পাথরঘাটা (বরগুনা) প্রতিনিধি

  ১৬ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯

উপকূলে সম্ভাবনা থাকলেও কমে যাচ্ছে শুঁটকি উৎপাদন

উপকূলীয় এলাকা বরগুনার পাথরঘাটায় ব্যাপক কর্মসংস্থান আর রাজস্ব আয়ের সম্ভাবনা থাকলেও দিন-দিন কমে যাচ্ছে শুঁটকি প্রক্রিয়াজাতকরণ। স্থায়ী শুঁটকি পল্লী, পুঁজি সংকট ও শ্রমিকদের ন্যায্য মজুরি না পাওয়ায় শুঁটকি তৈরিতে আগ্রহ হারাচ্ছেন সংশ্লিষ্ট জেলে, শ্রমিক ও ব্যবসায়ীরা।

জেলার পাথরঘাটা উপজেলার চরাঞ্চলে গড়ে উঠেছে বেশ কয়েকটি অস্থায়ী শুঁটকি প্রক্রিয়াজাতকরণ পল্লী। এখানে কাঁচা মাছ কীটনাশক ছাড়াই রোদে শুকিয়ে প্রক্রিয়াজাতকরণ করে তৈরি করা হয় শুঁটকি।

চলতি মৌসুমে পল্লীগুলোতে ব্যাস্ত সময় পার করছেন জেলে, শ্রমিক ও ব্যবসায়ীরা। অস্থায়ীভাবে গড়ে ওঠা এসব পল্লীতে প্রতি বছর বিভিন্ন প্রজাতির প্রায় একশ’ মেট্রিক টন মাছের শুঁটকি উৎপাদন করা হয়। যা দেশের চাহিদা পূরণ করে রফতানি হয় বিদেশেও। বর্ষা মৌসুমে মাছ শুকানো যায় না বলে প্রকৃতিনির্ভর এ ব্যবসা চলে কার্তিক থেকে ফাল্গুন মাস পর্যন্ত। এ ছাড়া শুঁটকির সঙ্গে জড়িত অধিকাংশ ব্যবসায়ীদের রয়েছে পুঁজি সংকট। পুঁজি বলতে তাদের রয়েছে এনজিও’র লোন। এনজিও’র লোন ও মহাজনদের উচ্চ সুদ দিয়ে ব্যবসা চালানো তাদের পক্ষে কষ্টকর হয়ে পড়েছে। তারপরও সংশ্লিষ্টরা চালিয়ে যেতে চান এ ব্যবসা। দীর্ঘদিনেও স্থায়ী শুঁটকি পল্লী গড়ে না ওঠায় হতাশা প্রকাশ করেন উপকূলীয় জেলেরা।

শ্রমিকদের মজুরি কম দেওয়ার অভিযোগও রয়েছে। ফলে দিন দিন কমছে শুঁটকি তৈরি। তবে উপকূলে স্থায়ী শুঁটকি পল্লী নির্মাণ, শ্রমিকদের ন্যায্য পাওনা এবং পুঁজি সংকটের স্থায়ী সমাধানে স্বল্পসুদে ঋণের ব্যবস্থা করলে সরকারের রাজস্ব যেমনি বাড়বে তেমনি প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে শুঁটকির সঙ্গে জড়িত কয়েক হাজার পরিবারের স্থায়ী কর্মসংস্থানের সুযোগ ঘটবে মনে করেন বিশিষ্টজনরা।

পল্লীর কয়েকজন বিক্রেতা জানান, এখন ব্যাপক চাহিদা থাকলেও বর্ষা মৌসুমে ব্যবসা তেমন ভালো চলে না। সরকার যদি স্থায়ী শুঁটকি পল্লী নির্মাণ করে তাহলে সারা বছর ব্যবসা চালিয়ে যাওয়া সম্ভব হতো। সরকারিভাবে কোন সহজ শর্তে ঋণ না পাওয়ায় প্রতি বছরই দেনাগ্রস্ত হয়ে পড়তে হচ্ছে। শুঁটকি পল্লীর সঙ্গে জড়িত মৎস্যজীবীরা সাহায্যের পরিবর্তে সহজ শর্তে ঋণ আশা করছে সরকারের কাছে। আর সরকারি সহযোগিতা পেলে এ শিল্পকে আরও এগিয়ে নেওয়া সম্ভব বলে আশা তাদের।

সাগর উপকূলের বিভিন্ন চরাঞ্চলের এসব শুঁটকি শিল্পকে কেন্দ্র করে যেমন টিকে থাকে দেশের সব ফিড মিলগুলো। তেমনি টিকে থাকে বাংলাদেশের ডেইরি, পোলট্র্রি ও মৎস্য সেক্টরও। তাই শুঁটকি শিল্প বিকাশে সরকার দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন এমটাই প্রত্যাশা উপকূলীয় জেলেদের।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close