রবিউল আলম ইভান, কুষ্টিয়া প্রতিনিধি

  ২১ আগস্ট, ২০১৭

২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা

খুনিদের বিচার দেখে মরতে চান নিহত মাহাবুবের বাবা-মা

২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলায় নিহত তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেতা বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ব্যক্তিগত দেহরক্ষী খোকসার মাহাবুবের বৃদ্ধ পিতা-মাতা মৃত্যুর একদিন আগে হলেও খুনিদের বিচার দেখে যেতে চান। জীবনের এই পড়ন্ত বেলায় এসে এটিই এখন তাদের একমাত্র চাওয়া। মাহাবুবের বাবা হারুন অর রশিদের দিন শুরু হয় ফজরের নামাজের পর মোনাজাতের সময় ছেলের খুনীদের বিচার চেয়ে এবং দুই নাতীর মঙ্গল কামনা করে।

ঘাতকদের ছোঁড়া গ্রেনেড আর বুলেটে মাহাবুবের মৃত্যুতে বৃদ্ধ বাবা হারুন অর রশিদের সব স্বপ্ন লন্ডভন্ড হয়ে গেছে। জীবন সায়াহ্নে দাঁড়িয়ে ছেলের রেখে যাওয়া বিবর্ণ সব স্মৃতি, স্বপ্ন আর হতাশার মধ্যেও কিছু প্রাপ্তি তার মনকে কিছুটা হলেও পুলকিত করে। গত শনিবার সকালে কুষ্টিয়ার খোকসার জয়ন্তিহাজরা ইউনিয়নের ফুলবাড়ি গ্রামে নিজ বাড়িতে কথা হয় কর্মব্যস্ত বৃদ্ধ হারুন অর রশিদের সঙ্গে। ছেলের স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে হারুন অর রশিদের মুখ দিয়ে আক্ষেপের কথাগুলো বেরিয়ে আসে। ছোটো মেয়ে আবিদার একটি সরকারী চাকুরি হওয়ার খবর দিয়ে প্রাপ্তির কথা শুরু করলেন। তিনি দাবি করেন, স্ত্রী শামীমা আক্তার আসমা ও দুই পুত্র আশিক ও রবিনকে নিয়ে জীবনযুদ্ধে সফল সৈনিক ছিলেন নিহত মাহাবুব। সম্প্রতি জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে নিহত সৈনিকের শৈশব স্মৃতিবিজড়িত ফুলবাড়ি স্কুলের পাশের কবর স্থানের সমাধি স্থলটি পাকা করে দেওয়ার পর থেকে তিনি সেখানেই অবসর সময় কাটান। কিন্তু রাস্তা না থাকায় বৃষ্টির পানিতে সেখানে নিয়মিত যেতে পারছেন না।

কথা হয় গ্রেনেড হামলার বিচার নিয়ে। তিনি বলেন, বিচার বিলম্বিত হওয়া বড় হতাশার। মামলাটির দ্রুত বিচার ও দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি বাস্তবায়ন দেখে মরতে চান তিনি। স্থানীয় রাজনৈতিক নেতাদের কাছ থেকে তেমন কোন সহায়তা পাননি বলেও তিনি জানান। শত কষ্ট ও হতাশার মধ্যেও নিহত ছেলে মাহাবুবকে নিয়ে গর্বিত এই বাবা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ঘাতকদের বুলেট থেকে রক্ষায় তার ছেলের জীবন উৎসর্গ করার ঘটনাটি এখনো গর্বের সঙ্গে উচ্চারণ করেন হারুন অর রশিদ। কুষ্টিয়া ৪ (খোকসা-কুমারখালী) আসনের সংসদ সদস্য আব্দুর রউফ জানান, নিহত দেহরক্ষী মাহাবুবের লাশ গ্রহণ থেকে শুরু করে সমাধি পর্যন্ত তার টাকায় নির্মিত হয়েছে। অবশ্য সমাধির গায়ে লাগানো ফলকে বাস্তবায়নে জেলা প্রশাসনের নাম লেখা রয়েছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সেলিনা বানু জানান, নিহত দেহরক্ষী মাহাবুবের সমাধি স্থল ও কবর স্থানের উন্নয়নের জন্য জেলা পরিষদের মাধ্যমে স্থানীয় সরকার মন্ত্রনালয়ে বরাদ্দ চেয়ে পাঠানো হয়েছে। নিহতের ভাই বোনদের চাকুরি, বৃদ্ধ বাবার নামে আজীবন ভিজিডি ও বয়স্ক ভাতাসহ অন্যান্য সুবিধা দেওয়া হয়েছে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist