ফুলবাড়ী (দিনাজপুর) প্রতিনিধি
বিরামপুরে বেহাল স্বাস্থ্যসেবা
ক্লিনিকে নেই ডাক্তার-ভিজিটর রাতে বসে মাদকের আসর
দিনাজপুরের বিরামপুর উপজেলায় হুমকির মুখে পড়েছে গ্রামীণ স্বাস্থ্যসেবা। ক্লিনিকে থাকে না কোনো ডাক্তার ও ভিজিটর; রাতে বসে মাদকের আসর। অভিযোগ রয়েছে, অফিসপ্রধানরা বিভিন্ন সময় বিভিন্ন ভুয়া বিল ভাউচারের মাধ্যমে অর্থ আত্মসাৎ করে থাকেন। টেন্ডার ছাড়াই কেনা হয়েছে নি¤œমানের আসবাবপত্র। উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা অফিসের অফিস সহকারী-কাম-কম্পিউটার অপারেটর আব্দুল মজিদ প্রায় ১৮ বছর বিরামপুরে অবস্থান করে এই কাজ চালিয়ে আসছেন।
উপজেলার ইউনিয়নের ক্লিনিকগুলোতে সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, প্রায় রোগীশূন্য অবস্থা। রোগীদের আস্থা অর্জন করতে পারেননি কেন্দ্রে দায়িত্বরত কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। খানপুর, জোতবাণী ও দিওড় ইউনিয়নে তিনটি ক্লিনিকে কোনো ভিজিটর নেই। চারটি ক্লিনিক কাটলা, পলিপ্রয়াগপুর, জোতবাণী ও বিনাইলে কোনো পিয়ন নেই। অধিকাংশ ক্লিনিকেই রয়েছে পানি ও বিদ্যুৎ সমস্যা। কোনো ক্লিনিকেই ডাক্তার ও ভিজিটর কোয়ার্টারে থাকেন না। তারা উপজেলা সদর থেকে এসে অফিস করেন। ফলে রাতেরবেলায় সেখানে নেশার আসর বসায় নেশাখোররা।
মেডিক্যাল অফিসার (মা ও শিশু স্বাস্থ্য প.প.) ডা. তাহেরা খাতুন লাভলী ৪টি উপজেলার দায়িত্বে আছেন। তাকে এসব উপজেলা পরিদর্শন করতে হয়। অভিযোগ উঠেছে, তিনি বিরামপুরসহ আশপাশের উপজেলায় বেসরকারি ক্লিনিকে সিজার নিয়ে ব্যস্ত থাকেন। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমার সরকারি হাসপাতালে সিজার করতে বাধা আছে, কিন্তু প্রাইভেট ক্লিনিকে কোনো বাধা নেই।’
তিনি আরো বলেন, ‘আমাকে ৪টি উপজেলা পরিদর্শন করতে হয়। তাই বিরামপুরের সব ইউনিয়ন পরিদর্শন করা সম্ভব হয় না। সুতরাং সব খবর রাখাও সম্ভব হয় না।’ বিরামপুরে ৬টি স্বাস্থ্য ক্লিনিকের অধিকাংশ কর্মকর্তার অভিযোগ, ‘সহকারী আব্দুল মজিদ আমাদের কাছ থেকে ভুয়া ভাউচার করে অল্প কিছু টাকা হাতে দিয়ে বলেন, বাকি টাকা দিতে হয় ট্রেজারি অফিসে।’
নাম না প্রকাশ করার শর্তে ক্লিনিকের একজন কর্মকর্তা জানান, অফিসপ্রধান আব্দুল মতিন ৭ বছর ধরে এখানে কর্মরত রয়েছেন। তিনি বাইরে কোনো কাজকর্ম করেন না। কখনো মাঠে যান না। অথচ মাঠে না গিয়ে মাঠকর্মী পরিদর্শন বিল করে খরচ দেখিয়ে থাকেন।
এ ব্যাপারে অফিস সহকারী-কাম-কম্পিউটার আব্দুল মজিদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি তার বিরুদ্ধে অভিযোগ অস্বীকার করেন।
এ ব্যাপারে দিনাজপুর পরিবার পরিকল্পনা উপ-পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) ডা. মো. আবু নছর নূরুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, ‘অভিযোগ পেলে আমি তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণ করব।’
"