বেনাপোল (যশোর) প্রতিনিধি

  ১৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২০

বেনাপোল-শার্শা

সীমান্তে থামছেই না স্বর্ণ ও হুন্ডি পাচার

যশোরের বেনাপোল ও শার্শা সীমান্ত দিয়ে থামছে না স্বর্ণ ও হুন্ডি পাচার। গত দুই বছরে এ সীমান্ত এলাকা থেকে ভারতে স্বর্ণ ও হুন্ডি পাচারের সময় বিপুল পরিমাণ স্বর্ণের বার, বাংলাদেশী টাকা, মার্কিন ডলার, রুপি ও ব্রিটিশ পাউন্ড জব্দ করেছে বিজিবি, পুলিশ ও শুল্ক গোয়েন্দা বিভাগ। তবে ধারণা করা হচ্ছে পাচার হয়েছে আরও কয়েকগুণ। অভিযোগ আছে, প্রশাসন বিভাগের অনিয়ম দুর্নীতির সুযোগে শক্তিশালী চক্র অবৈধ অনুপ্রবেশকারী, পরিবহন কর্মচারী, চেকপোস্টের বৈধ ও অবৈধ মানিচেঞ্জার ব্যবসায়ী, সিএন্ডএফ কর্মচারী ও পাসপোটধারীযাত্রীদের মাধ্যমে সীমান্ত পথে স্বর্ণ ও হুন্ডি পাচার করছে। কেউ কেউ আটক হলেও পর্দার আড়ালে থেকে যায় প্রকৃত চোরাকারবারীরা।

জানা গেছে, বেনাপোল ও শার্শা এলাকার সঙ্গে ভারতের ৭০ কিলোমিটার সীমান্ত রয়েছে। এরমধ্যে গোগা, কায়বা, পুটখালী, দৌলতপুর, সাদিপুর, গাতিপাড়া, রঘুনাথপুর, ঘীবা ও শিকারপুর উল্লেখযোগ্য। যোগাযোগ ব্যবস্থা সহজ ও কলকাতার দূরত্ব কম হওয়ায় সোনা চোরাকারবারীরা এ সীমান্ত নিরাপদ রুট হিসেবে ব্যবহার করছে। সোনা পাচারকারীদের একটি শক্তিশালী সিন্ডিকেট রয়েছে। যে কারণে বেনাপোল ও শার্শা সীমান্ত এলাকায় বন্ধ হচ্ছে না সোনা চোরাচালান। এই দুই সীমান্তের বিভিন্ন পয়েন্ট দিয়ে স্বর্ণ ও অর্থ পাচার হয়ে থাকে। বিশেষ করে পাসপোর্ট ধারীযাত্রীরা ভারতে যাওয়ার সময় হুন্ডির মাধ্যমে অর্থ নিয়ে যান। এছাড়া চোরাচালানীরা লেনদেন হুন্ডির মাধ্যমে করে থাকে। বেনাপোল আন্তর্জাতিক চেকপোস্ট এলাকায় শতাধিক নামে বেনামে সাইবোর্ড সর্বস্ব ব্যবসায়ীক প্রতিষ্ঠান বিভিন্ন ব্যবসার আড়ালে স্বর্ণ পাচার ও হুন্ডি ব্যবসার সঙ্গে জড়িত।

গত দুই বছরে বেনাপোল ও শার্শা সীমান্ত থেকে একশ ২৫ কেজি সোনা, ২০ কোটি ২৫ লাখ বাংলাদেশি টাকা, ৮ লাখ মার্কিন ডলার, ৮ লাখ ভরতীয় রুপি ও ৭০ হাজার ব্রিটিশ পাউন্ড জব্দ করেছে বিজিবি, পুলিশ ও শুল্ক গোয়েন্দা বিভাগ। এ সময় অভিযান চালিয়ে একশ ৩৬ জন স্বর্ণ ও হুন্ডি পাচারকারীকে আটক করা হয়। তবে যারা আটক হয় তারা প্রকৃত মালিক নন। টাকার বিনিময়ে এসব স্বর্ণ ও হুন্ডির টাকা বহন করে থাকে তারা। আসল ব্যবসায়ীরা থেকে যাচ্ছে ধরাছোঁয়ার বাইরে।

যশোর-৪৯ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল সেলিম রেজা বলেন, যোগাযোগ ব্যবস্থা সহজ হওয়ায় স্বর্ণ ও হুন্ডি পাচারকারীরা বেনাপোল ও শার্শা সীমান্ত ব্যবহার করে থাকে। এ ক্ষেত্রে বিজিবি সতর্ক রয়েছে ও গোয়েন্দা কার্যক্রম বৃদ্ধিসহ আধুনিক সরঞ্জাম ব্যবহার করা হচ্ছে। দুই বছরে একশ ২৫ কেজি স্বর্ণ, ১৬ কোটি টাকা জব্দ করা হয়েছে।

শার্শার নাভারণ সার্কেলের এএসপি জুয়েল ইমরান বলেন, বেনাপোল পোর্ট ও শার্শা থানায় গত দুই বছরে স্বর্ণ ও অর্থপাচার আইনে একশ ৩৬ জনকে আসামি করে একশ ১২টি মামলা হয়েছে। এ সময় একশ ২৫ কেজি স্বর্ণ, ৪ কোটি ২৫ লাখ টাকা, ৮ লাখ মার্কিন ডলার, ৮ লাখ ভারতীয় রুপি ও ৭০ হাজার ব্রিটিশ পাউন্ড জব্দ করা হয়েছে। স্বর্ণ ও অর্থ পাচার প্রতিরোধে পুলিশ কাজ করে যাচ্ছে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close