মুকুল মাসুদ, গাইবান্ধা

  ১৫ মে, ২০১৯

গাইবান্ধা শহরের টেলিফোন যোগাযোগ অবস্থা বেহাল

গাইবান্ধা শহরের বিটিসিএল এক্সচেঞ্জটি ৩ দিন ধরে বিকল। এদিকে এই এক্সচেঞ্জের আওতায় ১০ ধরে বন্ধ রয়েছে এনডাব্লিউডি যোগাযোগ ব্যবস্থা। ফলে জেলা শহরের ৭৩২টি টেলিফোনের লোকাল কল ও এনডাব্লিউডি বন্ধ হয়েছে। টেলিফোন গ্রাহকরা মোবাইলে এবং দেশের বাইরের জেলাগুলোতে ও বিদেশে কোন টেলিফোন করতে পারছে না এবং কোন টেলিফোনও আসছে না। বিশেষ করে সরকারি অফিস আদালতগুলোতে যেহেতু এখনও টেলিফোন চালু রয়েছে, সেজন্য তারাই বিপাকে পড়েছে বেশি। তবে এ ব্যাপারে কবে নাগাদ একচেঞ্জ ঠিক হবে তা নিশ্চিত করে বলতে পারছে না বিটিসিএল কর্তৃপক্ষ।

গত ১২ মে রোববার সকাল ৯টা ১১ মিনিট থেকে হঠাৎ করেই জেলা শহরের বিটিসিএল এক্সচেঞ্জটি বিকল হয়ে যায়। তাছাড়া গত ৫ মে থেকে এই টেলিফোন এক্সচেঞ্জের আওতায় এনডাব্লিউডি যোগাযোগ ব্যবস্থা বন্ধ হয়ে গেছে। গাইবান্ধা জেলায় সরকারি অফিস আদালতের ৩০০টি টেলিফোন এবং বেসরকারি গ্রাহকদের ৪৩২টি টেলিফোন বর্তমানে চালু রয়েছে।

মোবাইল ফোন ব্যবহারের ব্যাপকতায় টেলিফোনের ব্যবহার কমে যাওয়ায় বিটিসিলের গ্রাহক সংখ্যা ব্যাপকভাবে হ্রাস পেয়েছে। তদুপরি টেলিফোন এক্সচেঞ্জের আওতায় জনবল সংকটের কারণে সঠিক সার্ভিস গ্রাহকরা পাচ্ছে না। তদুপরি ঘন ঘন বিভ্রাট, নিয়মিত টেলিফোন বিল না পাওয়া, অতিরিক্ত বিল করা, লাইনের সমস্যা দেখা দিলে জরুরীভাবে মেরামত না করাসহ নানা সমস্যা সংকটের কারণে টেলিফোন থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে গ্রাহকরা।

গাইবান্ধা বিটিসিএল কার্যালয় সূত্র জানায়, গাইবান্ধার তৎকালীন টিএন্ডটির এনালগ টেলিফোন এক্সচেঞ্জটি ২০০২ সালে এনালগ থেকে ডিজিটালে রূপান্তর করে শহরের পূর্বপাড়া হতে বাংলাবাজার এলাকায় স্থানান্তর করা হয়। ২০০২ সালের ৫ অক্টোবর ডিজিটাল টেলিফোন এক্সচেঞ্জটি উদ্বোধন করা হয়। এই এক্সচেঞ্জের ক্ষমতা ২ হাজার ৩০০ হলেও এখন সংযোগ রয়েছে মাত্র ৭৩২টি। পরবর্তীতে এক্সচেঞ্জটি বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন্স কোম্পানী লিমিটেডে নাম করণ করা হলেও সেবার মান তো বাড়েইনি, বরং কমেছে। টেলিফোন এক্সচেঞ্জ ভবনের এখন জরাজীর্ণ অবস্থা। গ্রাহকরা প্রয়োজনে এক্সচেঞ্জ ভবনে গিয়ে দায়িত্বপ্রাপ্ত কোন লোককে না পেয়ে চরম বিপাকে পড়ে। বিশেষ করে টেলিফোন খারাপ হলে এক্সচেঞ্জে অভিযোগ দিয়েও কোন সুফল পাওয়া যায় না। বিশেষ করে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা অভিযোগের নিষ্পত্তির ব্যাপারটি সবসময় এড়িয়ে যান।

গাইবান্ধা বিটিসিএল (বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন্স কোম্পানী লি.) এক্সচেঞ্জের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রকৌশলী, সহকারি ম্যানেজারসহ অন্যান্য কর্মকর্তা-কর্মচারিদের গাফিলতি অদক্ষতা এবং অবহেলার কারণে এই টেলিফোন এক্সচেঞ্জটির এখন বেহাল অবস্থা। একই কারণে বিটিসিএলএর টেলিফোন রেট অনেক কম হওয়া সত্ত্বেও নতুন করে টেলিফোন সংযোগ নিতে কেউ আগ্রহী হচ্ছে না। তবে গাইবান্ধা বিটিসিএল এক্সচেঞ্জের সহকারি ম্যানেজার জামরুল ইসলামের সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি নানা ব্যস্ততার অজুহাত দেখিয়ে টেলিফোন কেটে দেন। পরবর্তীতে বিভিন্ন মোবাইল ফোন থেকে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।

এদিকে টেলিফোন এক্সচেঞ্জটি বন্ধ হয়ে গেলেও টেলিফোন এক্সচেঞ্জের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা কেউই সেটি স্বীকার করতে চান না। টেলিফোন ফোন খারাপ এ অভিযোগ জানালেও তারা সাময়িক বিকলের কথা বলেন এবং শীঘ্রই টেলিফোন লাইন ঠিক হয়ে যাবে বলে দায় এড়িয়ে যান।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close