দিলরুবা খাতুন, মেহেরপুর

  ২০ জুলাই, ২০১৯

মেহেরপুর বক্ষব্যাধি ক্লিনিক

চিকিৎসক সংকটে রোগীর ব্যবস্থাপত্র দেন ফার্মাসিস্টরা

মেহেরপুরের বক্ষব্যাধি ক্লিনিকটিতে দীর্ঘদিন থেকে গুরুত্বপূর্ণ পদে লোকবল ছাড়াই চলছে সেবা কর্যক্রম। কনসালট্যান্ট ও মেডিকেল অফিসার পদ বছরের পর বছর শূন্য থাকায় ক্লিনিকটিতে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীরা প্রতিনিয়িত সেবা বঞ্চিত হচ্ছেন। চিকিৎসকের অভাবে সেবা নিতে এসে অনেকে হয়রানির শিকার হচ্ছেন বলে অভিযোগ রোগীদের। তবে রোগীদের একমাত্র ভরসা ক্লিনিকটির ফার্মাসিস্ট। তিনিই এখানকার কনসালট্যান্ট ও মেডিকেল অফিসার।

৬০ বছরের পুরোনো এই হাসপাতালে বর্তমানে ১৬ চিকিৎসক ও কর্মচারী পদের বিপরীতে আছেন মাত্র সাতজন। এখানে কর্মরত আছেন এমটি রেডিওগ্রাফি, ফার্মাসিস্ট, অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর, আয়া ও পরিচ্ছন্নকর্মী। আউটসোর্সিং কর্মচারী দুজন। মেডিকেল অফিসার পদটি শূন্য আছে ২০১৪ সাল থেকে। হাসপাতালের এমটি রেডিওগ্রাফি মো. মোমিনুল হক একই সঙ্গে জিন এক্সপার্ট ও ল্যাবরেটরির দায়িত্ব পালন করছেন। সর্বশেষ ২০১৬ সালে বদলি হন জুনিয়র কনসালট্যান্ট ডা. এ বি এম ফারহান ইমতিয়াজ। এরপর থেকে মেহেরপুর সদর হাসপাতালের ইউ এইচ অ্যান্ড এফ পি ও (উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা) ডা. অলোক কুমার দাস পদটিতে ভারপ্রাপ্ত হিসেবে অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করছেন। জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয়ের মেডিকেল অফিসার এ কে এম ফয়সাল কবির অতিরিক্ত দায়িত্ব হিসেবে এই বক্ষব্যাধি হাসপাতালে আছেন। জেনারেল হাসপাতালের চিকিৎসক সংকটে তিনি এখানে সময় দিতে পারেন না। ওই দুই কর্মকর্তার কক্ষ দুটি প্রায়ই তালাবদ্ধ থাকে। সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা অফিসের ক্যাশিয়ার মনসুর আহমেদ খানকে ধার করে এনে তিন বছর ধরে অফিস সহকারীর দায়িত্ব পালন করানো হচ্ছে। ফার্মাসিস্ট আবদুল মতিন তিনিই রোগীদের সব ধরনের চিকিৎসা ও ব্যবস্থাপত্র দেন।

সরেজমিন গেলে ক্লিনিক চত্বরে কথা হয় সদর উপজেলার মোনাখালী গ্রামের নার্গিস সুলতানার সঙ্গে। তিনি জানান, এখানে চিকিৎসক না থাকায় ফিরে যাচ্ছেন। পাশের জেলা চুয়াডাঙ্গা বক্ষব্যাধি ক্লিনিকে অথবা কুষ্টিয়া বক্ষব্যাধি ক্লিনিকে চিকিৎসার জন্য যাবেন।

বক্ষব্যাধি ক্লিনিকের অফিস সহকারী মুনছুর খান বলেন, লোকবল সংকটে আমাদের ফার্মাসিস্ট আবদুল মতিন চিকিৎসা দিয়ে হাসপাতালটি টিকিয়ে রেখেছেন।

বক্ষব্যাধি ক্লিনিকের ভারপ্রাপ্ত জুনিয়র কনসালট্যান্ট ডা. অলোক কুমার দাস জানান, নিয়মিত চিকিৎসক ছাড়া চিকিৎসাসেবা দেওয়া সম্ভব না। বিষয়টি নিয়ে ওপর মহলে জানিয়েও শূন্যপদ পূরণের আশ্বাসটুকুও পাওয়া যায়নি।

চিকিৎসকসহ জনবল সংকটের কথা স্বীকার করেছেন খুলনা জাতীয় যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচির বিভাগীয় কনসালট্যান্ট ডা. আনোয়ারুল আজাদ। তিনি এ সংকট নিরসনে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে লিখিতভাবে জানিয়েছেন বলে জানান।

জেলা সিভিল সার্জন ডা. শামীম আরা নাজনীন ক্লিনিকের ফার্মাসিস্ট রোগীদের চিকিৎসা ও ব্যবস্থাপত্র দেওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করেন। তিনি আশা প্রকাশ করেন শিগগিরই শূন্যপদ পূরণ হবে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close