রবিউল আলম ইভান, কুষ্টিয়া

  ১০ আগস্ট, ২০১৭

ঈদে লাভের আশা খামারিদের

বিক্রির জন্য প্রস্তুত কুষ্টিয়ার দেড় লক্ষাধিক পশু

কোরবানির ঈদ সামনে রেখে কুষ্টিয়ায় পশু ব্যবসায়ীদের আনাগোনা বেড়েছে। জেলার বিভিন্ন এলাকার হাটে এমনকি বাড়িতে ঘুরে ঘুরে ব্যবসায়ীরা গরু ও ছাগল কিনে ইতিমধ্যে দেশের বিভিন্ন স্থানে যাওয়া শুরু করেছে। দেশের বাজারে প্রায় ১ লাখ ৫৮ হাজার পশু সরবরাহে প্রস্তুত কুষ্টিয়া জেলা। এদিকে বর্তমান পরিস্থিতিতে কুষ্টিয়ার গো-খামারি এবং কৃষকেরা ভালো দামে গরু বিক্রি করতে পারায় বেজায় খুশি। তবে এলাকার গো-খামারি ও কৃষকদের এই হাসি শেষ পর্যন্ত থাকবে কি না এ নিয়ে নানা সংশয় দেখা দিয়েছে। ভারত থেকে বাংলাদেশের বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে গরু আসবে বিজিবি মহাপরিচালকের এমন ঘোষণায় খামারিদের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে।

দেশের বাজারে কুষ্টিয়া অঞ্চলের গরু ও ছাগলের আলাদা কদর রয়েছে। জেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, এবার এলাকায় প্রায় ২ লাখ কোরবানির পশু রয়েছে যা স্থানীয় মানুষের প্রয়োজন মেটানোর পাশাপাশি দেশের বিভিন্ন এলাকায় পাঠানো হবে। গত বছর কুষ্টিয়ার গো-খামারি ও কৃষকেরা গরুর ভালো মূল্য পাওয়ায় এবারও জোরেশোরে পশুর যতœ নিতে শুরু করেছে। এলাকার গ্রামগঞ্জে এমন কোনো বাড়ি নেই যেখানে ২-৪টি কোরবানির গরু পাওয়া যাবে না। ঈদ কেন্দ্র করেই জেলার বিভিন্ন এলাকায় হাজার হাজার গো-খামার গড়ে উঠেছে। বিগত এক যুগেরও বেশি সময় ধরে এই কোরবানির গরু-ছাগল লালন-পালন এবং কেনা বিক্রির কারণে এখানকার অর্থনৈতিক পরিস্থিতির আমূল পরিবর্তন এসেছে। কুষ্টিয়া জেলা পশুসম্পদ অফিস সূত্রে জানা গেছে, এবার জেলার ৬টি উপজেলায় ২০ হাজার ৫৮৬ খামার রয়েছে। এর মধ্যে গরু প্রায় ৯৩ হাজার, ছাগল ৬৬ হাজার এবং ভেড়া ৩ হাজারের মতো। সবেচেয়ে বেশি খামার এবং পশু বেশি কুষ্টিয়া সদর উপজেলায়। সদর উপজেলায় সরকারি তথ্যমতে ৪৪২১টি খামার, গরুর সংখ্যা ১৬ হাজার ৪৬টি, দৌলতপুর উপজেলায় ৪৩৫৪টি খামার, গরু রয়েছে ১৪ হাজার ১৭৮, কুমারখালী উপজেলায় ৪১৯৮টি খামার, গরুর সংখ্যা ১৩ হাজার ২৫০টি, খোকসা উপজেলায় ৩১০৬টি খামার, গরু রয়েছে ৮ হাজার ১৬টি, মিরপুর উপজেলায় ২৭৩৯টি খামার, গরু রয়েছে ১৩ হাজার ৭৩৯টি এবং ভেড়ামারা উপজেলায় ১৭৬৮টি খামার, যার গরুর সংখ্যা ৮ হাজার ৮৭৯টি। তবে সরেজমিন জেলার খামারি এবং কোরবানির পশুর সংখ্যা অনেক বেশি। জেলার বিভিন্ন এলাকায় বিশালাকার গরু পালনের খবরটি সবার জানা। এলাকায় ঘুরে দেখা গেল ভিন্ন চিত্র। সবার মাঝেই বিক্রির প্রস্তুতি চলছে। এলাকার গরুর হাটগুলোতে প্রতিদিনই ভিড় বাড়ছে ক্রেতা ও বিক্রেতাদের। রোজার পর থেকেই দেশের বড় বড় ব্যাপারীর আনাগোনা শুরু হয়েছে কুষ্টিয়ায়। সদর উপজেলার পাটিকা বাড়ির হারুরিয়া গ্রামের গ্রামীণ গো-খামারের স্বত্বাধিকারী ইলিয়াস হোসেন জানান, আমার খামারে ১৫৪টি মতো গরু ইতিমধ্যে ঢাকার এক ব্যবসায়ীর কাছে আশানুরূপ দামে বিক্রি করেছি। খোদ্দ আইলচারার ‘মন্ডল’ খামারের স্বত্বাধিকারী ছলিম মন্ডল জানান, তার খামারে ৯৮টি গরু রয়েছে। এর মধ্যে চট্টগ্রামের এক ব্যবসায়ীর কাছে ২০টি গরু ভালো দামে বিক্রি করেছি।

কুষ্টিয়া জেলা পশু সম্পদ কর্মকর্তা ডা. আশাদুল হক জানান, এবারও জেলায় প্রচুর কোরবানির পশু রয়েছে। কৃষক এবং খামারিরা যতœ নিয়ে পশু তৈরি পালন করছে বিক্রির জন্য। প্রতি উপজেলায় কোরবানির পশুর জন্য আমাদের কর্মীরা কাজ করে যাচ্ছে। পশুর রোগ প্রতিশোধক ভ্যাকসিন পর্যাপ্ত রয়েছে। খামারি এবং কৃষকদের মধ্যে চাহিদামতো তা ব্যবহার করা হচ্ছে। ইতিমধ্যে চাষিদের উদ্বুদ্ধকরনে প্রশিক্ষন দেয়া হয়েছে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist