মো. রাজু খান, ঝালকাঠি

  ১৯ মে, ২০১৯

ঝালকাঠিতে ব্যস্ত সেমাই কারখানার শ্রমিকরা

নদী-বন্দর ব্যবসায়িক কেন্দ্র হিসেবে একসময়ের দ্বিতীয় কলকাতাখ্যাত ঝালকাঠিতে রয়েছে বিভিন্ন কারখানা ও শিল্পপ্রতিষ্ঠান। সেই সাথে মৌসূমী ব্যবসা হিসেবে রয়েছে কয়েকটি সেমাই কারখানাও। ঈদ অথবা মেহমানদের আপ্যায়নে সেমাই’র জুড়ি নেই। মেহমানদারীর জন্য যতগুলো উপাদানই থাকুক, সেমাই তার মধ্যে একটি অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ উপাদান।

বিশেষ করে ঈদ উৎসবের দিন সকালে প্রতি ঘরে ঘরেই সেমাই তৈরী করা হয় নিজেদের ও আগন্তুক মেহমানদের আপ্যায়নের জন্য। ঈদের দিনে সকালের সেমাইটা কমবেশি সবারই পছন্দ। জেলাবাসীর চাহিদা পুরণের জন্য স্থানীয়ভাবে ৬টি সেমাই কারখানায় সেমাই উৎপাদন করা হয়েছে। এপ্রিল থেকেই উৎপাদন কাজ শুরু হয়ে এখন প্রায় শেষ পর্যায়ে। কারখানা মালিকরা সেমাই সরবরাহের কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন। দূরত্ব অনুযায়ী ভ্যান, টমটম, মাহিন্দ্র, অটোরিক্সা ও পিকআপ ভ্যানে লোড করে পাঠানো হচ্ছে জেলার বিভিন্ন প্রান্তসহ পার্শ্ববর্তি সীমান্ত উপজেলার গুলোর বাজারে। মক্কা সেমাই, মদিনা সেমাই, জেদ্দা সেমাই, মিনারসহ মোট ৬টি কারখানায় লাচ্ছা ও শলা সেমাই তৈরী করা হচ্ছে।

ঝালকাঠি পশ্চিম চাঁদকাঠি মক্কা সেমাই কারখানার মালিক আইউব আলী খান জানান, আমার সেমাই কারখানায় উৎপাদন করা হয় লাচ্ছা ও শলা সেমাই। কোন রকম কেমিক্যাল বা রং ছাড়াই প্রক্রিয়াজাতকরণের মাধ্যমে উৎপাদন করা হয় সেমাই। পরিবেশও পরিস্কার পরিচ্ছন্ন রাখা হচ্ছে। কারণ হিসেবে তিনি জানান, আমাদের এখানে প্রশাসন, গোয়েন্দা, সাংবাদিক ও ভোক্তা অধিকারের কর্মকর্তারা আসেন। কোন রকম অসঙ্গতি পেলে মোটা অংকের জরিমানা দিতে দিতেই কারখানার ব্যবসাসহ পুজিতেও ঘাটতি পড়বে। এজন্য উন্নত মানের সামগ্রী দিয়ে অল্প ব্যবসায় স্বাস্থ্য সম্মত সেমাই করা হয়।

অভিযোগ করে তিনি জানান, অনেকে বাসা বাড়িতে একটি চুল্লি বানিয়ে ঈদে ফায়দা লোটার জন্য খোলা সেমাই তৈরী করেন। যতোজারের রং মিশ্রণের ফলে নজরকাড়া হয়ে ওঠে। যা একদমই মানহীন এবং স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকারক। তারা আমাদের মান ক্ষুন্ন করে বদনাম ছড়িয়ে চাহিদা কমিয়ে দিচ্ছে।

সেমাই তৈরীর মিস্ত্রি (কারিগর) মো. দুলাল হোসেন জানান, ভোলা থেকে ২ মাসের জন্য ঝালকাঠিতে কাজে এসেছি। আমরা ১৫জন শ্রমিক কাজ করছি। আমাদের কারো কোন সংক্রামক ব্যধি নেই। কোন রং, ক্যামিকেল ছাড়াই শুধু ময়দা আর পানি দিয়ে শলা সেমাই এবং শলা সেমাই কাঁচা থাকা অবস্থায় তেলে ভেজে লাচ্ছা সেমাই তৈরী করা হয়।

কারখানা ম্যানেজার সবুজ খান জানান, আমাদের সেমাই ঝালকাঠি শহর ও জেলার বিভিন্ন প্রান্তে অবস্থিত বাজারে সরবরাহ করা হয়। এছাড়াও জেলার সীমান্তবর্তি উপজেলা পিরোজপুরের কাউখালী, ভান্ডারিয়া, বরগুনার বামনা, বরিশালের উজিরপুর, বানারিপাড়া ও ভোলার মোকামে বিক্রি করা হয়।

ঝালকাঠি ভোক্তা অধিকারের সহকারী পরিচালক সাফিয়া সুলতানা জানান, এ জেলার সেমাই কারখানাসহ বিভিন্ন খাদ্যপণ্য উৎপাদিত কারখানাগুলো সার্বক্ষনিক মনিটরিং করছি। প্রয়োজনানুযায়ী আইনানুগ ব্যবস্থাও গ্রহণ করা হচ্ছে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close