রানীশংকৈল (ঠাকুগাঁও) প্রতিনিধি
গুচ্ছগ্রামে ঘর পেয়ে খুশি ৩০ পরিবার
‘দুই পা মাটিতে ফেলে হাঁটতে পারি না, মাথা গোজার ঠাঁই ছিলো না, মানুষের জমিতে থাকতাম। যখন-তখন বাড়ি ঘর নিয়ে উঠে যেতে বলতো, তখন বাবা-মা আমাদের প্রতিবন্দী তিন ভাই বোনকে নিয়ে চিন্তায় পড়ে যেতেন কোথায় যাবেন আমাদের নিয়ে। এমনিতেই কষ্টের পরিবার আমাদের পিতার রোজগার দিয়ে কোন-রকম পরিবারের খাওয়া খরচ জুটে জমি কিনা তো দুরের কথা। এখন আর চিন্তা নেই ইউএনও সাহেব আমার নামে গুচ্ছ গ্রামে একটি ঘর বরাদ্দ (ঘর নং ১২) দিয়েছেন। মাথাগুজার ঠাই হয়েছে। আমি খুব খুশি’-কথা বলছিলেন ঠাকুরগায়ের রানীশংকৈল উপজেলার রাউতনগর ভবানীডাঙ্গীতে সদ্যনির্মিত গুচ্ছগ্রামে ঘর বরাদ্দ পাওয়া দুই পা প্রতিবন্দী জসিম (১৮)। উপজেলার রাউতনগর এলাকার দিনমুজুর আব্দুল বাসেদের তিনি সন্তানই প্রতিবন্দি। শারীরিক প্রতিবন্দি জসিমের বড় বোন পারভীন দৃষ্টি ও শারীরিক প্রতিবন্দী আর ভাই হালিম শারীরিক প্রতিবন্দী।
ইউএনও অফিস কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, ভুমি মন্ত্রণালয়ের আওতায় সিভিআরপি প্রকল্পের মাধ্যমে ১ম ধাপে ৪৫ লাখ ৪৯ হাজার ২০০ টাকা ব্যয়ে উপজেলার রাউতনগর ভবানীডাঙ্গী গ্রামে মোট তিন একর জমির উপর নির্মাণ করা হয়েছে গুচ্ছগ্রাম। আর প্রতি ঘরসহ চার-শতক জমি বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ৩০টি ভূমিহীন পরিবারকে। এছাড়াও ছয়টি টিউবওয়েল স্থাপিত করা হয়েছে। আরো জানা যায়, পর্যায়ক্রমে ত্রিশটি পরিবারকে একটি করে বন্ধু চুলা, বিভিন্ন প্রজাতির একটি করে গাছ প্রদান করা হবে।
এছাড়াও ঘর বরাদ্দ পেয়ে অনুভতি প্রকাশ করে বিধবা নারী রেহেনা বেগম বলেন, স্বামী মারা গেছে এক ছেলে নিয়ে অন্যর জমিতে থাকতাম খুব চিন্তা হতো কখন যেনো বাড়ী ঘর নিয়ে চলে যেতে বলে আশ্রয় দেওয়া জমির মালিক। এখন আর চিন্তা নেই গুচ্ছ গ্রামে ঘর পেয়েছি(ঘর নং-১) নিরাপদ এবং চিন্তামুক্ত আশ্রয়ের স্থান হয়েছে। এখন মানুষের কাজকর্ম করে ছেলে নিয়ে সংসার চালাবো। একইভাবে উলেফা বেগম তিন ছেলে মেয়ের জননী, স্বামী আরেকটি বিয়ে করে সংসার করছেন উলেফার খোজ খবর নিতেন না। উলেফাও একটি ঘর পেয়ে (ঘর নং-১৪) অনেক খুশি।
এ বিষয়ে ইউএনও খন্দকার মোঃ নাহিদ হাসান বলেন, নিয়মনুযায়ী ভূমিহীনদের ঘর বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে, ঐ গুচ্ছগ্রামে আরো ষোলটি ঘর নির্মানের ব্যবস্থা চলছে। এই ঘরগুলোও প্রকৃত ভূমিহীনদের নির্ণয় করেই বরাদ্দ দেওয়া হবে এ জন্য তিনি সকলের সহযোহিতা কামনা করেছেন।
"