তুহিন আহমদ, মহানগর (সিলেট)

  ১৩ মে, ২০১৯

অনন্ত বিজয় দাশ হত্যা

চার বছর পেরোলেও শেষ হয়নি বিচার

বিজ্ঞান লেখক ও গণজাগরণ মঞ্চের সংগঠক অনন্ত বিজয় দাশ হত্যার চার বছর পেরোলেও এখনো শেষ হয়নি মামলার বিচার কাজ। গতকাল রোববার অনন্ত হত্যার চার বছর পূর্ণ হয়েছে। চলতি মাসের গত সপ্তাহেই মাত্র শুরু হয়েছে হত্যাকা-ের সাক্ষগ্রহণ।

এদিকে মামলার অভিযোগপত্র দাখিল করা হলেও এখন পর্যন্ত গ্রেফতার হয়নি সব আসামি। মামলার এই দীর্ঘসূত্রিতার কারণে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে অনন্তের স্বজন ও সহযোদ্ধাদের মনে। তারা মনে করছেন, চার বছর পর সাক্ষগ্রহণ শুরু এটা আসলেই হতাশাজনক। মামলার অভিযোগপত্র দাখিল দেরিতে হওয়ায় বিচার প্রক্রিয়াতেও দেরি হয়েছে এমনটা বলছেন রাষ্ট্রপক্ষের কৌশুলী।

২০১৫ সালের ১২ মে কর্মক্ষেত্রে যাওয়ার পথে সিলেট নগরের সুবিদ বাজারে নিজ বাসার সামনে কুপিয়ে হত্যা করা হয় অনন্তকে। এই হত্যাকা-ের পর তার বড় ভাই রতেœশ্বর দাশ বাদী হয়ে নগরের বিমানবন্দর থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। প্রথমে এই মামলার তদন্তভার পুলিশের হাতে থাকলেও পরে মামলাটির তদন্তভার সিআইডির অর্গানাইজড ক্রাইম বিভাগকে দেওয়া হয়। ২০১৭ সালের ১৮ জানুয়ারি ৬ জনকে অভিযুক্ত করে এই মামলার অভিযোগপত্র দেয় সিআইডি।

২০১৮ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি মাসে এই মামলার অভিযোগ গঠন করা হয়। সর্বশেষ গত ৭ মে চাঞ্চল্যকর এই মামলায় সাক্ষ্য দেন অনন্তর বড় ভাই ও মামলার বাদী রতেœশ্বর দাস। তবে এদিন আসামিরা উপস্থিত না থাকায় তাদের জেরা করা হয়নি। আগামী ৯ জুন সাক্ষ্য গ্রহণের পরবর্তী তারিখ নির্ধারণ করেছে আদালত।

এদিকে, অভিযুক্তদের মধ্যে মান্নান ভুঁইয়া আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। পরে কারাগারে থাকা অবস্থায় তিনি মারা যান। অপর আসামিদের মধ্যে আবুল খায়ের রশিদ আহমদ ও সাফিউর রহমান ফারাবী বর্তমানে কারাগারে রয়েছেন। আর আবুল হোসেন, ফয়সল আহমদ, হারুণ আল রশিদ এখনও পলাতক রয়েছেন।

দীর্ঘ চার বছর পর এ মামলায় এখন সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করছেন গণজাগরণ মঞ্চ সিলেটের মুখপাত্র দেবাশীষ দেবু। তিনি প্রতিদিনের সংবাদকে বলেন, ‘প্রথমত সময়ের দিকে তাকালে সহজেই বোঝা যাচ্ছে মামলার কার্যক্রমে ধীরগতি, তদন্তকাজে নেওয়া হয়েছে প্রচুর সময়। হত্যাকা-ের প্রথম দিক থেকেই সরকার পর্যায় থেকে এই বিষয়ে বলা হয়েছে, তবু এটাকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার চেষ্টা করা হয়েছে। সপ্তাহখানে আগে মাত্র সাক্ষগ্রহণ শুরু হয়েছে। এতে আশাবাদী হওয়ার মতো কিছুই না। চারবছর পর এটা হওয়া হতাশাজনক। আমরা চাই বিশেষ ট্রাইব্যুনালের মাধ্যমে অনন্ত বিজয় হত্যার বিচার হোক।’

অনন্তর ভগ্নিপতি নাগরিক মৈত্রী সিলেটের সমন্বয়ক সমর বিজয় সী শেখর বলেন, ‘চার বছরে মামলার বিচার কার্য এখন শুরু হয়েছে মাত্র। এদিকে অনন্দের মা খুব অসুস্থ্য। তার মা চান জীবিত অবস্থায় ছেলে হত্যাকারীদের শাস্তি দেখে যাওয়া। তবে চার বছর পর যেহেতু বিচার কার্য শুরু হয়েছে এখন দ্রুত যেন এর সুষ্ঠু বিচার হয় এটাই প্রত্যাশা।’

অভিযোগপত্র গঠন হতে বিলম্ব হওয়ার কারণে মামলার বিচার প্রক্রিয়া বিলম্বের কারণ বলে জানিয়েছেন সিলেট জেলা ও দায়রা জজ আদালতের রাষ্ট্রপক্ষের কৌশুলী (পিপি) মিসবাহ উদ্দিন সিরাজ। তিনি বলেন, ‘যেহেতু সাক্ষগ্রহণ শুরু হয়েছে তাই দ্রুত বিচারকার্য শেষ হবে।’

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close