কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি
কিশোরগঞ্জে পাটের আবাদ বেড়েছে চার সহস্রাধিক হেক্টর
বাংলাদেশের এক সময়ের প্রধান অর্থকারি ফসল পাটের আবাদে সুদিন এনেছেন কিশোরগঞ্জের কৃষকরা। সরকারি নীতিমালার কারণে বাংলাদেশে এখন দিন দিন পাটের গুরুত্ব বাড়ছে। কৃষকরাও দামও মোটামুটি ভাল পাচ্ছেন। যে কারণে পাটের আবাদও বাড়ছে। গত বছরের চেয়ে এবার কেবল কিশোরগঞ্জে ৪ হাজার ৫০ হেক্টর বেশি জমিতে পাটের আবাদ হয়েছে বলে কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে। এ বছর কিশোরগঞ্জের সর্বত্রই পাটের বাম্পার ফলন পেয়ে কৃষরাও বেশ খুশি। কৃষি বিভাগও পাটের ভবিষ্যৎ নিয়ে বেশ আশাবাদী।
জানা যায়, কিশোরগঞ্জে গতবছর মোট ১৬ হাজার ৮শ’ হেক্টর জমিতে পাটের আবাদ হয়েছিল। আর উৎপাদন হয়েছিল এক লাখ ৫৩ হাজার ৩০৮ বেল পাট। এ বছর জেলায় মোট ২০ হাজার ৫৮০ হাজার হেক্টর জমিতে পাটের আবাদ হয়েছে।
পাটের গুরুত্ব বৃদ্ধির কথা চিন্তা করে সরকার আগে ৬টি পণ্যের ক্ষেত্রে পাটের মোড়ক বা বস্তা ব্যবহার বাধ্যতামূলক করেছিল। ফলে এখন মোট ১৭টি পণ্যের ক্ষেত্রে পাটের মোড়ক বা বস্তা ব্যবহার বাধ্যতামূলক। আর পাটের ব্যবহার নিশ্চিত করার জন্য ভ্রাম্যমাণ আদালতও কাজ করছে।
কটিয়াদী উপজেলার ধূলদিয়া-সহশ্রাম ইউনিয়নের নোয়াবাদ গ্রামে গিয়ে দেখা গেছে, বেশ কিছু পুরুষ ও নারী পারিশ্রমিকের বিনিময়ে পানি থেকে জাগের পঁচা পাটের আটি তুলে আঁশ ছাড়াচ্ছেন।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মোঃ শফিকুল ইসলাম জানিয়েছেন, এবার অনুকূল আবহাওয়ার কারণে জেলার সর্বত্রই পাটের বাম্পার ফলন হয়েছে। এখন পাটের মণ দেড় হাজার থেকে ১৬শ’ টাকা। তবে কিছুদিন পর দাম আরও বাড়বে বলে তিনি ধারণা দেন। পাশাপশি উচ্চমাত্রায় দাহ্য ক্ষমতাসম্পন্ন মূল্যবান জ্বালানী হিসেবে পাটশোলাও পাওয়া যাচ্ছে। এগুলির বাজারজাতমূল্যও বেশ ভাল। নীচু এলাকার পাট কাটা হয়ে গেলেও উঁচু এলাকার পাটগুলো এখনো কাটা হচ্ছে। কোন কোন এলাকার কৃষকেরা শুকনো পাট বিক্রির জন্য বাজারে তুলছেন। আবার কোন কোন এলাকায় এখনো কৃষক শ্রমিক লাগিয়ে পঁচা পাটের আঁশ ছাড়াচ্ছেন।
বকুলা বেগম, উমৃতা, রাবিয়া, সুনামউদ্দিন, বাছির মিয়া ও সুনামউদ্দিন জানান, তারা অন্যের জমির পাটের আঁশ ছাড়িয়ে দিচ্ছেন। ২০টি আটির আঁশ ছাড়িয়ে দিতে পারলে ৮০ টাকা পাওয়া যাবে। নিকলীতে গিয়ে দেখা গেছে, পুড্ডা বাজারের পাশে রুদার গাঙের দীর্গ সেতুর দুই পাশে রেলিংয়ে কৃষকেরা পাট ছাড়িয়ে ঝুলিয়ে রেখেছেন শুকানোর জন্য। আবার বিকালে ভ্যানে করে বাড়ি নিয়ে যাচ্ছেন নিকলীর বেরিবাঁধ এবং উপজেলার বিভিন সেতুর রেলিংয়ে এভাবেই সারিবদ্ধভাবে পাট শুকাতে দেয়া হচ্ছে । এক সময়ের পাটের জন্য বিখ্যাত কিশোরগঞ্জ জেলায় আবারো সোনালী দিন ফিরে আসবে বলে অনেকেই মন্তব্য করছেন।
"