শুষ্ক মৌসুমে যমুনার অব্যাহত ভাঙনে দিশাহারা সিরাজগঞ্জের শিক্ষা, চিকিৎসা ও তাঁতশিল্পসমৃদ্ধ এনায়েতপুরের ৫টি গ্রামের কয়েক হাজার মানুষ। শুধুমাত্র সঠিক পরিকল্পনা আর জনপ্রতিনিধিদের অবহেলার কারনেই খুকনী ও জালালপুর ইউনিয়নের মানুষ নদী ভাঙনের কবলে পড়ে বসতভিটা হারাচ্ছে বলে অভিযোগ ক্ষতিগ্রস্থদের। তবে গতকাল বুধবার দুপুরে রাজশাহী পাউবো’র উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় প্রধান প্রকৌশলী মোহাম্মদ আলী নদী ভাঙন এলাকা পরিদর্শন করেন। এসময় তিনি দ্রুত স্থায়ী তীর সংরক্ষণ কাজের আশ্বাস দিয়েছেন। তার সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন বগুড়া পওর সার্কেলের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী তারিক আব্দুল্লাহ, সিরাজগঞ্জ পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী শফিকুল ইসলাম ও উপবিভাগীয় প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম।

সরেজমিন জানা যায়, যমুনা নদীতে তেমন তেজ না থাকলেও ব্যাপক ¯্রােত থাকায় নদীর পশ্চিম তীর ঘেষে এনায়েতপুর থানা সদরের ব্রাহ্মনগ্রাম-আরড়াকান্দিচর থেকে দক্ষিণে পাচিল পর্যন্ত প্রায় সাড়ে ৫কিলোমিটার এলাকায় তীব্র ভাঙন অব্যাহত রয়েছে। প্রতিদিনই কোন কোন বসত ভিটা যমুনা গ্রাস করছে। প্রতি ঘন্টায় বিলীন হচ্ছে ১০-১৫ মিটার ফসলী জমি। যমুনা পাড়ে ক্ষতিগ্রস্থদের নির্বাক দৃষ্টিতে চেয়ে দেখা ছাড়া কোন উপায় নেই। গত এক মাসের ব্যবধানে ব্রাহ্মনগ্রাম, আড়কান্দি, পাকুরতলা, জালালপুর, বাঐখেলা, ঘাটাবাড়ি ও পাচিল এলাকার প্রায় সাড়ে তিন শতাধীক ঘরবাড়ি, স্কুল, মসজিদ-মাদ্রাসা, ঈদগাহ মাঠ, বিভিন্ন কাঁচাপাঁকা স্থাপনাসহ কয়েক হাজার একর আবাদি জমি যমুনায় বিলীন হয়ে গেছে।

ব্রাহ্মনগ্রামের ইউপি সদস্য সোহরাব আলী, মিলন সরকার ও পাকুরতলা গ্রামের ডা. আবুল হাসেম জানান, ভাঙন রোধে পানি উন্নয়ন বোর্ডের দেওয়া আশ্বাস দেখতে দেখতে বৃহত্তর একটি জনপদ বিলীন হচ্ছে। অথচ ভাঙন রোধে কোন কাজই হচ্ছে না। আর কত অপেক্ষা করতে হবে এমন প্রশ্ন তাদের। খুকনী ইউপি চেয়ারম্যান মুল্লুক চাঁদ মিয়া, জালালপুর ইউপি চেয়ারম্যান হাজী সুলতান মাহমুদ ও পাকুরতলা গ্রামের বাসিন্দা সিরাজগঞ্জ চেম্বার ও অব কমার্স ইন্ডাষ্ট্রির সদস্য কামরুজ্জামান কামরুল জানান, যমুনা নদীতে এই অসময়ের ভাঙন নিজে চোখে না দেখলে কেউ বিশ্বাস করতে পারবে না। স্থায়ী তীর সংরক্ষরণ কাজের অপেক্ষা করলে এনায়েতপুরের পূর্বাঞ্চল অস্তিত্ব হারাবে। পাচিল-সিরাজগঞ্জ সড়ক বিলীনে হুমকিতে পড়বে। এখনই জরুরী ভিত্তিতে ভাঙন রোধে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহনের দাবি জানিয়েছেন তারা।

এ বিষয়ে রাজশাহী পাউবো’র উত্তর-পুর্বাঞ্চলীয় প্রধান প্রকৌশলী মোহাম্মদ আলী জানান, প্রায় ৮শ’ কোটি টাকা ব্যয়ে সাড়ে ৬ কিলোমিটার স্থায়ী যুমনা তীর সংরক্ষন কাজ ও ১০ কিলোমিটার নদী ড্রেজিং প্রকল্প দাখিল করা হয়েছে। আশা করছি দ্রুতই প্রকল্প অনুমোদন হলে কাজ শুরু করা যাবে।

"