চুনারুঘাট (হবিগঞ্জ) প্রতিনিধি

  ২৩ জুন, ২০১৭

ভারী বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে পানিবন্দি লক্ষাধিক মানুষ

হবিগঞ্জের চুনারুঘাট উপজেলায় খোয়াই নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এদিকে ভারত থেকে পানি খোয়াই নদীতে দ্রুত নেমে আসায় চুনারুঘাটবাসী নদীভাঙনের আতঙ্কে ঘুমবিহীন রাত যাপন করছে। গত বুধবার বিকেলে পর্যন্ত খোয়াই নদীর পানি চুনারুঘাট উপজেলার সীমান্তবর্তী এলাকা বাল্লা সীমান্তে বিপৎসীমার ২০৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। খোয়াই নদীর বাঁধ উপচে গাজীপুর, আহম্মদাবাদ, পাইকপাড়া, শানখলা, সাটিয়াজুরী, রাণীগাঁও ইউনিয়নের প্রায় ৪৫টি গ্রাম পানিতে তলিয়ে গেছে। জানা যায়, উপজেলার ২ হাজার হেক্টর জমির রোপা আউশ ধান পানিতে তলিয়ে গেছে।

উপজেলার কালিশিরী, কালামন্ডল, হারাজুরা, পুলপাড়, ছয়শ্রী, বগাডুবীসহ বন্যাকবলিত এলাকা পরিদর্শন করেন চুনারুঘাট উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মো. আবু তাহের এবং উপজেলার প্রশাসনিক কর্মকর্তা, জনপ্রতিনিধি ও রাজৈনতিক নেতারা।

প্রবল বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে উপজেলার বেশ কয়েকটি গ্রাম, লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি ও শতাধিক ঘরবাড়ি ভূপাতিত হওয়ার খবর পাওয়া যায়। উপজেলার বিভিন্ন স্থান পরিদর্শন করে এর বাস্তব চিত্রও দেখা গেছে। উপজেলার ১নং গাজীপুর ইউপি চেয়ারম্যান হুমায়ূন কবির খাঁন জানান, তার ইউনিয়নের ৫-৭ টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে এবং ১০টি কাঁচাঘর ধসে গেছে।

৩নং ইউপি চেয়ারম্যান চৌধুরী শামসুন্নাহারের জানান, তার ইউনিয়নের বেশ কয়েকটি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে এবং ঢাকা-সিলেট পুরাতন মহাসড়কের ছন্ডিছড়া ব্রিজটি ভেঙে যান চলাচল বন্ধ রয়েছে বলেও জানা যায়।

৫নং শানখলা ইউপি চেয়ারম্যান সবুজ তরফদার বলেন, উপজেলার বেশির ভাগ এলাকার পানি ভাটি হয় তার ইউনিয়নে অবস্থিত সুতাং ছড়ার ব্রিজ দিয়ে। ব্রিজটি ছোট হওয়ায় ধীর গতিতে পানি চলাচলের ফলে প্রায় গোটা ইউনিয়নই পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। রাস্তাঘাট পানির নিচে তলিয়ে যাওয়ায় যোগাযোগে ব্যাঘাত ঘটেছে। তিনি নিজেই পানিবন্দি থাকার কারণে ক্ষতির পরিমাণটা সরেজমিন দেখতে পারছেন না।

৬নং ইউপি চেয়ারম্যান আলহাজ সৈয়দ লিয়াকত হাসান জানান, তার ইউনিয়নে এখন পর্যন্ত কোনো ক্ষয়-ক্ষতি হয়নি। তবে খোয়াই নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় তিনি বারবার মাইকিং করে লোকজনদের সতর্ক করে দিচ্ছেন।

৮নং ইউপি চেয়ারম্যান আ. রশিদ মাস্টার জানান, তা ইউনিয়নের ৬-৭টি গ্রাম প্লাবিত হয়ে কয়েকটি কাঁচাঘর পড়ে গেছে এবং খোয়াই নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় প্রায় ৫০০শত লোক নদীর বাঁধে পাহারায় রেখেছেন। ৯নং ইউপি চেয়ারম্যান নুরুল মুবিন চৌধুরী ফারুক জানান, তার ইউনিয়নের ৭-৮টি গ্রাম প্লাবিত হয়ে কয়েকটি কাঁচাঘর ও তাহেরপুর গ্রামের মসজিদটি ধসে গেছে।

১০নং মিরাশী ইউপি চেয়ারম্যান রমিজ উদ্দিন আহমেদ জানান, তার ইউনিয়নের ১৫-২০টি গ্রাম পানিবন্দি রয়েছে। ওয়াপদা বাঁধের তিনটি স্থানে ভাঙনের সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে এবং বেশ কয়েকটি কাঁচাঘর ভেঙে পড়ে গেছে। এ ছাড়াও ৪নং পাইকপাড়া ইউনিয়নের ৬-৭টি গ্রাম প্লাবিত হয়ে ৪০-৪৫ টি কাঁচাঘর ধসে পড়েছে। তবে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণটা ২নং আহম্মদাবাদ ইউপিতে বেশি হয়েছে বলে জানা যায়।

এ ব্যাপরে চুনারুঘাট উপজেলা চেয়ারম্যান আবু তাহের বলেন, গত এক সপ্তাহ ধরে অবিরাম বৃষ্টি ও দুদিনে ভারত থেকে আসা পাহাড়ি ঢলের কারণে খোয়াই নদীর বাঁধ উপচে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় পানি প্রবেশ করেছে। উপজেলা পরিষদের পক্ষ থেকে বন্যার্তদের মাধ্যে ত্রাণ তৎপরতা চলছে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist