তানোর (রাজশাহী) প্রতিনিধি

  ১৮ নভেম্বর, ২০১৯

রাজশাহী-তানোর

অধিকাংশ স্কুলে নেই স্বাস্থ্যসম্মত শৌচাগার

শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে স্বাস্থ্যকর স্যানিটেশন ব্যবস্থা রাখার পরিপত্র জারি করলেও রাজশাহীর তানোর উপজেলার বেশিরভাগ বিদ্যালয়ে তা মানা হচ্ছে না। সম্প্রতি উপজেলার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ঘুরে দেখা গেছে, অধিকাংশ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানই এই নির্দেশনা মানছে না। তানোর ও মুন্ডুমালা পৌরসভাসহ সাত ইউনিয়নের বিভিন্ন প্রাথমিক, কিন্ডার গার্টেন, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা এই প্রতিবেদককে এ বিষয়ে অভিযোগ করেন। শিক্ষা মন্ত্রণালয় ২০১৫ সালের ২৩ জুন স্যানিটেশন ব্যবহার উন্নয়নে ১১টি নির্দেশনা জারি করে। শিক্ষার্থীর উপস্থিতি বাড়াতে প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজিং কমিটিকে টয়লেট ব্যবস্থাপনা নিশ্চিতের নির্দেশনাও দেওয়া হয় ওই পরিপত্রে। পরিপত্রে টয়লেটে ঢাকনাযুক্ত প্লাস্টিকের পাত্র রাখা, জেন্ডারবান্ধব স্যানিটেশন নিশ্চিত করা, ছাত্রীদের পিরিয়ডের বিষয়ে একজন শিক্ষককে দায়িত্ব দেওয়াসহ ১১টি নির্দেশনা দেওয়া আছে।

উপজেলার অধিকাংশ বিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীর জন্য একটি টয়লেট আছে, তবে তাও নাজুক! তানোর পৌর সদরের এক সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির ছাত্র আলামিন ইসলাম (১১) জানায়, আমাদের বিদ্যালয়ে টয়লেট খুবই অপরিষ্কার, ব্যবহার করা যায় না। তহমিনা খাতুন (১০) নামে আরেক শিক্ষার্থী বলে, ‘কল থেকে পানি নিয়ে গিয়ে টয়লেটে যেতে হয়। আর সাবানও নাই।’

এ ব্যাপারে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক প্রধান শিক্ষক এই প্রতিবেদককে বলেন, ‘এটা দীর্ঘদিনের সমস্যা। আগে আমাদের শিক্ষকদের টয়লেট ছিল না, এখন হয়ছে। এটাও আস্তে আস্তে হবে।’ গত শনিবার উপজেলার বিভিন্ন প্রাথমিক, কিন্ডার গার্টেন, মাধ্যমিক বিদ্যালয়, মাদরাসা ও কলেজে গিয়ে কথা হয় সংশ্লিষ্ট ও ভুক্তভোগিদের সঙ্গে। টয়লেট তো দূরের কথা, টিউবওয়েলও বিশুদ্ধ পানি ওঠে না অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে। উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা (টিএইচও) ডা. রোজিয়ারা খাতুন বলেন, ‘প্রাইমারি স্কুলে মেয়েদের জন্য পরিষ্কার ও ব্যবহার উপযোগী টয়লেট থাকা জরুরি। ঋতুকালে যেন তারা বিদ্যালয়ে স্যানিটেশনের সুবিধা পায় সে ব্যাপারে সচেতন থাকতে হবে।’

ডা. রোজিয়ারা আরও বলেন, এমনিতেই শিশুদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম। অস্বাস্থ্যকর শৌচাগার ব্যবহার করলে শিশুসহ বিভিন্ন বয়সের ব্যক্তিরা কৃমি, পেটের পীড়া, আমাশয়সহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হতে পারে। উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) জুবাইদা ও মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আমিরুল ইসলাম জানান, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে স্বাস্থ্যসম্মত স্যানিটেশন ব্যবস্থা তৈরির জন্য তালিকা প্রেরণসহ শিক্ষা অধিদপ্তরে তারা যোগাযোগ করছেন। বিষয়টি নিয়ে ঊর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের তৎপরতার কথা জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নাসরিন বানু বলেন, ‘আমরা সবসময়ই তৎপর। সরকারের বড় বাজেট রয়েছে এই খাতে। এ সংক্রান্ত অভিযোগ পেলে আমরা শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের মাধ্যমে সমাধান করার চেষ্টা করি।’

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close