শাজাহানপুর (বগুড়া) প্রতিনিধি

  ২৬ জানুয়ারি, ২০২০

শাজাহানপুরে রাতের আঁধারে লুট হচ্ছে কৃষি জমির মাটি!

দিনের আলো নিভে গেলেই মাটির ট্রাকের সারি। একের পর এক ট্রাকের যাতায়াত। দূর থেকে মনে হবে গ্রামগুলোতে যেন কিছু একটা ঝামেলা হয়েছে। এগিয়ে গেলেই ধারণা পাল্টে যাবে! কৃষিজমির মাটি ডাকাতি চলছে! রাতের আঁধারে লুট হচ্ছে কৃষিজমির উর্বর মাটি। কিছুতেই থামছে না। দিনদিন বেড়েই চলেছে মাটি ব্যবসায়ীদের দৌরাত্ব।

বগুড়ার শাহাজানপুরের রামচন্দ্রপুর গ্রামে প্রবেশ করতেই দেখা গেল স্থানীয় সড়কে প্রায় ৫০ থেকে ৬০টি ট্রাক আটকে রয়েছে। একটি মাটির ট্রাক নিয়ন্ত্রন হারিয়ে উল্টে পড়ে আছে। সেটি না উঠা পর্যন্ত অন্যান্য ট্রাকগুলোও চলাচল করতে পারছে না। এসব ট্রাকে করে লুট হচ্ছে কৃষিজমির উর্বর মাটি। মাদলা ইউনিয়নের রামচন্দ্রপুর গ্রামসহ কাজীপুর, নন্দগ্রাম ও বলদিপালান গ্রাম থেকে কৃষিজমির উর্বর মাটি কেটে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। কয়েকজন মাটি ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা হয়। তারা জানান, ‘উপজেলা প্রশাসনকে ম্যানেজ করা হয়েছে। পুলিশও টাকা নেয়।’

স্থানীয়রা জানান, মাটি ব্যবসায়ীরা প্রভাবশালী। তাদের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে কথা বলা যায় না। উপজেলা প্রশাসনকে টাকা দিয়েই তারা অবৈধভাবে কৃষিজমির মাটি কাটছে। মাঝে মাঝে উপজেলা প্রশাসন নামমাত্র অভিযান পরিচালনা করে।

সরেজমিনে জানা গেছে, উপজেলায় প্রায় অর্ধশতাধিক ইটভাটা আছে। এসব ইটভাটায় মাটির চাহিদা পূরণ করতে কৃষিজমি থেকে মাটি কেটে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। এতে করে ফসলি জমিগুলো পুকুরে পরিণত হচ্ছে। পরে এসব পুকুরে মাছ চাষ হলেও অবৈধভাবে জমির শ্রেণি পরিবর্তন হচ্ছে। মাটি ব্যবসায়ীরা কৃষকের কাছ থেকে প্রতিশতক জমির মাটি কিনে নেন দশ থেকে পনের হাজার টাকায়। জমি থেকে মাটি কাটার চুক্তি হয় তিন থেকে চার ফিট পর্যন্ত। অধিকাংশ ফসলিজমি ১৫ থেকে ২০ ফিট পর্যন্ত কাটা হয়েছে। এতে করে ওই জমির আশেপাশের কৃষিজমিগুলোও ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। অনেক কৃষক বাধ্য হয়ে তাদের জমির মাটিও বিক্রি করে দেন।

উপ-সহকারি কৃষি কর্মকর্তা এসএম আল-আমিন জানান, মাটির উপরিভাগের অংশকে টপসয়েল বলা হয়। কৃষিজমির ৫ থেকে ১০ ইঞ্চির মধ্যেই মাটির উর্বরতা শক্তি থাকে। এই অংশেই মাটিতে জৈব পদার্থ থাকে। পৃথিবীর প্রায় ৯৫ শতাংশ খাদ্য জন্মে এই টপ সয়েল থেকে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close