মিজানুর রহমান, তানোর (রাজশাহী)

  ২৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২০

রাজশাহীর তানোর উপজেলার আজিজপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়

মাটিতে ফুল বিছিয়ে শহীদ মিনার অতঃপর শ্রদ্ধা নিবেদন

ভাষাশহীদদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা তাদের। তবে ধারে-কাছে কোনো শহীদ মিনার নেই। কিন্তু মহান একুশের বিশেষ দিনে ভাষাশহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা তো জানাতেই হবে। অগত্যা মাটিতে ফুল বিছিয়ে শহীদ মিনার গড়লেন, তাতেই অঞ্জলি দিলেন সবাই। ভাষা শহীদদের প্রতি এভাবেই শ্রদ্ধা জানিয়েছে রাজশাহীর তানোর উপজেলার আজিজপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিশুরা।

একুশে ফেব্রুয়ারি সকালে গিয়ে দেখা যায়, মাটিতে নকশা করে ফুল বিছিয়ে তৈরি করা হয়েছে তিনটি মিনার। বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও বেশ কয়েকজন অভিভাবক দাঁড়ালেন তাদের গড়া শহীদ মিনারের সামনে। এরপর তারা একে একে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। শেষে তারা নীরবে দাঁড়িয়ে থাকেন কিছুক্ষণ। শ্রদ্ধা জানানো শেষে সকলে যে যার মতো চলে যান।

বিদ্যালয়টির ১০-১৫ জন শিক্ষার্থী এই প্রতিবেদককে বলেন, দূরের কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে গিয়ে ভাষাশহীদদের শ্রদ্ধা জানান সম্ভব হয় না। তাই তারা নিজ উদ্যেগেই বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে মাটিতেই একটি শহীদ মিনার নির্মাণ করার কথা ভাবেন।

শিক্ষার্থীরা বলেন, ‘এ ভাবনা থেকে আমরা কয়েকজন শিক্ষার্থী মিলে মাটিতে ফুল বিছিয়ে একটি শহীদ মিনার তৈরি করি। আমরা নিজেরাই এসব কাজ ভাগাভাগি করে করেছি।’

আক্ষেপ প্রকাশ করে তারা বলেন, ‘আমাদের বিদ্যালয়ের ৪ কিলোমিটারের মধ্যে কোন শহীদ মিনার নেই। তাই ছোট হলেও এখানে একটি স্থায়ী শহীদ মিনার নির্মাণ করা হলে আমরা খুব সহজে শহীদদের শ্রদ্ধা জানাতে পারতাম।’

আজিজপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রধান শিক্ষক সাইফুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘২১ ফেব্রুয়ারি আসলে শহীদ মিনার না থাকার কারণে আমরা দিনটি যথাযথভাবে পালন করতে পারি না। একাধিকবার জনপ্রতিনিধিরা শহীদ মিনার তৈরির আশ্বাস দিলেও তা বাস্তবায়ন করেনি। এ সময় তিনি শিক্ষার্থীদের স্বার্থে কর্তৃপক্ষের কাছে একটি শহীদ মিনার আবেদন করেন।’

উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সানাউল্লা অধিকাংশ বিদ্যালয়ে শহীদ মিনার না থাকার কথা স্বীকার করে বলেন, শহীদ মিনার নির্মাণের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হবে। আশা করছি অচিরেই সেইসব প্রতিষ্ঠানগুলোতে শহীদ মিনার তৈরি করা হবে।

তানোর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সুশান্ত কুমার মাহাতো প্রতিদিনের সংবাদকে বলেন, তানোর উপজেলার যেসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নেই, সেসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার গড়ে তোলার উদ্যোগ নেওয়া হবে।

জানতে চাইলে উপজেলা শিক্ষা কমিটির সভাপতি ও উপজেলা চেয়ারম্যান লুৎফর হায়দার রশিদ ময়না বলেন, দ্রুত খোঁজ-খবর নিয়ে বিদ্যালয়টিতে একটি শহীদ মিনার নির্মাণ করে দেওয়া হবে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close