হালুয়াঘাট (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি

  ১৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৭

মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রী না হয়েও পাচ্ছেন মুক্তিযোদ্ধা ভাতা

হালুয়াঘাটের ২নং জুগলী ইউনিয়নের ঘিলাভূই গ্রামের মৃত উসমান আলীর ছেলে মুক্তিযোদ্ধা আলীর স্ত্রী না হয়েও স্ত্রীর নামে পাচ্ছেন মুক্তিযোদ্ধা ভাতা।

মুক্তিযোদ্ধা আলীর ছোট ভাই রিকশাচালক রজব আলী অভিযোগ করে বলেন, মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ শেষে আমার বড় ভাই মৃত আলী একই গ্রামের রেজাক সরকারের মেয়ে মাজেদা খাতুনকে বিয়ে করেন। বিয়ের কিছুদিন পর আমার ভাই সেনাবাহিনীতে যোগ দেন। চাকরিতে থাকা অবস্থায় আমার ভাইয়ের স্ত্রী মাজেদা খাতুন একই গ্রামের লালু ওরফে আ. কুদ্দুসের সঙ্গে পালিয়ে গিয়ে তাকে বিয়ে করেন। চাকরির ছুটিতে ভাই বাড়িতে এসে তার স্ত্রীর এমন সংবাদ শুনে মনের দুঃখে আবার চাকরিতে ফিরে যান। সেনাবাহিনীতে কর্মরত অবস্থায় তার আকস্মিক মৃত্যু হয়। ভাইয়ের মৃত্যুর পর আমার মা জইগন বেওয়া মৃত্যুর আগ পর্যন্ত মুক্তিযোদ্ধা ভাতা পেতেন। এই মাজেদা খাতুন লালুর সঙ্গে কিছুদিন সংসার করার পর ছাড়াছাড়ি হয়ে যায়। পরে গ্রামের হালিম উদ্দিন নামে একজনকে বিয়ে করেন এবং সেই ঘরে তার এক ছেলে ও এক মেয়ে সন্তান রয়েছে। হালিম উদ্দিনের মৃত্যুর পর মাজেদা খাতুনকে স্থানীয় কিছু মুক্তিযোদ্ধার যোগসাজশে মুক্তিযোদ্ধা আলীর স্ত্রী সাজিয়ে এবং নিঃসন্তান পরিচয় দিয়ে তাকে মুক্তিযোদ্ধা ভাতা পাওয়ার ব্যবস্থা করে দেন এবং এখান থেকে তারাও মোটা অংকের ভাগ নেন। শুধু তাই নয় সেনালী ব্যাংক হালুয়াঘাট শাখা থেকে দুই লাখ টাকা ঋণের জন্য আবেদনও করেছেন এই নারী।

বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ আ. মান্নান বলেন, এই নারী তার স্বামী মুক্তিযোদ্ধা আলীকে ছেড়ে আরো দুই জায়গায় বিয়ে বসেন এবং তার দুই সন্তান রয়েছে। এটা শুধু আমি নই, এই এলাকার সকল মুক্তিযোদ্ধা ও সাধারণ মানুষ সবাই জানেন। কীভাবে তিনি মুক্তিযোদ্ধা আলীর স্ত্রী হিসেবে ভাতা পান আমি বলতে পারবো না।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত মাজেদা খাতুন বলেন, আমাকে স্থানীয় কিছু মুক্তিযোদ্ধা নিঃসন্তান পরিচয় দিয়ে ভাতার ব্যবস্থা করে দিয়েছেন এবং আমার কাছ থেকে টাকাও নিয়েছেন। আমার হালিম উদ্দিনের সঙ্গে বিয়ে হয় এবং সেই ঘরে রইছ উদ্দিন ও হালিমা খাতুন নামে দু’ই সন্তান রয়েছে। এই বিষয়ে উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার কবিরুল ইসলাম বেগ বলেন, যেহেতু এই নারীর অন্য দুই জায়গায় বিয়ে হয়েছে এবং সন্তান রয়েছে সেহেতু তিনি কোনো অবস্থাতেই মুক্তিযোদ্ধা আলীর স্ত্রী হিসেবে ভাতা পাবেন না। বিষয়টি আমার সময়ে হয়নি বিধায় আমি জানতাম না। আমি বিষয়টি নিয়ে ভাতা কমিটির সঙ্গে কথা বলবো, যাতে এই নারীর ভাতা বন্ধ হয়।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জাকির হোসেন বলেন, বিষয়টি আমার জানা ছিল না। আমি দ্রত এই নারীর বিষয়ে তদন্তের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist