মঠবাড়িয়া (পিরোজপুর) প্রতিনিধি
ভাঙনে বিলীনের পথে স্টিমার ঘাট, দুর্ভোগে মানুষ
বলেশ্বর নদীর ভাঙনে মঠবাড়িয়ার বড়মাছুয়ার স্টিমার ঘাটটি নদীগর্ভে বিলীনে হতে চলছে। ভাঙনের মুখে পড়ায় উপকূলীয় মঠবাড়িয়া, শরণখোলা, পাথরঘাটা ও বামনাসহ সমগ্র দক্ষিণাঞ্চলের মানুষ সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাচ্ছে। এছাড়াও স্টীমার ঘাটের অপেক্ষামান যাত্রীদের বিশ্রামাগারটির ছাউনি ঘূর্ণিঝড় সিডরে পড়ে ধুমড়ে-মুচড়ে যাওয়ার পর একবার সংস্কার করা হলেও এখন ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। সেই থেকে গত ৭/৮ বছর বিশ্রামাগারটি যাত্রীদের কোন কাজে আসছে না। বর্তমানে ঘাট এলাকায় বলেশ্বরের নতুন করে ভাঙন দেখা দেওয়ায় চলাচলে যাত্রীরা আতঙ্কিত হয়ে পড়ছে। অথচ রাজধানী ঢাকা, খুলনা, বরিশাল ও চাঁদপুরসহ বিভিন্ন স্থানে যাতায়াতের একমাত্র মাধ্যম বড়মাছুয়া স্টিমার ঘাট। এ ব্যাপারে ঘাট কর্তৃপক্ষ স্থানীয় সংসদ সদস্যসহ ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে বার বার লিখিতভাবে জানালেও ঘাট সংস্কারে কোন ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না।
জানা গেছে, এ অঞ্চলের মানুষের নৌপথে যাতায়তের সুবিধা দেওয়ার লক্ষে ১৯৮৮ সালে বিআইডব্লিউটিসি’র তৎকালীন চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম (বীর উত্তম) বড়মাছুয়া স্টীমার ঘাটটি উদ্বোধন করেন। সেই থেকে মঠবাড়িয়ার একমাত্র স্টীমার ঘাটটি থেকে উপকূলীয় এলাকার অসংখ্য মানুষ ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে যাতায়াত করে আসছে। দীর্ঘদিন ধরে অব্যাহত নদী ভাঙনে ঘাটটি ভেঙে এখন প্রায় বিলীনের পথে। প্রতিদিন শতশত যাত্রী জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে। স্টিমার ঘাট সংলগ্ন খেজুরবাড়িয়ার বাসিন্দা ডালিম হাওলাদার জানান, বসত বাড়ির পাশাপাশি দীর্ঘদিন ধরে অব্যাহত ভাঙনে স্টীমার ঘাটটি এখন বিলুপ্তির পথে। ঘাটটি রক্ষায় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে দ্রুত পদক্ষেপ নেয়া প্রয়োজন। স্থানীয় হেমায়েত উদ্দিন জানান, প্রায় ২০ বছর ধরে আমি যাত্রী বিশ্রামগারটি রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে ছিলাম। কিন্তু গত ৭/৮ বছর ধরে বিশ্রামাগারটির টিনের চালা ভেঙে পড়ায় বর্তমান বর্ষা মৌসুমে যাত্রীদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। বাধ্য হয়ে স্টীমার যাত্রীরা স্থানীয় দোকানে কিংবা পল্টনে বিশ্রাম নেন। তিনি দ্রুত যাত্রী ছাউনি সংস্কার করার দাবি জানান। বড়মাছুয়া স্টিমার ঘাট বিআইডব্লিউটিসি সিনিয়র টার্মিনাল সুপারিনডেন্ট জাকির হোসেন জানান, ঘাটে জেটি নির্মাণের জন্য গত এক মাস আগে বিআইডব্লিউটিসির এজিএম (মেরিন) মো. মহিউদ্দিন আহম্মেদ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে এবং যাত্রী বিশ্রামাগার ও সাইক্লোন সেল্টার থেকে রকেট ঘাট পর্যন্ত রাস্তাটি নির্মাণের জন্য একাধিকবার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে লিখিতভাবে অবহিত করলেও কোন সুরাহা হয়নি।
মঠবাড়িয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এসএম ফরিদ উদ্দিন জানান, বড়মাছুয়া স্টিমার ঘাটটি একটি জনগুরুত্বপূর্ণ স্থান। এখানের নদী ভাঙন রোধ করা না গেলে ঘাটটি একদিন বিলীন হয়ে যাবে। এটি জেলা পরিষদের আওতায়। তাই বিষয়টি নিয়ে আমি জেলা পরিষদ চেয়ারম্যানের সাথে আলোচনা করে ভাঙন রোধসহ সমস্যা সমাধানের উদ্যোগ নেওয়া হবে।
"