আনোয়ারুল হক
ডাকছো কেন আমাকে
আমাকে ডাকছো কেন? অবাক রমণী
আমিও বিব্রত! তাই তো! নিজেকে প্রশ্ন করি
কেন তারে ডাকি?
পাখি কেন ডাকে, পাখি জানে?
কেন গান গায়, কেন ওড়াউড়ি, পাখা ঝাপটায়
সুবহে সাদেকে, সারাদিন ডালে ও সবুজে
আমাদের জানালায়? কেন ফুল ফোটে, ফুল জানে?
বিরহের মালা গাঁথে শীতের সকালে শিউলি জানে?
কেন সে শুধায়, কেন ডাকি?
কে না জানে, এই মাটি চর্যাপদের কাহ্নপার লালমাইয়ের
লালমাটি, গুঞ্জরমালা পড়ে শবরি বালিকার
নিকানো উঠোনের মাটি
তুমি আমি তার উত্তরাধিকার।
সেকাল থেকে কানুর গীত তোমাকেই ডেকে ডেকে
ফিরে গেছে সবুজ পাতার গৃহে
বিকেলে পড়ন্ত আলোয় দেখেছি তারে
তর্জনীর ইশারায় ডেকেছে আমাকে
কালের হরিণী তুমি লাল ফোঁটা বুটিকের শাড়ি পরে
বাস করো আইহন গৃহে
মুগ্ধ চোখের পলক
কী করে তোমাকে বলি, কেন ডাকি?
কেন ডাকে মরুর খৈয়াম শেফালি পাতার কুটিরে
অনন্ত নিদ্রায় শুয়ে সুরা ও সাকিরে?
কেন ডাকে চিরকালের বাঁশি বিরহি রাধা?
নিরন্তর অন্তর ডাকে অন্তর পাখিরে। কেন ডাকে?
কেন ডাকে ফুলের বাগান প্রজাপতি বিমুগ্ধ পতঙ্গরে!
তোমার শপথ বলে দিতে পারি
অনাদিকাল থেকে ঘাই হরিণ ডেকেছে তার হরিণীরে
ফুল প্রজাপতিকে, বনের সবুজ তার নিবিড় ছায়াকে
আর ভিতরে যে ডাকে শুনে শুনে
প্রতিদিন আমি না ডেকে পারি না তোমাকে।
"