ইসলামপুর (জামালপুর) প্রতিনিধি

  ০৩ জুলাই, ২০২০

ইসলামপুরে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি

‘সহালে খাইলে বাকি দুবেলা না খেয়ে থাহি’

ঘরের চতুর পাশে বুক সমান পানি। কোন দিকে যাওয়ার উপায় নাইকে। রাতে শুইলে সাপের ভয়ে ঘুমও আসে না। আর ঘরে তো খাওন নাই। সহালে খাইলে বাকি দুই বেলা না খেয়ে থাহি ছাওয়াল পাওয়াল লয়ে। কেহ আমাগরে খোঁজখবরও নেয় না। জামালপুরের ইসলামপুর উপজেলার চিনাডুলী ইউনিয়নের পশ্চিম বাবনা গ্রামের তিন সন্তানের জননী গোলাপী বেগম গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে উপজেলার বন্যা কবলিত এলাকায় গেলে তিনি এসব কথা বলেন।

কান্নাজড়িত কণ্ঠে তিনি আরো বলেন, আমাগরে তো খাওন নাই, অবলা প্রাণী ছাগল-গরুর দিকে চাইলে বুকটা ফাইটা যায়। প্রতি বছরের এমন বন্যার কষ্ট কোন দিন কি দূর হবেন।

তার কথা শেষ হতে না হতেই ওই এলাকার মমতা, শেফালী, আলাউদ্দিনসহ আরও অনেকেই বলেন, গত সাত দিন থাইকা বাড়িঘরে পানি উঠছে অহন পর্যন্ত কোন মেম্বার চেয়ারম্যানরা খোঁজখবর লইনাই। এই পানিতে প্রশাব পায়খানা করতাছি আবার এই পানিই খাই আমরা, তাহলে বুঝেন কত কষ্টে আছি আমরা ছাওয়াল পাওয়াল লইয়া।

জানা গেছে, গত ২৪ ঘন্টায় বাহাদুরাবাদ পয়েন্টে যমুনার পানি ৭ সেন্টিমিটার যমুনার পানি কমলেও এখনো বিপদসীমার ৭৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। সামান্য পানি কমলেও কমেনি বন্যা কবলিত এলাকার মানুষের দুর্ভোগ। এদের দুর্ভোগ দিন দিন ভেড়েই চলছে। উপজেলার ৭টি ইউনিয়নের ৯০ হাজারের বেশি মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। বিভিন্ন সড়কে পানি উঠায় দুর্গত এলাকায় ব্যহত হচ্ছে সড়ক যোগাযোগ। দূর্গত এলাকায় শুকনো খাবার, বিশুদ্ধ পানি ও গো-খাদ্যের সংকট দেখা দিয়েছে। তবে এ পর্যন্ত উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে মাত্র ২৬ মেক্ট্রিক টন জিআর চাল, শুকনো খাবার এবং গো-খাদ্যের বাবদ নগদ দই লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।

তবে এসব বিষয়ে ইসলামপুর চিনাডুলী ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুস ছালামের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তাকে পাওয়া যাইনি। এ বিষয়ে জেলা ত্রাণ ও পূনর্বাসন কর্মকর্তা নায়েব আলী জানান, জেলার সাতটি উপজেলার আটটি পৌরসভা এলাকা ও ৪৩টি ইউনিয়নে ৩ লাখ ৫৯ হাজার ৪২ মানুষ বন্যার ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। তবে এ পর্যন্ত জেলার বন্যা কবলিত এলকায় ৬০ মেক্ট্রিক টন জিআর চাল ও নগদ ৫ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close