কে এম রুবেল, ফরিদপুর

  ১৯ এপ্রিল, ২০১৯

১৫ কিমি খাল দখল করে ভাটা মালিকদের রাস্তা

ফরিদপুর শহররক্ষা বাঁধের টেপাখোলা সøুইচ গেট থেকে রাজবাড়ী জেলার গোয়ালন্দ মহাসড়ক পর্যন্ত ১৫ কিলোমিটার খাল দখল করেছেন ইটভাটাসহ বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান। এতে অর্ধশতাধিক বাঁধ দিয়েছেন ৩৭ ভাটার ২৫ মালিক। ফলে খালটিতে আসা পানিপ্রবাহ বন্ধ হয়ে ছোট সরু নালায় পরিণত হয়েছে।

জেলা সদর উপজেলার ডিগ্রীরচর ইউনিয়নের মনোডাঙ্গী এলাকায় পদ্মার উৎস মুখে পানি আসার পথে বাঁধ নির্মাণ করায় পানিশূন্য হয়ে পড়েছে ১৫ কিলোমিটারের বেড়িবাঁধ খালটি। এতে খাল পাড়ের কয়েক হাজার হেক্টর জমিতে কৃষি কাজের সেচ ব্যবস্থায় ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে কৃষক।

সরেজমিনে দেখা যায়, মিলন পালের এমপিএ, মুজিবুর মাতুব্বরের এমএমবি, ওয়াহিদ মিয়া কুটির এমজেডএম, আ. লতিফ মিয়া, মহসীন শরীফ, শাহজাহান, খলিফা কামাল, সরোয়ার হোসেন, জলিল খান, রেজওয়ান মোল্যাসহ ২৫ মালিকের ৩৭টি ইটভাটা অবস্থিত। এসব মালিকরা নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে ভাটার ট্রাক চলাচলের জন্য খাল বন্ধ করে ৩০ ফিট চওড়া রাস্তা নির্মাণ করেছেন।

ডিগ্রীরচর এলাকার অটোচালক রফিকুল মন্ডল জানান, বেড়িবাঁধের এই খাল অনেক চওড়া ছিল, তখন নৌকা চলাচল করত। খালটি এখন পানির প্রবাহ বন্ধ হয়ে এখন ছোট ছোট গর্তে পরিণত হয়েছে।

স্থানীয় আবদুর রাজ্জাক নামের এক কৃষক বলেন, যে জমিতে ফসল ফলাতাম সেটি এখন ইটভাটা। তারপর বাকি যে জায়গাটুকু আছে তাতেও কৃষি কাজ করা যাচ্ছে না। আগে এই খালের পানি দিয়েই সেচের কাজ চলত। এখন তো ভাটা মালিকরা খাল বন্ধ করে দিয়ে রাস্তা বানিয়েছে।

গফুর তালুকদার নামের আরেক কৃষক জানান, ইটের ভাটায় ব্যবহৃত হচ্ছে ট্রাক্টর। সেই ট্রাক্টর দিয়ে চলছে পরিবেশ ধ্বংসকারী ইটভাটার মাটি আনা-নেওয়ার কাজ।

মুজিবর মাতুব্বর নামের ইটভাটা মালিক অবশ্য দাবি করেছেন, ‘খালের ওপর প্রত্যেক ইটভাটা মালিক যে অংশটুকু ভরাট করেছে তা পানি উন্নয়ন বোর্ডের কাজ থেকে লিজ নেওয়া।’ একই দাবি করে ইটভাটার মালিট আব্দুল জলিল শেখ বলেন, পানি উন্নয়ন বোর্ডের থেকে আমরা লিজ নিয়ে ভাটায় যাতায়াতের রাস্তা নির্মাণ করেছি।

ফরিদপুরের সাংস্কৃতিককর্মী প্রফেসর আবুল কাশেম এই প্রসঙ্গে বলেন, ‘ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে খালটি দখল মুক্ত করতে হবে।’

ফরিদপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী সুলতান মাহমুদ বলেন, ‘ইটভাটা মালিককে খাল বন্ধ করে রাস্তা করার জন্য কোনো জমি লিজ দেওয়া হয়নি। বিষয়টি আমাদের নজরে ছিল না। এ বিষয়ে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

ফরিদপুর সদর উপজেলা ভূমি অফিসের সহকারী কমিশনার ভূমি মো. পারভেজ মল্লিক বলেন, বিষয়টি আমাদের দৃষ্টিগোচর হয়েছে। ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close