চাঁপাইনবাবগঞ্জের ৪৬টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দীর্ঘদিন ধরে প্রধান শিক্ষক নেই। এসব বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষকরা প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করছেন। এ কারণে এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রশাসনিক কার্যক্রম ও পাঠদান ব্যাহত হচ্ছে। জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, জেলায় মোট ৭০৫টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় আছে। এর মধ্যে ৪৬টির প্রধান শিক্ষকের পদ শূন্য। এসব বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকরা প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করছেন। এছাড়া জেলায় ৩১৯টি সহকারী শিক্ষকের পদও শূন্য রয়েছে। এছাড়াও রীট মামলাজনিত কারণে আরো ৯টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে প্রধান শিক্ষকের পদ নিয়ে জটিলতা রয়েছে।

সূত্র জানায়, চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলায় ১০০, শিবগঞ্জ উপজেলায় ১৩৩, গোমস্তাপুর উপজেলায় ৩৪, নাচোল উপজেলায় ৩৬, ভোলাহাট উপজেলায় ১৬ সহকারী শিক্ষকের পদশূন্য রয়েছে।

জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা বলছেন, দীর্ঘদিন জেলার বেশকিছু সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান ও সহকারী শিক্ষকের পদ শূন্য থাকায় ওই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোয় একদিকে যেমন প্রশাসনিক কাজে সমস্যা হচ্ছে। অন্যদিকে শিশুশিক্ষার্থীদের পড়াশোনাও বিঘিœত হচ্ছে। এ বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে।

চরাঞ্চলের প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোয় এ সংকট আরোও বেশি। সদর উপজেলার শাজাহানপুর ইউনিয়নের চর কাঁচিচর প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা ৬৯২। এ বিদ্যালয়ে অনুমোদিত সহকারী শিক্ষকের পদ ১০ জন। এখানে কর্মরত আছেন মাত্র ৩ জন। ৭ শিক্ষকের পদ শূন্য রয়েছে এ বিদ্যালয়ে। একই অবস্থা জহুরপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। অনুমোদিত ৮ জনের জায়গায় কর্মরত আছেন মাত্র ৩ জন। চরআলাতুলি কোদালকাটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ৯ জনের জায়গায় কর্মরত আছেন ৪ জন। এছাড়াও চরআলাতুলি কোদালকাটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, নামোসূর্যনারায়ণপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, চরবাগডাঙ্গা-২ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, শেখালিপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ বিভিন্ন বিদ্যালয়ে রয়েছে শিক্ষক সংকট। চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার চরআলাতুলি, চরবাগডাঙ্গা, শাহজাহানপুর ও নারায়ণপুর ইউনিয়নের অধিকাংশ প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক সংকটে খুড়িয়ে খুড়িয়ে চলছে শিক্ষা কার্যক্রম।

সদর উপজেলার শাহজাহানপুর ইউনিয়নের চর কাঁচিচর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘আমার বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীর সংখ্যা ৬৯২ জন। এখানে দশজন সহকারী শিক্ষকের পদ থাকলেও আছেন মাত্র তিনজন। এ সংকটের মধ্যদিয়ে বিদ্যালয় সামাল দেওয়া খুব কঠিন হচ্ছে।’

জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. সাইফুল ইসলাম জানান, দীর্ঘদিন ধরে উপজেলার ৪৬টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষকের পদ শূন্য থাকায় ওই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোয় একদিকে প্রশাসনিক কাজে সমস্যা হচ্ছে। অন্যদিকে শিশুশিক্ষার্থীদের পড়াশোনা বিঘিœত হচ্ছে। এ বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে নিয়মিত অবহিত করা হচ্ছে।

"