নীলফামারী প্রতিনিধি
ফুল চাষে সফল আফিজার
ফুল ও নার্সারী ব্যবসায় সফল নীলফামারী পৌরসভার আফিজার রহমান। সঙ্কট আর পরিস্থিতি মোকাবিলা করে এলাকার চাষীদের উদ্ধুদ্ধ করে ফুলের চাষ ও নার্সারীর ব্যবসা করে সফলতা দেখিয়েছেন তিনি। ২০০২ সালে নীলফামারী পৌর শহরের পূর্ব কুখাপাড়া সড়ক ভবন সংলগ্ন ৯নং ওয়ার্ডে প্রথম নার্সারী বাগান শুরু করেন। তারপর প্রান্ত নার্সারী নামে একটি ফুলের বাগান করেন। প্রায় ১৫ বছর ধরে নার্সারী ব্যবসা করেন। এ থেকে তিনি মাসিক আয় করেন ২১ হাজার টাকা। তিনি বলেন, ‘এই নার্সারী থেকে বাৎসরিক আয় হয় দুই লাখ ৫২ হাজার টাকা।’ প্রথমে যশোরের গদখালি থেকে ট্রেন ও বাসে করে গোলাপ, রজনীগন্ধা, গ্লাডিওলাস, গাঁদা, রঙ্গন, টানটাস, স্টোরফুল, স্যালোসিয়া, এ্যাংকার, পাতাবাহার, বেলীফুল ও ডালিয়া প্রভৃতি চারা দিয়ে নার্সারী তৈরি করেন। শুরুর দিকে, চারা বিক্রির সারা না পেলেও নার্সারীর পিচু ছাড়েননি তিনি। ২০০৫ সালে কৃষি সম্প্রসারণ ও জেলা কৃষি অধিদফতরের আয়োজনে নীলফামারী উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে বনজ, ফলদ ওষুধি বৃক্ষমেলা শুরু হয়। সেখানে ওই বছরে চারা বিক্রি করে প্রায় এক লাখ টাকা আয় হয়। এখান থেকে তার ফুল চাষ ও নার্সারী করার আগ্রহ দিন দিন বেড়ে যায়। তিনি এর পর থেকে ফুলের মোকাম থেকে বীজ ও চারা এনে ১১৭ শতাংশ জমিতে নার্সারী তৈরি করেন। সদর উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের পরামর্শে মাটি পরীক্ষা করে কোন জমিতে কোন ফুল লাগাতে হবে এবং পোকামাকড় দমনে কি কীটনাশক ব্যবহার করতে হবে সে কাজটিও তিনি নিজেই করেন। প্রকার ভেদে এক একেকটি চারার মূল্য একেক রকম। গোলাপ টপসহ একটির মূল্য ৭০ টাকা, সুর্যমুখি বড় টপসহ ৬০ টাকা, ডালিয়া ১টা ৩০ টাকা, গাদা ফুল ২০ টাকা রজনীগন্ধা টপসহ ১৫ টাকা।
আফিজার বলেন, প্রতিদিন ফুল, ফুলের চারাসহ নানা ধরনের চারা বিক্রি করে তার দৈনিক আয় হয় প্রায় সাতশত টাকা। এ ভাবে তার মাসিক আয় ২১ হাজার টাকা। বাৎসরিক আয় হয় প্রায় দুই লাখ ৫২ হাজার টাকা।
ব্যক্তিগত জীবনে আফিজার রহমান বিবাহিত। আফিজারের চার সদস্যের পরিবারে এক ছেলে এক মেয়ে নিয়ে তার সংসার। পরিশ্রম অধ্যাবসায় ও সততা থাকলে যে কেউ জীবনে প্রতিষ্ঠিত হতে পারবে বলে মনে করেন তিনি। তিনি আরও বলেন, ফুলের চাষ ও চারা বিক্রির আয় থেকে ছেলে, মেয়েকে উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত করে তুলছেন। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপপরিচালক গোলাম মো. ইদ্রিস বলেন, নীলফামারীর মাটি, আলো, বাতাস ফুল ও নার্সারী তৈরিতে উপযোগী।
তিনি বলেন, মাঠ পর্যায়ে উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তারা নার্সারী মালিকদের বিভিন্ন ধরনের পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছে। আশা করি আগামীতে, জেলার ছয় উপজেলায় ফুলচাষ ও নার্সারী বাগানের পরিধি আরও বৃদ্ধি পাবে।
"