মিনহাজ মির্জা, গোয়াইনঘাট (সিলেট)

  ২০ এপ্রিল, ২০১৯

চা বিক্রি করেই জীবন পার মহাপ্রভুর

মহাপ্রভু দাশ। বয়স ৮০ বছরের ঊর্ধ্বে। জীবনের এই শেষ সময়ে এসেও চা বিক্রি করেই জীবন চলে তার। বাড়ি সুনামগঞ্জের শাল্লা থানার হবিবপুর গ্রামে। এক ছেলে নিয়ে ছোট্ট একটি সংসার। পরিবারে মাঝে এক মেয়ে থাকলেও বিয়ে দিয়ে শ্বশুরবাড়িতে পাঠিয়েছেন অনেক আগেই। পৈতৃক বাড়ি সুনামগঞ্জ হলেও কর্মের জন্য জাফলংয়ের একটি ভাড়া কলোনিতে ২০ বছর ধরে বসবাস করে আসছেন। কখনো প্রখর রোদ, আবার কখনো বৃষ্টিতে ভিজে জাফলংয়ের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে ছুটে বেড়াচ্ছেন চায়ের ভার নিয়ে। চোখে-মুখে বইছে অভাব-অনটনের ছাপ। দিনশেষে ২০০ থেকে ২৫০ টাকা আয় হয়। এতেই কোনো মতে চলে সংসার। এর আগে তিনি পর্যটন কেন্দ্র বিছনাকান্দিতে হকারি করে এই চা বিক্রি করছিলেন। ছেলে কৃষি কাজ করায় বর্তমানে তার পরিবারটি এখন অনেকটাই সচ্ছল। অনেক আগে থেকেই হকার করে চা বিক্রি করায় পেশাটাকেই মায়া করে ছাড়তে পারছেন না বলে জানান তিনি। রাস্তার ফুটপাতে তার বানানো চা খেয়ে অনেকেই তৃপ্তি পান।

শংকর সরকার নামের একজন চা পানকালে জানান, মহাপ্রভু কাকা অনেক আগে থেকেই এভাবে চা বিক্রি করে আসছেন। আমি তার বানানো চা নিয়মিত পান করি। মাঝে মাঝে অবাক হই এই বয়সে এসে তিনি হেঁটে হেঁটে চা বিক্রি করছেন। প্রতিদিন তার চায়ের প্রতি আমার আলাদা একটা নেশা থাকে।

তার আরেক নিয়মিত কাস্টমার মিন্টুু বিশ^াস জানান, এই বৃদ্ধ লোকটিকে দেখলে অনেক মায়া লাগে। তার বানানো চা আমি সব সময় খাই। সকালে এবং বিকেলে দুই কাপ চা পান করে থাকি। অনেক ভালো করে চা বানান তিনি।

চা বিক্রেতা মহাপ্রভু দাশ বলেন, প্রায় ৫ বছর ধরে হকারে করে জাফলংয়ে নিয়মিত চা বিক্রি করে আসছি। এই চা বিক্রি করেই প্রতিদিন ৩০০-৩৫০ টাকা আয় হয়। তিনি বলেন, আমি বুড়ো মানুষ, এই বয়সে পাথর কাজও করতে পারি না। এই ব্যবসা করতে আমার কোন কষ্ট হয় না। তাছাড়াও হকারে করে চা বিক্রি করতে তেমন কোন পুঁজি লাগে না। কোন ভালো দোকান নিলে অনেক টাকার প্রয়োজন। তাই এমনিতেই সুখে আছি। মানুষ আমাকে ভালোবেসে এক কাপ চা খেয়ে ৫ টাকা দেয়। এভাবেই কোনো রকমে সংসার চলে আমার। তাছাড়া আমার ছেলেও এখন কৃষি কাজ করায় সংসারটি এখন কিছুটা সচ্ছল।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close