লালমনিরহাট প্রতিনিধি

  ০৯ এপ্রিল, ২০২০

লালমনিরহাটে ত্রাণের জন্য সড়কে নামল কর্মহীন মানুষ

বাড়িতে খাবার না থাকায় লালমনিরহাটে কয়েকশ কর্মহীন মানুষ ত্রাণের জন্য রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ করেছেন। পরে সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) উত্তম কুমার ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে ত্রাণ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিলে বিক্ষুব্ধ জনতা ঘরে ফিরে যায়। গতকাল বুধবার দুপুরে লালমনিরহাট জেলা শহরের হাড়িভাঙ্গা এলাকার ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজের সামনে এ বিক্ষোভ করেন কর্মহীন সাধারণ মানুষ।

জানা যায়, মরণঘাতি করোনাভাইরাসের কারণে লালমনিরহাটে কর্মহীন হয়ে পড়ে অসংখ্য মানুষ। সরকারি ত্রাণ না পাওয়ায় নিম্নআয়ের এসব মানুষের মাঝে চরম ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। কাজে বাহির হতে না পারায় এবং বাড়িতে খাবার না থাকায় জেলার অনেক জায়গায় সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষগুলো চরম বিপর্যয়ের মধ্যে দিন পার করছেন। এক পর্যায়ে বাড়িতে খাবার না থাকায় নিরুপায় হয়ে তারা সরকারি ত্রাণের জন্য রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ শুরু করেন।

খবর পেয়ে লালমনিরহাট সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার উত্তম কুমার এসে তাদের ত্রাণ দেওদয়ার প্রতিশ্রুতি দিলে বিক্ষুব্ধ কর্মহীন মানুষরা তাদের ঘরে ফিরে যায়।

এদিকে লালমনিরহাটে কর্মহীন মানুষজনের জন্য গত ৭ এপ্রিল পর্যন্ত জেলাজুড়ে যে ত্রাণ বিতরণ হয়েছে তাতে সরকারি ত্রাণের তুলনায় ব্যক্তি উদ্যোগে সহায়তার পরিমাণই বেশি বলে জানা গেছে। সরকারিভাবে পর্যাপ্ত ত্রাণসামগ্রী বিতরণ না করায় স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও সাধারণ মানুষের মাঝে চরম ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। সরকারিভাবে আরো ত্রাণ চেয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করা হয়েছে বলে জানা গেছে।

লালমনিরহাট জেলার ৪৫টি ইউনিয়ন ও দুটি

পৌরসভায় নিম্নআয়ের ২২ হাজার ২৫০টি পরিবারের মাঝে সরকারিভাবে এ পর্যন্ত মোট ৩১৯ টন চাল ও ১৩ লাখ ৬০ হাজার টাকা বিতরণ করা হয়েছে।

লালমনিরহাট সদর উপজেলা চেয়ারম্যান কামরুজ্জমান সুজন বলেন, মানুষের চাপ সামলানো যাচ্ছে না। কর্মহীন মানুষের চাপে বাড়িতেই থাকা যাচ্ছে না। দ্রুত সরকারি পর্যাপ্ত ত্রাণসামগ্রী বিতরণ করা প্রয়োজন। এজন্য পর্যাপ্ত বরাদ্দ দরকার। তবে সরকারি এই ত্রাণ তৎপরতার তুলনায় বেসরকারি পর্যায়ে ব্যক্তি উদ্যোগেই বেশি ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রম চালানো হয়েছে বলে মাঠ পর্যায়ে তথ্য পাওয়া গেছে।

লালমনিরহাট জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন অধিদফতর সূত্র জানায়, জেলার ৪৫টি ইউনিয়ন ও দুটি পৌরসভায় এক লাখ ৭ হাজার ৩১৫টি পরিবারের মাঝে ত্রাণসামগ্রী বিতরণের চাহিদার একটি তালিকা পাওয়া গেছে। ত্রাণসামগ্রী চেয়ে বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিতভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে।

লালমনিরহাট-৩ (সদর) আসনের সংসদ সদস্য ও জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদেরের পক্ষ থেকে সদর উপজেলার শ্রমজীবীসহ বিভিন্ন পেশার দেড় হাজার পরিবারের মধ্যে ত্রাণসামগ্রী বিতরণ করা হয়েছে। লালমনিরহাট সদর উপজেলা চেয়ারম্যান কামরুজ্জামান সুজন পাঁচ শতাধিক পরিবারের মধ্যে ত্রাণসামগ্রী বিতরণ করেছেন।

এদিকে, লালমনিরহাট-২ আসনের (আদিতমারী-কালীগঞ্জ) সংসদ সদস্য ও সমাজকল্যাণমন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদের পক্ষ থেকে কালীগঞ্জ ও আদিতমারী উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকা ১৫৬ পরিবারকে পুলিশ ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার মাধ্যমে ত্রাণসামগ্রী পৌঁছে দেওয়া হয়েছে।

লালমনিরহাট-১ আসনের সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোতাহার হোসেন শ্রমজীবী মানুষের মাঝে ত্রাণসামগ্রী বিতরণ কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছেন।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close