আশিকুর রহমান, মুকসুদপুর (গোপালগঞ্জ)

  ২৩ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯

হারিয়ে যাচ্ছে মুকসুদপুরের ইমিটেশন পণ্য

পাকিস্তান আমল থেকেই গোপালগঞ্জ ঐতিহ্যগতভাবে ইমিটেশন শিল্পের জন্য বিখ্যাত ছিল। ব্রোঞ্জ ও পিতলের গহনা তৈরি করে জীবিকা নির্বাহ করতো হাজার হাজার নারী-পুরুষ। আর এসব গহনা কেনাবেচাকে কেন্দ্র করে জেলার মুকসুদপুরের জলিরপাড়ে গড়ে উঠেছিল বিশাল ব্রোঞ্জ মার্কেট। কিন্তু উন্নত মালামাল, ডিজাইন ও টেকসইয়ের অভাবে দিন দিন চাহিদা কমে যাচ্ছে এসব গহনার। ফলে বিদেশি উন্নত পণ্যের ভীড়ে হারিয়ে যাচ্ছে গোপালগঞ্জের তৈরি ইমিটেশনের এসব গহনা।

ব্রোঞ্জ মার্কেটের ব্যবসায়ী উরুদাস শীল জানান, আমরা ঢাকার জিনজিরা থেকে কেজি প্রতি ৮০০ টাকা দরে ব্রোঞ্জ কিনে আনি। এরপর কারিগরদের মাধ্যমে ডাইসে ও হাতে গহনার ডিজাইন করে ৪-৬ ধরনের এসিডের পানিতে ২০ মিনিট ভিজিয়ে রাখতে হয়। পরে মেশিন দিয়ে পলিশ ও রং করে গহনা তৈরি করা হয়। এখানে হাতের আংটি, চুড়ি, কানেরদুল, নাকফুল, কবচ, মাদলী, নুপুর, হাতের বাজু, চেইন, ক্লিপ, ঝুমকা, চুলের কাটাসহ বিভিন্ন ধরনের গহনা তৈরি করা হয়। এসব গহনা আগে দেশ ছাড়াও বিদেশের বিভিন্ন জায়গায় রপ্তানি করা হত। বর্তমানে তেমন চাহিদা না থাকলেও বিভিন্ন জেলার খুদ্র ব্যবসায়ীরা এসব পণ্য কিনে নিয়ে যায়। কারিগরদের সাথে কথা বলে জানা যায়, আগে অনেক চাহিদা থাকায় হাজার হাজার কারিগররা এখানে গহনা তৈরি করতো। বর্তমানে এসব গহনার চাহিদা একদিকে যেমন কমে গেছে, অন্যদিকে ন্যায্য মজুরি না পাওয়ায় কারিগরের সংখ্যাও অনেকটাই কমে গেছে ।

ব্রোঞ্জ মার্কেট সমিতির সাধারণ সম্পাদক সুকান্ত তালুকদার জানান, চীন ও ভারতের মানসম্পন্ন ডিজাইনের গহনা ও সুলভ মূল্যের কারনে আমাদের এখানের তৈরি গহনার চাহিদা কমে গেছে। তাই যুগের সাথে তাল মিলিয়ে ব্যবসা টিকিয়ে রাখতে এখানের তৈরি গহনার পাশাপাশি বিদেশি পণ্য এনে বিক্রি করছে অনেকেই ।

ব্রোঞ্জ মার্কেট সমিতির সভাপতি মন্টু রায় বলেন, উন্নত মানের বিভিন্ন প্রয়োজনীয় মেশিন দেশে আনা গেলে আমরা কারিগর দিয়ে চাহিদা সম্পন্ন গহনা তৈরি করে বাজারজাত করতে পারবো। এ বিষয়ে সরকারি সহযোগিতা পেলে এ শিল্বপকে টিকিয়ে রাখা সম্ভব বলে মনে করেন তিনি।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close