদের দিন একটু বড়দের মতো করে সাজতে ভালোবাসে। মা-খালাদের মতো সালোয়ার-কামিজ ও শাড়ি, বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া বড় বোনের মতো লংস্কার্ট বা টপস আর ভাইয়া বা আব্বুর মতো পাঞ্জাবিও চাই তাদের। অনেকে তো আবার পত্রিকার ঈদ ফ্যাশনের পাতা নিয়ে মা-বাবার কাছে নির্দিষ্ট নকশার পোশাকটির বায়না ধরে। অনেকের বায়না, ‘এবার কিন্তু মার্কেটে নিয়ে গিয়ে আমার পছন্দের জিনিসটিই কিনে দিতে হবে।’ আর তাই অন্যান্য পোশাকের পাশাপাশি রয়েছে বিভিন্ন ধরনের লেহেঙ্গা, সালোয়ার-কামিজ ও শাড়ি। ছেলেদের জন্য রয়েছে পাঞ্জাবি।
এবারে ছেলেদের পাঞ্জাবিতে দেখা মিলছে ডিজিটাল প্রিন্ট ছাপা। সাদার পাশাপাশি রঙিন পাঞ্জাবি বেশ পছন্দ ছেলেশিশুদের। ঈদ উপলক্ষে এবারে রাজা সাহেব, মনীষ মালহোত্রা, যুবরাজসহ বিভিন্ন নতুন পাঞ্জাবি এবং শেরওয়ানিতেই শিশুদের নজর বেশি বলে জানালেন বসুন্ধরা শপিং কমপ্লেক্সেও ল্যাভেন্ডারের কর্মকর্তা শোভন চৌধুরী। এ ছাড়া আরো বিভিন্ন ধরনের নতুন সব স্টাইল রয়েছে নিউমার্কেটসহ রাজধানীর প্রায় সব জায়গায়ই।
মেয়েশিশুদের বাহুবলি-টু জামা তিন হাজার থেকে সাত হাজার টাকার মধ্যে। অন্যান্য ফ্রকের দাম ২৫০ থেকে ২০০০ টাকা; টুপিস ও থ্রিপিসের দাম ৮০০ থেকে ৩০০০; লেহেঙ্গা, সারারা ৭০০ থেকে ১৫০০; গাউন ১৫০০ থেকে ৬০০০ টাকা। ছেলেশিশুদের শার্টের দাম পড়বে ২০০ থেকে ১২০০ টাকা; পাঞ্জাবি ও শেরওয়ানি রয়েছে ৬০০ থেকে ৬০০০; হাফপ্যান্ট ও ফুলপ্যান্টের দাম ৩০০ থেকে ১৫০০ টাকা। পাঞ্জাবির সঙ্গে আলাদা করে পাজামা বা ধুতি কিনতে চাইলে এর দাম পড়বে ২৫০ থেকে ১০০০ টাকা। মেয়েশিশুদের শাড়ি ৫০০ থেকে শুরু। তবে শোরুম ও কাপড়ের মানের জন্য দামের কিছুটা হেরফের হতে পারে।
"