সুকুমল কুমার প্রামাণিক, রাণীনগর (নওগাঁ)
জীবন জীবিকা
রাণীনগরে প্লাস্টিকের ফুলেই জীবিকা
ফুলকে কে না ভালোবাসে? ফুলের সৌন্দর্যে মানুষ বাড়ির আঙিনায় ও বাড়ির আশপাশের বিভিন্ন জায়গায় ফুল চাষ করেন। কেউবা মৌসুমি ফুলের টব রাখেন বাড়ির ছাদ বা বারান্দায়। আর শিশুদের খেলনা কিংবা সৌন্দর্য বৃদ্ধির জন্য ঘরে রাখেন কৃত্রিম ফুল। তাছাড়া বিয়ে, জন্মদিনসহ বিভিন্ন অনুষ্ঠানে কাগজের ফুল থাকেই।
নওগাঁ থানার সামনে দেখা গেলো আব্দুল মান্নান নামের এক কাগজের ও প্লাস্টিকের ফুল বিক্রেতাকে। ফুল বিক্রেতা আব্দুল মান্নান রাণীনগর উপজেলার গোনা ইউনিয়নের বড়বড়িয়া পূর্বপাড়া গ্রামের আব্দুস সামাদের ছেলে।
জানা গেছে, আব্দুল মান্নানের পরিবারে দুই ছেলে, দুই মেয়ে ও তার স্ত্রী। আব্দুল মান্নানসহ তিন ছেলেমেয়ে ও তার স্ত্রীরা নিজ বাড়িতে কাগজ ও প্লাস্টিক দিয়ে রাতদিন ফুল তৈরি করেন। আর সেই ফুলগুলো নিয়ে আব্দুল মান্নান সারাদিন কাঠফাটা রোদ-বৃষ্টির মধ্যে ফুল নেবে ফুল, লাল-নীল রঙিন কাগজের ও প্লাস্টিকের ফুল। এমন করে গ্রামেগঞ্জে পথে পথে মেঠোপথে হাঁক দিয়ে নিজ রাণীনগর উপজেলাসহ নওগাঁ জেলার মহাদেবপুর, পোরশা, নজিপুর, সাপাহার, আত্রাই, জয়পুরহাট জেলার হিলি, বিরামপুর, ফুলবাড়ীসহ আরো বিভিন্ন জেলা উপজেলার গ্রামেগঞ্জে হাটে-বাজারে পাড়া-মহল্লার পথে পথে ঘুরে ঘুরে রঙিন কাগজের ফুল ও প্লাস্টিকের ফুল বিক্রি করেন। তিনি যখন রাণীনগর উপজেলায় ফুল বিক্রি করেন তখন তিনি নিজের বাড়িতে থাকেন। আর যখন বাইরের জেলা ও উপজেলায় যাই তখন এক সপ্তাহ পর পর নিজ বাড়িতে ফিরি। প্রায় আট বছর ধরে কাগজের ফুল বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করছেন তিনি। এ ব্যবসা দিয়ে এক মেয়েকে বিয়ে দিয়েছেন। আরো তিন ছেলে মেয়েকে লেখাপড়াসহ নিজের সংসার চালান আব্দুল মান্নান। নিজ হাতে তৈরি কাগজের ও প্লাস্টিকের ফুলই তার অন্ন জোগাতে সিংগভাগ ভূমিকা রাখছে। ফুল নেবে ফুল; লাল-নীল রঙিন কাগজের ও প্লাস্টিকের ফুল। এমন গ্রামেগঞ্জের পথে ফুল বিক্রেতার হাঁক শুনলেই ছোট-বড় সবাই ছুটে আসেন ফুল নিতে।
রাণীনগর থানার সামনে ফুল বিক্রির সময় তার সঙ্গে কথা বললে তিনি বলেন, ‘আমি ও আমার পবিবারের সবাই মিলে কাগজের ও প্লাস্টিকের ফুল তৈরি করি। ফুলগুলো নিয়ে আমি নিজ রাণীনগর উপজেলাসহ বিভিন্ন জেলা ও উপজেলার গ্রামেগঞ্জের মেঠোপথে ফুল বিক্রি করি। নিজ উপজেলায় যখন ফুল বিক্রি করি তখন আমি বাড়িতে থাকি।
আর যখন বাইরের জেলা ও উপজেলায় ফুল বিক্রি করতে যাই, তখন এক সপ্তাহ পর পর নিজ বাড়িতে ফিরি। আমি প্রতিদিন ৫০০ থেকে ৭০০ টাকা টাকা পর্যন্ত আয় করে থাকি। এই ফুল বিক্রির আয় দিয়েই আমার সংসার চলে। আমি যখন বাহিরে ফুল বিক্রি করি, তখন আমার স্ত্রী ও ছেলেমেয়েরা বাড়িতে রাতদিন ফুল তৈরি করেন। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে আমার এ ব্যবসায় করতে হয়। আমি জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বাস ও ট্রেনের ছাদে যাই।
"