নড়াইল প্রতিনিধি
ঝড়ে বিধ্বস্ত ৯ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান
ক্লাস চলছে দোকানঘর ও বাসাবাড়িতে
ঝড়ে বিধ্বস্ত হওয়া নড়াইলের ৯টি প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষা পতিষ্ঠানের পাঠদান চলছে দোকানঘর ও বাড়িতে। এসব জায়গায় ঠাসাঠাসি করে বসা, বৈদ্যুতিক ফ্যান না থাকা এবং তীব্র তাপদাহে কষ্ট পাচ্ছে কোমলমতি এসব শিক্ষার্থীরা। তাছাড়া সামান্য ঝড়-বৃষ্টিতে ভিজে নষ্ট হচ্ছে বইখাতা। ফলে এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীর হাজিরা কমে গেছে এবং প্রায় আড়াই হাজার শিক্ষাথীর লেখাপড়া ব্যহত হচ্ছে।
জানা গেছে, সম্প্রতি কালবৈশাখী ঝড়ে জেলার কালিয়া উপজেলার বুড়িখালী, যাদবপুর পূর্বপাড়া, দক্ষিণ জামরিলডাঙ্গা, সাতবাড়িয়া, পূর্ব পেড়লি, পশ্চিম পেড়লি, লোহাগড়া উপজেলার ব্রাক্ষণীনগর ও বারইপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং মাওলী নি¤œ মাধ্যমিক বিদ্যালয় টিনের চালা উড়ে যায় ও বেড়া ভেঙ্গে পড়ে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ২০০৭ সালে প্রতিষ্ঠিত পিরোলী ইউনিয়নের দক্ষিণ জামরিলডাঙ্গা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একমাত্র কাঠের বেড়া দেওয়া টিনসেডের ক্লাস কক্ষটি ঝড়ে বিধ্বস্ত পুরোপুরি হয়ে গেছে। এখন ক্লাস চলছে বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি জেসমিন আক্তারের বাড়ি ও বিদ্যালয়ের সামনের নারকেল গাছের নিচে। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক (ভারপ্রাপ্ত) প্রজ্ঞা পারমিতা বিশ্বাস জানান, গাছের নীচে ক্লাস নেওয়া একদিকে ঝুঁকিপূর্ণ অন্যদিকে ছেলেমেয়েরা রোদে কষ্ট পাচ্ছে। অনেক অভিভাবক তাদের সন্তানদের স্কুলে পাঠাতে ভয় পাচ্ছেন।
একই চিত্র পার্শ্ববর্তী পুরুলিয়া ইউনিয়নের বুড়িখালী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। বিদ্যালয়টির একমাত্র টিনসেডের ক্লাস কক্ষটি ঝড়ো পুরোপুরি বিধ্বস্ত হওয়ায় স্কুল থেকে ৩০০ গজ দূরে রাস্তার পাশের একটি দোকানে ক্লাস নেওয়া হচ্ছে। রাস্তায় যানবাহনের হর্ণ, বাজারের কোলাহলসহ নানা প্রতিকুলতার কারনে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের পড়াশোনা দারুনভাবে ব্যহত হচ্ছে। অপরদিকে পাঁচগ্রাম ইউনিয়নের যাদবপুর পূর্বপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি ঝড়ে উড়ে যাওয়ায় সেখানেও ক্লাস নেয়ার কোন পরিবেশ নেই। স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান সাইফুজ্জামান জানান, ভেঙ্গে যাওয়া বিদ্যালয়টি স্থাপনের জন্য ম্যানেজিং কমিটি এবং অভিভাবকদের সাথে আলোচনা চলছে।
একইভাবে মাওলী নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয় এবং সাতবাড়িয়া, পূর্ব পেড়লি, পশ্চিম পেড়লি, লোহাগড়া উপজেলার ব্রাক্ষনীনগর ও বারইপাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের টিনের চালা ঝড়ে উড়ে যাওয়ায় খোলা আকাশের নীচে বা কোনো বাড়িতে অস্থায়ীভাবে ক্লাস নেওয়া হচ্ছে।
নড়াইলে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. শাহ আলম জানান, ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্থ প্রাইমারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান মেরামত করতে সরকারি স্লিপ ফান্ড থেকে কিছু টাকা দেওয়া হয়েছে এবং স্থানীয়ভাবে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বলা হয়েছে। এছাড়া ক্ষতিগ্রস্থ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলির মধ্যে কালিয়া উপজেলার ৪টি এবং লোহাগড়া উপজেলার ২টি স্কুলের মেরামতসহ ভবন নির্মাণের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে লিখিতভাবে জানানো হয়েছে। তবে তা কতদিনে পাওয়া যাবে তা জানেন না এই কর্মকর্তা।
"