রাকিবুল ইসলাম রাকিব, গৌরীপুর (ময়মনসিংহ)

  ১২ জুন, ২০১৯

সাঁকো ভেঙে পড়ায় দুর্ভোগে অর্ধ লাখ মানুষ

ময়মনসিংহের গৌরীপুরে ডয়কা নদীর ওপর তৈরি তিনশতাধিক ফুট দীর্ঘ বাঁশের সাঁকো ভেঙে পড়ায় দুর্ভোগে পোহাচ্ছে দুই উপজেলার ১৫ গ্রামবাসী। জেলার গৌরীপুর ও ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার সংযোগ স্থল সহনাটি ইউনিয়নের টেঙ্গাপাড়া গ্রামে অবস্থিত এই সাঁকো দিয়ে অর্ধলক্ষ মানুষ যাতায়াত। ফলে নতুন করে সাঁকো নির্মিত না হওয়ায় প্রতিদিন শত শত মানুষ নৌকায় ঝুঁকি নিয়ে নদী পার হচ্ছে। তবে ডয়কা নদীর ওপর সেতু না থাকার বিষয়টি জানেন না (এলজিইডি) উপজেলা প্রকৌশলী।

টেঙ্গাপাড়া গ্রামের বাসিন্দা এখলাস উদ্দিন বলেন, বর্ষায় নদীতে নৌকা চলাচল বন্ধ থাকে। তখন গ্রামবাসীকে বিকল্প পথে ১২ কিলোমিটার পাড়ি দিয়ে নদীর ওপাড়ে যেতে হয়। সাঁকোটি নতুন করে তৈরি করলে প্রায় ২ লাখ টাকা প্রয়োজন। কিন্তু আমরা নদীতে বাঁশের সাঁকো চাই না, পাকা সেতু চাই।

স্থানীয় ও গ্রামবাসী সূত্রে জানা গেছে, ডয়কা নদীর পূর্ব পাড়ে গৌরীপুরের সহনাটি ইউনিয়নের টেঙ্গাপাড়া গ্রাম, পশ্চিমে ঈশ্বরগঞ্জের সোহাগী ইউনিয়নের মাইজহাটি গ্রাম। নদীতে সেতু না থাকায় স্বাধীনতার পর থেকেই দুই উপজেলার টেঙ্গাপাড়া, পল্টিপাড়া, সানিয়াপাড়া, শাহবাজপুর, ধোপাজাঙ্গালিয়া, বড়ইবাড়ি, মাসকান্দা, মাইজহাটি, জিগাতলা, সোহাগী, মমরুজপুরসহ ১৫ গ্রামবাসী ঝুঁকি নিয়ে ডিঙি নৌকায় নদী পার হন।

২০১৭ সালে সহনাটি ইউনিয়নে গ্রামবাসী চাঁদা তুলে নদীর ওপর তিনশতাধিক ফুট দীর্ঘ বাঁশের সাঁকো তৈরি করেন। এরপর সহনাটি ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল মান্নান সাঁকোটি চলাচলের উপযোগী করার জন্য টেঙ্গাপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় পর্যন্ত ১ কিলোমিটার সংযোগ সড়ক করে দেন। কিন্তু চলতি বছরের শুরুতেই সাঁকোটির বিভিন্ন অংশ নদীতে ভেঙে পড়ে। মঙ্গলবার সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ডয়কার ওপর তৈরি সাঁকোটি রোদ-বৃষ্টিতে ভিজে অত্যন্ত দুর্বল হয়ে গেছে। ভেঙে পড়ছে সাঁকোর খুঁটি ও পাঠাতনের বাঁশ। গ্রামবাসী ও শিক্ষার্থীরা কাঁদা পানি মাড়িয়ে ডিঙি নৌকায় নদী পার হচ্ছেন।

ঈশ্বরগঞ্জ ডিগ্রি (অনার্স) কলেজের উচ্চ মাধ্যমিক দি¦তীয় বর্ষের শিক্ষার্থী কায়েস আহমেদ বলেন, সহনাটি ইউনিয়নের প্রায় অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থী প্রতিদিন ডিঙি নৌকায় নদী পার হয়ে ঈশ্বরগঞ্জ ডিগ্রী (অর্নাস) কলেজ, সোহাগী উচ্চ বিদ্যালয় ও স্বপ্নসিড়ি গার্ল স্কুলে এসে পড়াশোনা করেন। কিন্তু নদীতে সেতু না থাকা ও বর্ষাকালে নৌকা চলাচল বন্ধ থাকায় তাদের দুর্ভোগ পোহাতে হয়।

সহনাটি ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল মান্নান বলেন, বাঁশের সাঁকোটি ভেঙে পড়ায় দুই উপজেলার ১৫ গ্রামের মানুষ ঝুঁকি নিয়ে নৌকায় ডয়কা নদী পাড় হচ্ছে। উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তাকে সরজমিনে এনে সেতু না থাকার দুর্ভোগের বিষয়টি দেখিয়েছি। কিন্তু এখন পর্যন্ত কেউ উদ্যোগ নেয়নি।

জানতে চাইলে উপজেলা প্রকৌশলী (এলজিইডি) আবু সালেহ মো. ওয়াহিদুল হক বলেন, ডয়কা নদীর ওপর সেতু না থাকার বিষয়টি আমার জানা নেই। স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান সেতু নির্মাণের সার্বিক বিষয় নিয়ে আমাদের সাথে যোগাযোগ করলে সেতু নির্মাণের বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানাবো।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close