হাসানুজ্জামান তুহিন, শাহজাদপুর (সিরাজগঞ্জ)

  ২৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২০

আশা মিটল ভাষামতিনের জন্ম এলাকার মানুষের

দীর্ঘ ৬৮ বছর প্রতিক্ষার পর ভাষা সৈনিক আব্দুল মতিনের নিজ গ্রামের শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা নিবেদন করলেন স্থানীয় সর্বস্তরের মানুষ। সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলার গুধিবাড়ী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এই শহীদ মিনার তৈরি করে জেলা পরিষদ। একইভাবে ভাষা মতিনের জন্মভিটা চৌহালীর ধুবুলিয়া-শৈলজানা চরে নবনির্মিত শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন স্থানীয়রা।

একুশের ফেব্রুয়ারি গুধিবাড়ি গিয়ে দেখা যায়, সূর্য্য উদয়ের সঙ্গে সঙ্গে শাহজাদপুর উপজেলা ৩ ইউনিয়নের সব বিদ্যাপীঠের শিক্ষার্থীরা প্রায় ১০ কিলোমিটার পথ অতিক্রম করে নবনির্মিত শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। পরে ওই স্থানে বিকেলে আলোচনা সভা ও লোকজ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন আব্দুল মতিনের ছোট ভাই গোলাম কিবরিয়া হান্নান।

১৯৫২ সালে ভাষা আন্দোলনের সর্বদলীয় সংগ্রাম কমিটির আহ্বায়ক ছিলেন তৎকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র আব্দুল মতিন। ১৯৬৯ সালের দিকে তাঁর জন্মভিটা চৌহালী উপজেলার যমুনার শৈলজানা চর এলাকা ভাঙ্গনের পর ভাষা সৈনিকের পিতা আব্দুল জলিল নদীর পশ্চিম পাড় শাহজাদপুর উপজেলার গুদিবাড়িতে বসতি গড়ে তোলেন। দীর্ঘদিন ধরে এই দুই এলাকায় কোন স্থায়ী শহীদ মিনার ছিল না। তাদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে দাবি নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রচার হয়। পরে সিরাজগঞ্জ জেলা পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান আব্দুল লতিফ বিশ্বাস উদ্যোগে নিয়ে ২টি শহীদ মিনার তৈরি করেন।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, প্রয়াত ভাষা সৈনিক আব্দুল মতিনের জন্মভূমি সিরাজগঞ্জের চৌহালীতে-শাহজাদপুরের এই জনপদে রয়েছে দেড় শতাধিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আছে। স্বাধীনতার পরও এখানের অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে স্থায়ীভাবে ছিল না শহীদ মিনার। স্থানীয়দের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে ২০০৮ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি প্রশিকার সহায়তায় শৈলজানা নিম্নমাধ্যমিক বিদ্যালয় চত্ব¡রে নির্মিত শহীদ মিনার ও লাইব্রেরি উদ্বোধন করনে ভাষা মতিন। কিন্তু গত ২০১৫ সালের ১ জুন সেই শহীদ মিনার যমুনায় বিলীন হয়ে যায়।

শহীদ মিনার নির্মাণে এলাকাবাসীর বহু প্রতিক্ষিত স্বপ্নপূরণ হয়েছে বলে জানালেন চৌহালীর শৈলজানা গ্রামের শিক্ষক মাসুদুর রহমান, শাহজাদপুরের গুদিবাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোজাম্মেল হক ও স্বাস্থ্য সহকারী আসাদুজ্জামান আসাদ। ভাষা সৈনিক আব্দুল মতিনের স্ত্রী গুলবদন নেছা মনিকা, ছোট ভাই গোলাম কিবরিয়া হান্নান জানান, শহীদ মিনার ২টি ছিল বহু প্রতিক্ষার ফল।

সাবেক মন্ত্রী ও জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আব্দুল লতিফ বিশ্বাস জানান, ‘ভাষা সৈনিক আব্দুল মতিন ভাইকে নিয়ে আমরা গর্ব করি। তার জন্মভূমি ও গ্রামে শহীদ মিনার নেই জেনে আমিও ব্যথিত ছিলাম। তাই সেখানে ২টি শহীদ মিনার তৈরি করতে পেরে নিজেকে ধন্য মনে করছি। তবে তা পরিচ্ছন্ন ও মর্যাদা রক্ষা করতে হবে এলাকাবাসীর।’

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close