মাসুদ রানা, বরিশাল
বরিশালের কীর্তনখোলা নদী
তেল ছড়িয়ে পড়া পানি এখন স্বাভাবিক, ঝুঁকি নেই জীববৈচিত্র্যের
বরিশালের কীর্তনখোলা নদীতে অর্ধলাখ লিটার ডিজেল নির্গত হলেও স্বাভাবিক আছে পানি। বিশেষ করে অক্সিজেন ও হাইড্রোজেনের মাত্রা পরীক্ষা করে তা সঠিক আছে বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে। কিন্তু নদীতীরবর্তী এলাকার ইলেক্ট্রোকন্ডাক্টিভিটির স্বাভাবিক মাত্রা ৩৫ থেকে বেড়ে ১০৫ হয়েছে। তাতে বিশেষ কোনো ক্ষতি হবে না বলে মনে করছেন পরিবেশবিদরা। তবে স্থানীয় সাধারণ মানুষেরা জীবিকার টানে নদীতে ছড়িয়ে পড়া তেল উঠিয়ে নেওয়ায় দূষণের হাত থেকে রক্ষা হয়েছে বলে মনে করছে সচেতন মহল।
গত ১৪ জুলাই শুক্রবার সকাল পৌনে ৮টার দিকে চট্টগ্রাম থেকে বরিশালগামী তেলবাহী ট্যাংকার এমটি ফজরের সঙ্গে কীর্তনখোলা নদীর চরকাউয়া পয়েন্টে ভারত থেকে মংলা হয়ে ঢাকাগামী ফ্লাইঅ্যাশবাহী কার্গো এমভি মা-বাবার দোয়া-২-এর সংঘর্ষ হয়। এ সময় তেলবাহী ট্যাংকারের তলদেশ ফেটে ২১ হাজার লিটার ডিজেল নদীতে নির্গত হলে পানি দূষিত হওয়ার আশংকা দেখা দেয়। পাশাপাশি জীববৈচিত্র্যের ওপর এর ব্যাপক প্রভাব পড়তে পারে বলে আশঙ্কার কথা জানিয়েছিলেন কয়েকজন পরিবেশবিদ। বরিশাল বিভাগীয় পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক আরেফিন বাদল গতকাল প্রতিদিনের সংবাদকে জানান, ঘটনাস্থল পরিদর্শন, নদীর পাড়ের এবং মধ্যের পানি পরীক্ষার পর অক্সিজেন ও হাইড্রোজেনের পরিমাণ স্বাভাবিক পাওয়া গেছে। তবে ইলেক্ট্রোকন্ডাক্টিভিটির মান স্বাভাবিকের সময় ৩৫ থেকে ৪০ থাকে। কিন্তু নদীর পাড়ে এর মান এখন ১০৫ এবং মধ্যে ১০২। সরকারি ব্রজমোহন কলেজের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের ভারপ্রাপ্ত বিভাগীয় প্রধান মতিয়ার রহমান জানান, তেল একটি অসমসত্ব মিশ্রণ। তেল পানির সাথে না মিশে পানির উপরিভাগে ভাসমান থাকে, ফলে সূর্যের আলো এবং পর্যাপ্ত বাতাস পানির তলদেশে প্রবেশ করতে পারে না। ফলে পানি তাড়াতাড়ি দূষিত হয় এবং প্রাকৃতিক পরিবেশের ভারসাম্য বিনষ্ট করে। অনেক স্থানজুড়ে নদীতে ডিজেল ছড়িয়ে পড়লে নদীতে অক্সিজেনের মাত্রা কমে যায় এবং কার্বন-ডাই অক্সাইডের পরিমাণ বেড়ে যায়। ফলে ইউট্রিফিকেশন ঘটে। অক্সিজেনের পরিমাপ কমে যাওয়ায় অনেক জলজ মৎস্য প্রজাতি বিভিন্ন হুমকির মুখে পড়ে। অনেক জলজ প্রাণী মারা যায় এমনকি অনেক প্রাণী প্রজনন ক্ষমতাও হারায়। যেহেতু অক্সিজেন এবং হাইড্রোজেনের মাত্রা ঠিক আছে সেহেতু এখন আর ভয়ের কিছু নেই।
"