শামীম রেজা ডাফরুল, গোবিন্দগঞ্জ (গাইবান্ধা)

  ১০ এপ্রিল, ২০১৯

গোবিন্দগঞ্জে নববর্ষ ও বৈশাখী মেলা

মাটির তৈরি খেলনা তৈরিতে ব্যস্ত পালপাড়ার কুমাররা

আর কদিন পরেই উদযাপিত হবে বাংলা নববর্ষ পহেলা বৈশাখ। নববর্ষকে বরন করতে চলছে নানা প্রস্তুতি। প্রাণের উৎসব পহেলা বৈশাখ বাংলা নববর্ষকে বরন করতে আগ্রহের কমতি নেই গ্রামীন জনপদেও। আর এ বাংলা নববর্ষ ও বৈশাখী মেলাকে সামনে রেখে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জের কোচাশহরের পালপাড়ার কুমোরেরা। যেন নাওয়া-খাওয়ার ফুসরৎ পর্যন্ত নেই। কোচাশহরের পালপাড়ার ঘরে ঘরে এখন চলছে কাদা মাটির নানা রকম খেলনা, পুতুল তৈরির কাজ। আর এ কাজে পুরুষদের পাশাপাশি, গৃহবধূ, কিশোর, যুবক-যুবতী, বৃদ্ধ-বৃদ্ধারাও কাজ করছেন সমানতালে।

নববর্ষ ও বৈশাখী মেলার অন্যতম আকর্ষন মাটির তৈরী খেলনাসহ তৈজসপত্র। তাই মাটির তৈরী বিভিন্ন খেলনা ও তৈজসপত্র তৈরীতে চৈত্র মাসের প্রথম থেকেই ব্যস্ত সময় পার করছে উপজেলার বিভিন্ন এলাকার কুমাররা। উপজেলার কোচাশহরের পালপাড়ায় প্রায় দেড়শ পাল পরিবারের বাস। এই দেড়শ পরিবারের প্রায় প্রতিটি সদস্যই তাদের বাপ-দাদার কর্ম মাটি দিয়ে বিভিন্ন জিনিসপত্র তৈরির কাজ করে আসছেন। কোচাশহর বাজারের পাশেই পালপাড়ায় ঢুকেই চোখে পড়ে সড়কের দুই পাশে প্রতিটি বাড়ির সামনেই শত শত মাটির তৈরি বিভিন্ন রকম সামগ্রী। যেমন নানা রকম হাড়ি-পাতিল, বাটি, দইয়ের খুটি, সরা, পাট, ফুলদানিসহ শিশুদের বিভিন্ন রকম খেলনা। এ ছাড়া কেউ মাটি কাঁদা করছেন, কেউ চাকায় বিভিন্ন রকম জিনিস তৈরি করে রোদে শুকাতে দিচ্ছেন। কেউবা সব শেষে তাতে রং লাগিয়ে সুন্দর সুন্দর সামগ্রী তৈরি করছেন।

সরেজমিনে এক বাড়িতে দেখা গেল, চাঁকায় কাদা মাটি লাগিয়ে খেলনা হাড়ি পাতিল তৈরি করছে এক যুবক। কাছে গিয়ে নাম, কি করছে জিজ্ঞেস করতেই সে জানায় তার নাম শিপন। লেখা পড়ার পাশাপাশি সে বাবা-মা কে সহযোগিতা করতেই কাদা মাটি দিয়ে শিশুদের খেলনা তৈরি করছে। পাশেই শিশুদের খেলনা হাড়ি-পাতিল, ব্যাংক, পাখিতে রং লাগাতে ব্যস্ত শিপনের বাবা অখিল চন্দ্র পাল (৫৫) ও মা রেখা রানী পাল (৪০)। অখিল চন্দ্র পাল জানায় প্লাষ্টিকের খেলনা-পাতি তৈরী হওয়াতে মাটির খেলনা-পাতির আর সেরকম চাহিদা নেই। তবু বৈশাখী মেলা উপলক্ষে মাটির তৈরি বিভিন্ন সৌখিন সামগ্রী ও শিশুদের বিভিন্ন রকম খেলনা বেশী বিক্রি হওয়ায় তারা এসব তৈরী করছেন। তাদের তৈরি মাটির এসব সৌখিন সামগ্রী ও শিশুদের বিভিন্ন রকমের খেলনা রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে বিক্রেতারা এসে কিনে নিয়ে যায়। দামও ভাল। এসব তৈরি এবং বিক্রি করে তাদের সংসারে কিছুটা হলেও সচ্ছলতা ফিরে এসেছে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close