এস এম শাহাজামাল, দুর্গাপুর (রাজশাহী)

  ১০ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯

দুর্গাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স

তিন লাখ মানুষের সেবা দিচ্ছেন ৯ চিকিৎসক

কমিউনিটি ক্লিনিকগুলোতেও নেই পর্যাপ্ত জনবল

রাজশাহীর দুর্গাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এবং স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রে প্রয়োজনীয় চিকিৎসক না থাকায় ক্রমেই ভেঙে পড়েছে চিকিৎসাসেবা। উপজেলায় প্রতিদিন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ২৫০ থেকে ৩০০ জন রোগী এবং স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রে ১৫০ থেকে ২০০ জন রোগী সেবা নিতে আসেন। স্বাস্থ্য কমপেক্সে ২৮ জন এবং স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রে মাত্র একজন চিকিৎসক থাকার কথা। কিন্তু স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আছেন মাত্র ৯ জন এবং পরিবার কল্যান কেন্দ্রে কোনো চিকিৎসক নেই। এমন পরিস্থিতিতেও মাসের অর্ধেক দিনগুলোতে চিকিৎসকেরা উপস্থিত থাকেন না।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, উপজেলার পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রেগুলোতে কোনো চিকিৎসকই নেই। বছরের পর বছর ধরে পদ শূন্য রয়েছে। ফলে প্রতিদিন গড়ে প্রায় ৩০০ রোগীর চিকিৎসাসেবা প্রদান করছেন মাত্র ৫-৭ জন চিকিৎসক। এমন পরিস্থিতিতে বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়ে পড়েছে উপজেলার মানুষের চিকিৎসাসেবা।

সাতটি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভা নিয়ে গঠিত এ উপজেলা। প্রায় সাড়ে ৩ লাখ বাসিন্দা ছাড়াও পার্শ্ববর্তী পুঠিয়া ও পবা উপজেলার অনেক মানুষ এ উপজেলায় স্বাস্থ্য কমপেক্স এবং পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রে চিকিৎসা নিতে আসেন। প্রতিদিন ২০০ থেকে ২৫০ জন রোগী বহির্বিভাগের টিকিট কাটেন। তারপর চিকিৎসকের অভাবে তাদের ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হয়। শেষ পর্যন্ত অনেকে চিকিৎসা না পেয়ে নিরাশ হয়ে বাড়ি ফিরে যান। স্বাস্থ্য কমপেক্সে চিকিৎসা নিতে আসা উপজেলার সানপুকুর গ্রামের আমেনা বেগম, আলীপুর গ্রামের ফিরোজা খাতুন ও পালী গ্রামের নুর হোসের বলেন, চিকিৎসক না থাকায় টিকিট কেটে চিকিৎসকের চেম্বারের সামনে লাইনে দাঁড়িয়ে আছেন এক-দেড় ঘণ্টা ধরে। অনেক অপেক্ষার পরে তাদের চিকিৎসা নিতে হয়েছে। তার পরে ডাক্তারের রুমে প্রবেশ করা মাত্রই দ্রুত সেবা দিয়ে বের করে দেওয়া হয়।

স্বাস্থ্য কমপেক্স সূত্রে জানা যায়, ৫০ শয্যার হাসপাতালটিতে চিকিৎসকের অনুমোদিত পদ সংখ্যা ২৮টি। বর্তমানে কর্মরত রয়েছেন মাত্র ৯ জন এর মধ্যে মেডিকেল অফিসারে রয়েছে ৪ ও জুনিয়র কনসালট্যান্ট রয়েছে ৫ জন। অর্থাৎ শূন্য রয়েছে ১৯ পদই। ২৮ জন চিকিৎসকের পরিবর্তে রয়েছে মাত্র ৯ জন।

উপজেলা পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রগুলোতে সরকার একজন চিকিৎসকসহ ৫ কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়োগ দিয়েছেন। কিন্তু সরকারের চিকিৎসা ক্ষেত্রে যে সাফল্য নিয়ে এ পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রে দিয়েছেন তা এখন শুধুই আঁধার।

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. দেওয়ান নাজমুল আলম বলেন, প্রতিদিন ২০০ থেকে ২৫০ জন রোগীর সেবা দিতে মাত্র ৭ চিকিৎসকের হিশিম খেতে হয়। অনেক রোগীর সেবা দেওয়া সম্ভব হয়ে ওঠে না। ১০ মিনিট রোগীর সময়ে স্থলে ৫ মিনিট দেখেই ছেড়ে দিতে হয়। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পদগুলো দীর্ঘদিন ধরে খালি থাকায় মানসম্মত সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন রোগীরা।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close