বগুড়া প্রতিনিধি
উন্নত জাতের মরিচ চাষে চরাঞ্চলের চাষিদের মুখে হাসি
উন্নত জাতের মরিচ চাষে চরাঞ্চলের চাষীদের মুখে হাসি ফুটেছে। ভালো ফলন আর ভালো দাম পেয়ে বগুড়ার সারিয়াকান্দির কৃষকরা হাইব্রীড মরিচ চাষে ঝুঁকে পড়েছে। চরাঞ্চলের জমিতে মরিচ চাষ করে মঙ্গাকবলিত এসব এলাকার অসংখ্য কৃষক পরিবার এরই মধ্যে আর্থিকভাবে সচ্ছল হয়ে উঠতে শুরু করেছে। যমুনা নদী বেষ্টিত অর্ধশতাধিক চরসহ উপজেলায় পাঁচ হাজার হেক্টর জমিতে মরিচ চাষ হয়েছে। এর মধ্যে এক হাজার ৩০০ হেক্টর জমিতে হাইব্রীড মরিচ চাষ করেছে চাষীরা।
উত্তরাঞ্চলের মধ্যে বগুড়ার সারিয়াকান্দির মরিচ গুণে এবং মানে ভাল। এ অঞ্চলের মরিচের খ্যাতি দেশজুড়ে। বাজারে পাওয়া নামিদামী কোম্পানীর গুড়া মরিচের যোগান দেয় বগুড়ার চাষী ও ব্যবসায়ীরা। বগুড়ার যমুনার চরাঞ্চলে এক সময়ের নিস্ফলা বালুময় বিস্তীর্ণ চরাঞ্চলে এখন মরিচ, শসা, পটল, বেগুন, ভূট্টা, কলাই ও মিষ্টি কুমড়াসহ নানা প্রকার সবজির চাষ হচ্ছে। বাম্পার ফলনও হচ্ছে।
প্রথমে বালুময় এসব ভূমিতে ভুট্টা চাষ করে কৃষকরা ব্যাপক সাফল্য লাভ করায় অন্যান্য ফসলের পাশাপাশি মরিচ চাষ শুরু করে। মৌসুমের শুরুতে হাইব্রীড কাঁচামরিচ বিক্রি করে তারা প্রচুর লাভবান হয়। কারণ মৌসুমের শুরুতে কাঁচা মরিচের দাম ভাল পাওয়া যায়। বালুকাময় পলিমাটিতে মরিচ উৎপাদন করে চরাঞ্চলের মঙ্গাকবলিত মানুষ তাদের সেই দিন পাল্টে ফেলার সুযোগ পেয়েছে। ক্রমান্বয়ে স্বচ্ছল হয়ে উঠছে। আর মরিচ বেচাকেনাকে কেন্দ্র করে সারিয়াকান্দি সবচেয়ে বড় মরিচের হাট নামে খ্যাতি অর্জন করেছে।
কাজলা ইউনিয়নের বেড়াপাঁচবাড়িয়া চরের মরিচ চাষি ইফাজ শেখ জানান, হাইব্রীড মরিচের চারা বগুড়া হতে প্রতিটি এক টাকা দরে কিনে আনতে হয়। এক বিঘা জমিতে হাইব্রীড মরিচ চাষে খরচ হয় ২০ হাজার টাকা। মৌসুমের শুরুতে কাঁচা মরিচ বাজারজাত করতে পারলে দাম ভাল পাওয়া যায়। গেল বছর প্রতি বিঘায় ৮০-৯০ হাজার টাকার মরিচ বিক্রি হয়েছে।
মরিচ চাষি রবিউল ইসলাম, দুদু শেখ, খোকা ফকির, তুহিন আলমসহ অনেকেই জানান, হাইব্রীড মরিচের ফলন বেশী। এছাড়া হাইব্রীড মরিচ কাঁচা অবস্থায় বিক্রি করে নগদ অর্থ আয় করা যায়। এ মরিচ উঠানোর পর অন্যান্য ফসলের পাশাপাশি বোরো ধানও চাষ করা যায়।
উপজেলা কৃষি অফিসার শাহাদুজ্জামান বলেন, চরাঞ্চলের মাটি মরিচ চাষের জন্য উপযোগি। এখানে হাইব্রীড মরিচের ফলন বেশি হয়। সেজন্য মরিচ চাষীরা দিনদিন হাইব্রীড মরিচ চাষে ঝুঁকে পড়ছে। কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে চাষীদের প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। কৃষকরাও আর্থিকভাবে সচ্ছল হচ্ছে।
"