জালাল উদ্দিন হাককানী, মহম্মদপুর (মাগুরা)

  ০৯ আগস্ট, ২০২০

মহম্মদপুরের রায়পুর প্রাথমিক বিদ্যালয়

সহায়তার অভাবে ঝরে পড়ার শঙ্কায় শতাধিক শিক্ষার্থী

মাগুরার মহম্মদপুর উপজেলার রায়পুর কমিউনিটি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার ২৬ বছরেও জাতীয়করণ হয়নি। সরকারি সহায়তার অভাবে স্কুলের বেহাল দশায় শতাধিক শিক্ষার্থী ঝরে পড়ার আশঙ্কা করছেন শিক্ষক ও এলাকাবাসী। এদিকে বিদ্যালয়টি জাতীয়করণের দাবি জানিয়ে মানববন্ধন কর্মসূচী পালন করা হয়েছে। গতকাল শনিবারের এ কর্মসূচীতে ওই বিদ্যালয়ের শিক্ষক, অভিভাবক, ছাত্র-ছাত্রীসহ বিভিন্ন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধানগণ অংশ নেন।

মানববন্ধনে জানা যায়, সরকারিভাবে ১৯৯৪ সালে উপজেলার বাবুখালী ইউনিয়নের রায়পুর-হরিনাডাঙ্গা দুই গ্রামের ছেলেমেয়েদের জন্য রায়পুর গ্রামে প্রতিষ্ঠা করা হয় একটি কমিউনিটি প্রাথমিক বিদ্যালয়। সে সময় একটি ভবন নির্মাণ এবং আসবাবপত্র সরকারিভাবে দেওয়া হলেও বর্তমানে তার বেহাল দশা। ভবনটি ঝুঁকিপূর্ণ এবং আসবাবপত্র নষ্ট হয়ে গেছে। এরপরও সরকারি কোন সহায়তা মেলেনি। তারপর থেকে শিক্ষক ও স্থানীয়রা একটি টিনের ছাপড়া পেতে শিক্ষার্থীদের পাঠদান চালু রাখেন। করোনার বন্ধের সময়ে ছাপড়াটিও ঝড়ে ভেঙে গেছে। ওই বিদ্যালয়ে শুরুতে দেড় শতাধিক শিক্ষার্থী থাকলেও বেহাল দশায় বর্তমানে ১০৫ জন শিক্ষার্থী রয়েছে।

এলাকাবাসী ও অভিভাবকরা জানান, ওই বিদ্যালয় থেকে নিকটবর্তী বাবুখালী, রায়পুর চরসেলামতপুর এবং চালিমিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় বেশ দূরে। সামর্থবান অভিভাবকরা তাদের সন্তানদের দূরের বিদ্যালয়ে ভর্তি করেছেন। কিন্তু তারা বাধ্য হয়ে বেহাল দশার মধ্যেই বিদ্যালয়ে ছেলে মেয়ে ভর্তি রেখেছেন। এতে একদিকে বিদ্যালয়ে নতুন ভবন নির্মান, আসবাবপত্র এবং সরকারি সুযোগ সুবিধার অভাবে বিদ্যালয় বিমুখ শিক্ষার্থীরা।

বাবুখালী ইউপি সদস্য আছাদুজ্জামান বলেন, ‘আমার ওয়ার্ডের এই স্কুলে পাঠদান উপযোগি কোন ভবন নাই, বেঞ্চ নাই। অনেক ছেলে মেয়ে দূরের স্কুলে যেতে পারে না। এই স্কুলে যদি তারা পাঠ গ্রহন করতে না পারে তবে তারা আর শিক্ষার সুযোগ পাবে না। আমি চাই এই বিদ্যালয়টি জাতীয়করণ করা হোক।’

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শামছুন্নাহার বলেন, ‘শুরু থেকে আমরা বিনা বেতনে পাঠদান করে যাচ্ছি। আমার বিদ্যালয়ের ছেলে মেয়ের কয়েকবছর উপবৃত্তি পেলেও এখন পায়না। তারা বলে আপা আমাদের টাকা কৈ, আমি দিতে পারিনা। আমি নিজে টাকা দিয়ে একটি টিনের ঘর করেছি তা আম্পান ঝড়ে ভেঙে গেছে। এখন যদি সরকারি সহায়তা না পাই তবে করোনার বন্ধের পর ছেলে মেয়ে নিয়ে খোলা আকাশের নিচে ক্লাস করাতে হবে।’

উপজেলা শিক্ষা অফিসার নূর মোহাম্মদ বলেন, ‘এ ব্যাপারে ওই বিদ্যালয়ের কেউ কোন আবেদন করেনি বা আমাকে অবগত করেনি। তারা আবেদন করলে পরিদর্শন করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close