বরগুনায় তালতলীতে গৃহহীনদের জন্য দুর্যোগ সহনীয় ঘর নির্মাণ প্রকল্পে অনিয়মের অভিযোগ ওঠেছে। তালতলী উপজেলার সাতটি ইউনিয়নে ৪৩টি দুর্যোগ সহনীয় ঘর নির্মাণ করছে সরকার। ২ লাখ ৯৯ হাজার টাকা ব্যয়ে নির্মাণ করা হচ্ছে প্রতিটি ঘর। স্থানীয় ভূমি অফিসের মাধ্যমে তদন্ত করে সঠিক গৃহহীনদের নামে ঘর বরাদ্দ দেওয়া হয়। কিন্তু প্রকল্পের দায়িত্বপ্রাপ্তদের বিরুদ্ধে তালিকায় নাম তুলতে টাকা নেওয়া ও স্বচ্ছল ব্যক্তির নামে ঘর বরাদ্দ দেওয়ার অভিযোগ ওঠেছে।

স্থানীয়দের অভিযোগে জানা গেছে, উপজেলার পচাকোড়ালিয়া ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের আবদুল হাইয়ের ছেলে শহিদুল ইসলামকে ঘর পাইয়ে দিয়েছেন স্থানীয় ইউপি সদস্য নাসির উদ্দিন নসা মিয়া। শহিদুল ইসলাম একজন স্বচ্ছল ও ইউপি সদস্য নাসির উদ্দিনের আত্মীয় বলে জানা গেছে। শহিদুল ইসলাম বাড়িতে হাঁস-মুরগি ও গরু পালনের পাশাপাশি নিজের পুকুরে মাছও চাষ করেন। সব মিলিয়ে আর্থিকভাবে সচ্ছল জীবনযাপন করেন তিনি। গত শুক্রবার পচাকোড়ালিয়া ইউনিয়নের হুলাটানা এলাকায় সরেজমিনে দেখা যায়, শহিদুল ইসলামের জন্য দুর্যোগ সহনীয় বরাদ্দ ঘরটি তৈরিতে বেশ কিছু নকশা পরিবর্তন করা হয়েছে।

এ বিষয়ে ৭নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য নাসির উদ্দিন নাসা মিয়া বলেন, বরগুনা-১ আসনের সংসদ সদস্যের সুপারিশের কারনে শহিদুলের ঘরটি দেওয়া হয়েছে। আর ঘর পাইয়ে দেওয়ার জন্য কোনো টাকা নেওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করেন তিনি।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক স্থানীয় ব্যক্তি জানান, জনপ্রতিনিধিদের কাছের মানুষ হওয়ায় স্বজনপ্রীতি ও টাকার বিনিময়ে ঘর পেয়েছেন অনেকেই। এতে করে প্রকৃত অনেক গৃহহীন সরকারি ঘর পাননি। সঠিকভাবে তদন্ত না করার কারনেই এ অনিয়ম হয়েছে বলে মনে করেন তারা।

পাঁচাকোড়ালিয়া ইউপি চেয়ারম্যান নজির হোসেন পাটোয়ারীকে একাধিকবার ফোন দেওয়া হলে তার মুঠোফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়।

পাঁচাকোড়ালিয়া ভূমি সহকারী কর্মকর্তা সুভাষ চন্দ্র শীল বলেন, ‘এ বিষয়ে আমাদের কোনো দায়িত্ব দেওয়া হয়নি। সংশ্লিষ্ট ইউপি চেয়ারম্যান ও মেম্বার কী করছে তা আমি জানি না।’

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা রানু বেগম বলেন, গত সাত থেকে আট দিন আগে যোগদান করেছি। এই ঘর যখন বরাদ্দ করা হয়েছে তখনকার প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা ছিলেন মহসিন উল হাসান।

ইউএনও (ভারপ্রাপ্ত) মো. সেলিম মিঞা জানান, অনিয়মের বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

"