সোনারগাঁ (নারায়ণগঞ্জ) প্রতিনিধি

  ২৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২০

স্টল বরাদ্দে শঙ্কা কাটেনি দরিদ্র ৩৫ কারুশিল্পীর

উচ্চ আদালতে রিট পিটিশনের ৬ বছর পর রায় পেয়েও স্টল বরাদ্দে শঙ্কা কাটেনি নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে ৩৫ দরিদ্র কারুশিল্পীর। এদিকে স্টল বরাদ্দ পাওয়া নিয়ে নতুন জটিলতা সৃষ্টির আশঙ্কায় কারুশিল্পীরা বিভিন্ন দফতরে আবেদন করেছেন। তবে ফাউন্ডেশন কর্তৃপক্ষ আদালতের রায় বাস্তবায়নে কাজ করছে বলে জানা গেছে।

নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে বাংলাদেশ লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশনে স্টল বরাদ্দে অনিয়মের অভিযোগে ২০১৩ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি উচ্চ আদালতে রিট পিটিশন করেন জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্তসহ ৩৫ কারুশিল্পী। ২০১৯ সালের ২৬ নভেম্বর রিট পিটিশনের রায়ে উল্লেখিত কারুশিল্পীদের নামে স্টল বরাদ্দের নির্দেশ দেওয়া হয়।

ফাউন্ডেশন সূত্রে জানা যায়, ১৯৯২ সাল থেকে বাংলাদেশ লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশন চত্বরে ৩৫টি ছনের ঘরে কারুশিল্পীরা নিজেদের তৈরি কারুপণ্য বিক্রি শুরু করেন। ২০১০ সালে কর্তৃপক্ষ ছনের ঘরের স্থলে প্রায় ১ কোটি ৪২ হাজার টাকা ব্যয়ে ৪৮টি পাকা স্টল নির্মাণ করে। ২০১২ সালের ৩০ জুন এ কাজ শেষ হয়। আগস্ট মাসে স্টলগুলোয় পুরান ৩৫ কারুশিল্পীসহ ৪৮ জনের নামে বরাদ্দ দেয় ফাউন্ডেশন কর্তৃপক্ষ। পরে ফাউন্ডেশন পরিচালনা পরিষদের সিদ্ধান্তে ওই বরাদ্দপত্র স্থগিত করা হয়। ২০১৩ সালের জানুয়ারিতে আওয়ামী লীগের তৎকালীন সংসদ সদস্য আব্দুল্লাহ আল কায়সারকে সভাপতি, সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের তৎকালীন উপসচিব মোশারফ হোসেন ও বিসিকের প্রধান নকশাবিদ এসএম সামসুদ্দিনকে সদস্য এবং ফাউন্ডেশনের তৎকালীন পরিচালক কবি রবীন্দ্র গোপকে সদস্য সচিব করে কারুপণ্য বিপণন স্টল বণ্টন কমিটি গঠন করা হয়। দ্বিতীয় পর্যায়ের বরাদ্দে বাদ পড়েন জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্তসহ ২২ জন কারুশিল্পী। আর বাদ পড়াদের পরিবর্তে স্টল বরাদ্দ পান স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মী এবং তাদের স্বজনরা।

এ পরিপ্রেক্ষিতে বাদ পড়া কারুশিল্পীরা ২০১৩ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি উচ্চ আদালতে রিট পিটিশন করেন। শুনানি শেষে আদালত স্টল বরাদ্দের ওপর স্থগিতাদেশ দেন। একই সঙ্গে নতুন বরাদ্দের আদেশ কেন বাতিল করা হবে না, তা জানতে চেয়ে ফাউন্ডেশনের তৎকালীন পরিচালকসহ তিন জনের প্রতি রুল জারি করে প্রকৃত কারুশিল্পীদের আগের অবস্থায় বহাল রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়। সর্বশেষ ২০১৯ সালের ২৬ নভেম্বর এ রিট পিটিশনের রায়ে উল্লেখিত কারুশিল্পীদের নামে স্টল বরাদ্দের নির্দেশ দেওয়া হয়।

কারুশিল্পী কবির হোসেন জানান, আদালতের আদেশ কপি প্রাপ্তির ৩০ দিনের মধ্যে কারুশিল্পীদের নামে স্টল বরাদ্দ প্রদানের কথা বলা হলেও তারা এ নিয়ে অজানা শঙ্কায় রয়েছেন। দ্রুত স্টল বরাদ্দ পাওয়ার জন্য কারুশিল্পীরা বাংলাদেশ লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশনের পরিচালক বরাবর আবেদন করেছেন। অনুলিপি দিয়েছেন সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ে।

ফাউন্ডেশনের উপ-পরিচালক রবিউল ইসলাম বলেন, উচ্চ আদালতের রায়ের বাইরে যাওয়ার সুযোগ নেই। উল্লেখিত ৩৫ জনসহ ৪৮ কারুশিল্পীর নামেই স্টল বরাদ্দ দেওয়া হবে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close