রাকিবুল ইসলাম রাকিব, গৌরীপুর (ময়মনসিংহ)
বাল্যবিবাহ বন্ধের প্রত্যয়ে ‘ওরা ১১ জন’
বাল্যবিবাহ প্রতিরোধে এবার মাঠে নামছে ময়মনসিংহের গৌরীপুর উপজেলার ১১ জন কিশোরী। এই ১১ জন কিশোরী প্রত্যেকেই নিজেরদের বাল্যবিবাহ ঠেকিয়ে দিয়েছে। এখন তারা এলাকায় বাল্যবিবাহ প্রতিরোধ ও নারী নির্যাতন বন্ধে কাজ করতে চায়।
কিশোরীদের প্রশংসনীয় এই উদ্যোগে স্বাগত জানিয়ে তাদের পাশে এসে দাঁড়ান উপজেলা নির্বাহী অফিসার মর্জিনা আক্তার। এরপর আনুষ্ঠানিক ভাবে যাত্রা শুরু হয় ১১ কিশোরীর স্বমন্বয়ে গড়ে উঠা সংগঠন ‘ওরা ১১ জন’। ১১ জনের দলে রয়েছেন-তাসমীম তাসফিয়া আরশি, নুসরাত জাহান লিটা, মারুফা আক্তার, সাবিকুন্নাহার, শান্তা আক্তার, তামান্না আক্তার তানিয়া, অনিকা, তানজিনা আক্তার, পিংকি আক্তার ও দিলরুবা খানম।
গতকাল সোমবার সংগঠনের উদ্যোগে উপজেলা পরিষদ চত্বর থেকে ‘বাল্য বিবাহ প্রতিরোধ করি’ এই শ্লোগানে দৃপ্তকণ্ঠে আওয়াজ উঠে। এরপর বাল্যবিবাহকে লালকার্ড দেখিয়ে শহরে শোভাযাত্রা বের করে। উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তা, সাংবাদিক, বেসরকারি এনজিও সংস্থার কর্মকর্তা সহ অনেকই শোভাযাত্রায় অংশগ্রহণ করে। এরপর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মর্জিনা আক্তার সংগঠনের প্রত্যেককে শিক্ষা সহায়ক খাতে ৩হাজার টাকা প্রদান করেন। এবং যুগান্তর স্বজন সমাবেশ শিক্ষা উপকরণ দিয়ে সংগঠনকে সহায়তা করে।
ওরা ১১ জন সংগঠনের স্বমন্বয়কারীদের একজন সাবিকুন্নাহর বলেন, পরিবারের সদসর্যা আমাকে বাল্যবিবাহ দিতে চেয়েছিলা। পরে আমি বাবার সহযোগিতায় ইউএনও মর্জিনা আক্তারের মাধ্যমে বিয়ে বন্ধ করি। আমি এখন পড়াশোনা করছি। ‘আমি চাই না, ১৮ বছরের কম বয়সী কোনো মেয়ের বিয়ে হোক। মেয়েরা প্রদিবাদ করতে শিখুক। সকল অভিভাবকের আছে আহ্বান জানাই, মেয়েদের পড়ালেখার সুযোগ করে দিন। কোনো মেয়ে যেন অসহায় না থাকে। দুই কোটি কিশোরী মিলে দেশকে জয় করব।’
গৌরীপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মর্জিনা আক্তার বলেন, বাল্যবিবাহ নারীদের কোনো সুফল দিচ্ছে না, এটি তাদের জীবনে অভিশাপ হয়ে আসছে। বর্তমান সরকার বাল্যবিবাহ বন্ধে গুরুত্ব সহকারে কাজ করে যাচ্ছে। ১৮ বছরের আগে মেয়েদের বিয়ের সুযোগ কোনোভাবেই রাখা যাবে না। আমার দৃঢ় বিশ্বাস ‘ওরা ১১জন’ গৌরীপুরে বাল্যবিবাহ প্রতিরোধ ও বাল্যবিবাহের বিরুদ্ধে জনসচেতনতা বাড়াতে অগ্রগামী ভূমিকা পালন করবে।
"