পলাশ (নরসিংদী) প্রতিনিধি

  ১৮ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯

রাস্তার দুই পাশে শতাধিক মরা গাছ, দুর্ঘটনার শঙ্কা

‘প্রতিনিয়ত জীবনের ঝুঁকি নিয়ে নিয়মিত যাওয়া-আসা করি। আমরা মরলে কার কি আসে যায়! সামনে ঝড়-তুফানের দিন আসছে। তখন যে কোনো দিন হয়তো আপনিই আমাদের মৃত্যুর খবর ছাপাতে আসবেন এখানে! আমাদের জীবনের কোনো মূল্য আছে?’ এভাবেই প্রতিদিনের সংবাদকে কথাগুলো বলছিলেন নরসিংদীর পলাশ উপজেলার সাইফুল ইসলাম। নিয়মিতই তিনি চরসিন্দুর-বালিয়া আঞ্চলিক সড়কে যাতায়াত করেন। তার মতো অভিমত প্রকাশ করেছেন স্থানীয় অনেকেই।

তাদের অভিযোগ, শতাধিক মরা গাছ বহুদিন ধরে রাস্তার দুই পাশে শুকিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। কর্র্তৃৃপক্ষের অবহেলায় আর উদাসীনতার কারণে প্রায়ই ঘটছে ছোট-বড় দুর্ঘটনা। এতে দিনদিন পথচারী ও বিভিন্ন যানবাহনের যাত্রীদের মাঝে বাড়ছে আতঙ্ক।

জান যায়, পলাশ উপজেলার প্রায় ৩০ কিলোমিটার আঞ্চলিক সড়কের দুই পাশে বাবলা, কড়ই, আকাশি, শিশু, মেহগনিসহ বিভিন্ন প্রজাতির গাছের চারা রোপণ করে বন বিভাগ। গত কয়েক বছর ধরে রাস্তার দুই পাশে বিভিন্ন স্থানের এসব গাছ মরে যাচ্ছে। এর মধ্যে বেশির ভাগই শিশো গাছ। এছাড়া কিছু আকাশি গাছও মারা গেছে। শিকড়পচা রোগসহ নানা কারণে এসব গাছ মারা গেছে।

সরেজমিনে পলাশ উপজেলার কয়েকটি আঞ্চলিক সড়ক ঘুরে দেখা যায়, উপজেলার চরসিন্দুর ইউনিয়নের বালিয়া গ্রামে যাতায়াতের একমাত্র আঞ্চলিক সড়কের প্রায় তিন কিলোমিটার জুড়ে বন বিভাগ কর্তৃক সামাজিক বনায়ন, প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষা, পরিবেশ অনুকূল রাখা ও সৌন্দর্য্য বর্ধনের জন্য রাস্তার দুই পাশে শিশো গাছ (ইউক্যালিপটাস) সহ বিভিন্ন প্রকারের শতাধিক গাছ লাগানো হয়। এসব গাছ শিকড়পচা রোগে মরে গেছে, কোনোটিতে ঘুণে ধরেছে, আর কোনোটিতে বাসা বেঁধেছে কাঠপোকা। ফলে গাছগুলো মরে গিয়ে বর্তমানে রাস্তায় মরণ ফাঁদে পরিণত হয়েছে। একটু ঝড়বৃষ্টি ও দমকা হাওয়া হলেই যখন-তখন গাছগুলো ভেঙে ও উপড়ে পড়ছে। এতে প্রতিনিয়তই ঘটছে দুর্ঘটনা আর পথচারীদের মাঝে বাড়ছে আতঙ্ক। কিন্তু কর্তৃপক্ষ এসব আমলেই আনছেন না।

নরসিংদী বন বিভাগ সূত্রে জানা যায়, সামাজিক বনায়ন প্রকল্পের গাছগুলোর বয়স আনুমানিক ২৫ বছর। ফলদ গাছগুলো মৌসুমের বিভিন্ন সময়ে ফলে ভরে উঠে ও এসবের সুবিধা ভোগের জন্য সমাজের একটি শ্রেণি চিহ্নিত করা আছে বনবিভাগ কর্তৃক। গাছ মরে শুকিয়ে গেলে তা কর্তৃপক্ষের কাছে জানালে দরপত্রের মাধ্যমে তা কাটা বা অপসারণ করা হয়। অথচ অবহেলার কারণে এখনো গাছগুলো কাটা হচ্ছে না। বর্তমানে মরা গাছগুলোই এখন মরণ ফাঁদে পরিণত হয়েছে। একই অবস্থা পারুলীয়া, চরনগর্দী ও ডাঙ্গার আঞ্চলিক সড়কগুলোতে।

চরনগর্দী গ্রামের বিল্লাল হোসেন প্রতিদিনের সংবাদকে জানান, চরনগর্দী থেকে পারুলীয়া সড়কের প্রায় ৩ কিলোমিটার রাস্তার পাশে কয়েকশ মরা গাছ আছে। গাছগুলোর নিচ দিয়ে চলাচল করার সময় ভয় লাগে। সব সময় মনে হয়, এই বুঝি এগুলো মাথার ওপর ভেঙে পড়ল। কিছুদিন পর আসছে ঝড়-তুফানের দিন, তখন হয়তো এ রাস্তায় জীবনের ভয়ে কেউ চলাচল করবে না।

এসব বিষয়ে পলাশ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ভাস্কর দেবনাথ বাপ্পি প্রতিদিনের সংবাদকে জানান, সড়কের দুইপাশে মারা যাওয়া গাছগুলো দ্রুত অপসারণের জন্য সংশ্লিষ্ট মাধ্যমকে জানানো হবে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close