মাহাবুব চান্দু, মেহেরপুর

  ২০ অক্টোবর, ২০১৭

ভৈরব নদ খননের মাটিতে দেড় হাজার বিঘা জমি অনাবাদি

মেহেরপুরে ভৈরবনদ পুনঃখননকাজের মাটি ফসলি জমিতে ফেলে এক হাজার ৬৬০ বিঘা ধানি জমি অনাবাদি হয়ে পড়েছে। নদপাড়ের ভূমিক মালিকরা এখন ভূমি থেকেও তারা ভূমিহীন। নদপাড়ের ব্যক্তিমালিকানার এই জমি থেকে প্রতিবছর ২৩ হাজার ২৪৮ মণ ধান উৎপাদন হতো। যা জেলার খাদ্য চাহিদা মেটতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে আসছিল।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সদর উপজেলার গোভিপুর, রাজাপুর, আমদহ, কালাচাঁদপুর, ফতেপুর, দারিয়াপুরসহ বিভিন্ন গ্রামের নদপাড়ের আবাদী ধানি জমিতে এলোমেলো করে ভৈরব খননের মাটি ফেলে রাখা হয়েছে। এসব মাটি ভৈরব খনন পরবর্তী সমান করে দেওয়ার কথা থাকলেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মাটি সমান না করেই চলে গেছে। ফলে ২৯ কিলোমিটারের ভৈরব নদপাড়ের দেড় হাজার বিঘার বেশি জমি অনাবাদি হয়ে পড়েছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মেহেরপুর জেলা ভূমি অফিসের এক কর্মকর্তা জানান, তাদের হিসেবে দৈর্ঘ্যে ১৫০ মিটার নদের জমি। এই ১৫০ মিটারের মধ্যেই পানিপ্রবাহ ঠিক রেখে খননের মাটি ফেলার নিয়ম। কিন্তু ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান নদপাড়ের ব্যক্তিমালিকানা জমিতে মাটির পাহাড় করে জমি অনাবাদি করে দিয়েছে। মেহেরপুরের মুজিবনগর উপজেলা অংশে রসিকপুর থেকে ভারত থেকে বেরিয়ে আসা সদর উপজেলার ভৈরব নদের প্রবেশমুখ কাথুলী পর্যন্ত ২৯ কিলোমিটার। ভৈরব নদ খননে বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের তত্ত্বাবধানে নৌবাহিনীর ডকইয়ার্ড ইঞ্জিনিয়ার ওয়ার্কার্স লিমিটেড খনন কাজ করছে। গত জুলাই মাসে আনুষ্ঠানিভাবে খননকাজ শেষ করে চলে গেছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। ৭০ কোটি ৬৫ লাখ ৫১ হাজার ২১৬ টাকা ব্যয়ে হয়েছে।

কালাচাঁদপুর অংশে নদপাড়ের আরজান আলী জানান, তার নদপাড়ের জমি অনাবাদি হয়ে গেছে। তার মতো অনেকেই জমি থেকেও এখন তারা ভূমিহীন। রাজাপুর গ্রামের আবুল কাশেম অভিযোগ করলেন তার দুই বিঘা জমিতে ফেলা মাটি সমান করতে অন্তত এখন ২০ হাজার টাকা খরচ হবে। তাছাড়া গত দুই বছর তিনি জমিতে কোনো আবাদ করতে পারেননি।

বিশেষজ্ঞদের মতে, খননের ফলে ভরাট হয়ে যাওয়া নদী পুনরুদ্ধার ও নদীর পানিপ্রবাহ ফিরে আসবে। নদপাড়ের দুই হাজার হেক্টর জমিতে নদের পানি ব্যবহার করে অন্তত ১০ হাজার টন অতিরিক্ত খাদ্যশস্য উৎপাদন সম্ভব হবে। কিন্তু বিপরীত চিত্র দেখতে হচ্ছে।

ভৈরব নদ খনন প্রকল্পের তত্ত্বাবধায়ক লে. আবদুর রাজ্জাক বলেন, আমাদের দায়িত্ব ছিল ভৈরব নদ খননের। মাটি ফেলার সময় কেউ আপত্তি করেননি বলে দাবি করে জানান, এখন নদপাড় মাটি দিয়ে বেঁধে দিলে এবং নদপাড়ে গাছ লাগালে তবেই নদ রক্ষা হবে এবং মানুষ প্রকৃত সুবিধা পাবে। তিনি স্বীকার করেন নাহলে কয়েক বছরের মধ্যেই ফের ভরাট হয়ে যাবে নদ। এ প্রসঙ্গে মেহেরপুরের সহকারী কমিশনার (ভূমি) সামিউল হকের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ভৈরব খননের মাটি নদপাড়ের ব্যক্তিমালিকানার জমিতে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ফেলেছে ঠিকই। কিন্তু কেউ অভিযোগ করেননি।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist