শাহজাহান চৌধুরী শাহীন, কক্সবাজার

  ২০ আগস্ট, ২০১৯

আমেজ কাটেনি ঈদের সৈকতে পর্যটকের ভিড়

কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে এখনো কাটেনি ঈদ-উল-ফিতরের আমেজ। হঠাৎ বৃষ্টি হলেও তা উপেক্ষা করে উচ্ছ্বাসে মেতেছেন পর্যটকরা। এখনো পর্যটন শহরে সাড়ে চারলাখ হোটেল-মোটেলে লক্ষাধিক পর্যটক অবস্থান করছেন বলে সমিতি ও প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে।

গত শনিবার রাত থেকেই কক্সবাজারে হালকা বৃষ্টি হয়েছে। রোববার দুপুর থেকেই আকাশ অনেকটা রৌদ্রোজ্জ্বল হতে শুরু করে। গতকাল সোমবার সকালে হালকা বৃষ্টি হলেও আবহওয়া বিরূপ ছিল না। ¯্রােতের তীব্রতা বেশি মনে হলেও সাগর ছিল শান্ত। এজন্য পর্যটকদের মধ্যে তেমন উৎকণ্ঠা দেখা যায়নি। এখনো লাখো পর্যটকের ভীড়। সাগর আর পাহাড়ের সৌন্দর্য উপভোগে মেতেছেন পর্যটকরা। সৈকত ছাড়াও জেলার বিনোদন স্পটগুলোতেও পর্যটকের কমতি নেই। এর প্রভাব পড়েছে হোটেল-মোটেলগুলোতে।

হোটেল মালিক সমিতি সুত্রে জানা গেছে, শহরের প্রায় ৪০০ হোটেল, মোটেল, গেস্ট হাউজের কক্ষ খালি নেই। ঈদের ছুটি সঙ্গে সরকারি ছুটি মিলে দীর্ঘ সময় পাওয়ায় স্বজনদের নিয়ে সৈকতসহ জেলার পর্যটন স্পটগুলোতে ভিড় জমিয়েছেন ভ্রমণ পিপাসুরা।

পর্যটন সংশ্লিষ্টরা জানান, টানা ছুটি মাথায় রেখে আগেই পর্যটকরা হোটেল-মোটেল বুকিং দিয়ে রেখেছিলেন। সকাল থেকেই পর্যটকরা ভিড় করেন সমুদ্র পাড়ে।

চট্টগ্রাম থেকে নববধুকে নিয়ে হানিমুনে এসেছেন মো. আলম। তিনি বলেন, বউকে যখন জিজ্ঞেস করি হানিমুনে কোথায় যাবে? কক্সবাজার থাকতে আর কোথায়! তিনি বলেন, ‘বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকত কক্সবাজারে একদিকে সাগর অপরদিকে পাহাড় এক অপরূপ সৃষ্টি। এছাড়া সমুদ্র ¯œান এবং সি-ফুড বেশি ভাল লাগে।

কক্সবাজার হোটেল-গেস্ট হাউস মালিক সমিতির তথ্যানুযায়ী, কক্সবাজারের প্রায় সাড়ে ৪ শতাধিক হোটেল-মোটেল, রিসোর্ট ও কটেজে রয়েছে। যেখানে লক্ষাধিক পর্যটক অবস্থান করতে পারেন।

পর্যটকরা সমুদ্র সৈকতের পাশাপাশি দরিয়ানগর, হিমছড়ি ঝর্ণা, ইনানীর পাথুরে সৈকত, ডুলাহাজারা সাফারি পার্ক, রামু বৌদ্ধ বিহার, মহেশখালী আদিনাথ মন্দিরসহ জেলার পর্যটন স্পটগুলোতেও ঢুঁ দিচ্ছেন। এদিকে পর্যটকদের সেবা দিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন পর্যটন সংশ্লিষ্টরা।

কক্সবাজার বীচ ম্যানেজমেন্ট কমিটি সূত্র জানায়, আগত পর্যটকদের সেবা নিশ্চিতে সর্তক অবস্থায় দায়িত্ব পালন করছে ট্যুরিস্ট ও জেলা পুলিশ। মোতায়েন করা হয়েছে অতিরিক্ত পুলিশও। পর্যটক হয়রানি রোধে পর্যটন স্পটগুলোকে সিসিটিভি ক্যামরার আওতায় আনা হয়েছে। ট্যুরিস্ট পুলিশের পক্ষ থেকে দ্রুত সাধারণ চিকিৎসা ও খাবার পানির ব্যবস্থা রয়েছে সৈকতে। গোসল করার সময় পর্যটকদের নিরাপত্তায় সর্তক অবস্থায় রয়েছেন লাইফগার্ড কর্মীরা। ঢাকা থেকে আসা পর্যটক মো. মামুন জানান, শুধু শীতকাল নয়, বৃষ্টির মাঝেও যে সৈকতকে এত মহনীয় লাগে তা ঈদের ছুটিতে কক্সবাজার বেড়াতে না আসলে বুধতে পারতাম না। পরিবারসহ খুবই মজা করছি।

কক্সবাজারের জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, পর্যটক হয়রানি বন্ধে হোটেল-মোটেল ও রেঁস্তোরায় মূল্য তালিকা টাঙ্গানোর নির্দেশনা আগেই দেয়াছিল। সমুদ্র সৈকতের লাবনী, সুগন্ধা, কলাতলীসহ ১১টি পয়েন্টে স্থাপন করা হয়েছে তথ্য কেন্দ্র (ইনবক্স)। পাশাপাশি দেওয়া হয়েছে একটি হটলাইন না¤া^র (০১৭৩৩৩৭৩১২৭)। যে কোনো অভিযোগ এখানে করতে পারবে পর্যটকরা। হটলাইনের সেবা নিয়ে বেশ কয়েকজন পর্যটক হয়রানির বিচারও পেয়েছেন। জরিমানা করা হয়েছে কয়েকটি রেস্তোরা ও হোটেলকে।

ট্যুরিস্ট পুলিশ কক্সবাজার জোনের পুলিশ সুপার মো. জিল্লুর রহমান বলেন, ট্যুরিস্ট পুলিশের বিশেষ রেসকিউ টিম, ইভটিজিং কট্রোল টিম, ড্রিংকিং জোন, দ্রুত চিকিৎসাসহ নানা পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে পর্যটকদের নিরাপত্তায়। সৈকতে বীচ বাইক নিয়ে টহল অব্যাহত রেখেছে ট্যুরিস্ট পুলিশ। কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মো. কামাল হোসেন বলেন, পর্যটক হয়রানি বন্ধে মাঠে রয়েছে জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে একাধিক ভ্রাম্যমাণ আদালত।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close