লালমনিরহাট প্রতিনিধি

  ২৫ মে, ২০১৯

লালমনিরহাটে ধরলার তীররক্ষা বাঁধ

নদীর কিনার খুঁড়ে বাঁধ নির্মাণ, ভাঙনের শঙ্কা

বন্যা নিয়ন্ত্রণে লালমনিরহাটের ধরলা নদীর ডান তীর রক্ষা বাঁধ নির্মাণ করা হচ্ছে। কিন্তু খর¯্রােত ধরলার পাড়ে বোমা মেশিন বসিয়ে বালু উত্তোলন করে এ বাঁধ নির্মাণ করায় আসন্ন বন্যায় নদী ভাঙনের আশংকা করছেন এলাকাবাসী।

জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সূত্রে জানা গেছে, গত দুই বছরের ভয়াবহ বন্যা আর নদী ভাঙনের কারনে সদর উপজেলার মোগলহাট ইউনিয়নের ইটাপোতা বনগ্রামের বিস্তৃীন এলাকা ধরলায় বিলিন হয়ে যায়। ফসলহানীসহ গৃহহীন হয়ে পড়েন এ এলাকার অসংখ্য মানুষ। ধরলা নদীর কড়াল গ্রাস থেকে জনপদ রক্ষায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের অধিনে কুড়িগ্রাম সেচ ও বন্যা নিয়ন্ত্রন প্রকল্পের আওতায় একটি প্রকল্প হাতে নেয় সরকার। এ প্রকল্পের মাধ্যমে ইটাপোতা ও বনগ্রাম এলাকায় ধরলার ডান তীরে এক হাজার ৩৭৪ মিটার দীর্ঘ একটি বাঁধ নির্মাণে প্রকল্পিত ব্যায় ধরা হয় প্রায় ৩৮.৭৪ লাখ টাকা। এ বাঁধের কিছু অংশ মাটির কাজ হলেও বাকীটুকু অংশে জিও ব্যাগ দিয়ে বাঁধটি নির্মাণের লক্ষ্যে কাজ নেন বেলাল কনস্ট্রাশন নামে একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান।

গত ২০১৮ সালের ২৮ জানুয়ারী মাসে কাজ শুরু হলেও বিভিন্ন অজুহাতে দুই দফায় সময় বাড়িয়ে চলতি মাসের ৩১ তারিখে শেষ করার কথা রয়েছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত মাত্র ৭০ শতাংশ কাজ শেষ করতে পেরেছেন ঠিকাদার।

এ দিকে প্রকল্পের আওতায় ওই বাঁধ থেকে ওয়াব্দা বাজার পর্যন্ত বন্যা নিয়ন্ত্রন বাঁধটি প্রসস্থ করনে মাটি ভরাটের কাজ দেয়া হয়। সেখানে বাঁধটি প্রস্থ্যে ৪.৩ মিটার দেয়ার কথা থাকলেও বাস্তবে তা করা হচ্ছে না বলে স্থানীয়দের অভিযোগ। এ ক্ষেত্রের পুর্বের বাঁধটির উপর কিছু বালু ফেলে দায়সারা গোছের কাজ করা হচ্ছে। এ জন্য নদীর কিনারেই বসানো হয়েছে দুইটি বোমা মেশিন। ফলে বর্ষা শুরু হলেই আবারো ভয়াবহ ভাঙনের আতংকে রয়েছেন নদীর তীরবর্তি হাজার হাজার মানুষ।

ধরলা পাড়ের একাধিকবার ক্ষতিগ্রস্থ নাজিম উদ্দিন বলেন, এই ধরলা নদী এখন পানি উন্নয়ন বোর্ডের টাকার খনি। কাজের নামে সরকারের কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। কাজের কাজ কিছুই হচ্ছে না। মাঝ খানে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছি আমরা। বার বার বাড়ি ঘর ভেঙে নিয়ে যাচ্ছি, আবার পানি সরে গেলে ফিরে আসছি। ধরলা পাড়ের বাঁধ নির্মাণের নামে এই কাজকে তিনি শুভঙ্করের ফাঁকি বলেও দাবি করেন।

এ কাজের তদারকি কর্মকর্তা জেলা পাউবোর উপ-সহকারী প্রকৌশলী কামরুল ইসলাম জানান, নদীর কিনার থেকে বোমা মেশিন সড়িয়ে নদীর মধ্যবর্তি এলাকায় বসাতে ঠিকাদারকে বলা হয়েছে। তাকে নিষেধ করার পরও ঠিকাদার এমনটি করেছে। এর পরেও তিনি মেশিন না সরালে কাজ বন্ধ করে দেয়া হবে।

জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী বজলে রহমান জানান, মাটি না পাওয়ার কারনে পুরাতন বাঁধটির মাঝের অংশ কেটে নিয়ে বালু ফেলা হচ্ছে এবং কেটে নেয়া মাটি পরবর্তিতে বাঁধের উপরে দেয়া হবে। নদীর কিনারে বোমা মেশিন বসানোর বিষয়ে জানতে চাইলে এ বিষয়ে তার জানা নেই বলে জানান। তবে বোমা মেশিন বসানোর সত্যতা পাওয়া গেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close