ঝিনাইদহ প্রতিনিধি

  ২১ সেপ্টেম্বর, ২০১৯

ঝিনাইদহ সদর হাসপাতাল

অতিরিক্ত রোগীর চাপে হিমশিম ডাক্তার ও নার্স

ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে রোগীদের অতিরিক্ত চাপে মানবিক বিপর্যয়ের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। ১০০ বেডের হাসপাতালে বুধবার দুপুর পর্যন্ত বিভিন্ন ওয়ার্ডে ভর্তি হয়েছেন ৪২০ জন রোগী। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ রোগীদের না পারছে কোনো বেড দিতে, না পারছে খাবার দিতে। খাবার না পেয়ে রোগীরা প্রায় প্রতিদিন হইচই করছে। এদিকে বহির্বিভাগে রোগীর অতিরিক্ত চাপ। গতকাল বহির্বিভাগে চিকিৎসা নিয়েছেন ১ হাজার ২৫৯ জন। জরুরি বিভাগে চিকিৎসা গ্রহণ করে বাড়ি ফিরে গেছেন ৮৫ জন। হাসপাতালটি সরেজমিন পরিদর্শন করে বুধবার অপ্রতুল চিকিৎসা ব্যবস্থার এই নাজুক চিত্র দেখা গেছে।

হাসপাতালের সাধারণ বেড ও কেবিন ছাড়াও মেঝে, বারান্দা ও সিঁড়িঘরে বিছানা পেতে ছড়িয়ে ছিটিয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন রোগীরা। রোগী আর স্বজনদের আনাগোনায় তিল ধরানোর ঠাঁই নেই হাসপাতালের কোথাও। হাসপাতালটি প্রতিষ্ঠার পর এ ধরনের রোগীর চাপ দেখা যায়নি বলে মনে করছেন চিকিৎসক ও নার্সরা।

তথ্য নিয়ে জানা গেছে, সদর হাসপাতালে সাধারণ বেড রয়েছে ৭০টি। পেয়িংবেড এবং কেবিন রয়েছে আরো ৩০টি। এর মধ্যে বুধবার পর্যন্ত দেখা গেছে ৯টি মহিলা মেডিসিন বেডের বিপরীতে ভর্তি হয়েছেন ৮৭ জন, মহিলা সার্জারি ওয়ার্ডে ৯টি বেডের বিপরীতে ৩৬ জন, ৮টি শিশু বেডের বিপরীতে ১১৯ জন শিশু, পাঁচটি ইওসি বেডের বিপরীতে ৮৪ জন গর্ভবতী নারী, ডায়ারিয়া ছয়টি বেডের বিপরীতে ২০ জন, পুরুষ মেডিসিন ওয়ার্ডে ১৫টি বেডের বিপরীতে ৩৯ জন এবং পুরুষ সার্জারি বিভাগে ১৮টি বেডের বিপরীতে ৭১ জন রোগী ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন।

সদর হাসপাতালের নার্সিং সুপারভাইজার আরতি রায় জানান, নার্স সংকটের মধ্যে এ ধরনের রোগীর চাপে আমরা হাফিয়ে উঠছি। এভাবে সুষ্ঠু সেবা দেওয়া প্রায় অসম্ভব হয়ে উঠেছে। প্রতিদিন শত শত নতুন রোগীর চাপে চিকিৎসক ও নার্সদের মনমানসিকতা স্বাভাবিক থাকছে না বলে নার্সদের অনেকেই মনে করেন। ভারপ্রাপ্ত দিয়ে এই পদ চালানো হচ্ছে। সেবা তত্ত্বাবধায়কের পদ খালি থাকায় নার্সরা ছুটি নিতে এখানে সেখানে দৌড়াদৌড়ি করছেন।

হাসপাতালের পরিসংখ্যান কর্মকর্তা আবদুল কাদের জানান, ৪০ জন চিকিৎকের মধ্যে হাসপাতালে ২২টি পদে ডাক্তার রয়েছেন। এরমধ্যে আটজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক রয়েছেন। বাকি পদ বছরের পর বছর শূন্য থাকছে।

বিষয়টি নিয়ে সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. আইয়ুব আলী জানান, এই পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের একটি মাত্র পথ হচ্ছে শূন্য পদে অতিসত্বর নিয়োগ ও নতুন ভবনের নির্মাণকাজ দ্রুত শেষ করে হস্তান্তর করা। তা না হলে রোগীদের এই চাপ সহ্য করা কঠিন হয়ে পড়ছে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close