সবুজ হোসেন, নওগাঁ

  ২২ জানুয়ারি, ২০১৯

নওগাঁ-রাজশাহী আঞ্চলিক মহাসড়ক

চার লেনে সম্প্রসারণের পরও মিলছে না সুবিধা

নওগাঁ-রাজশাহী আঞ্চলিক মহাসড়ক চার লেনে উন্নীত করেও মিলছে না কাক্সিক্ষত সুবিধা। এমনি বন্ধ হয়ে আছে পিচ ঢালাইয়ের কাজ। এতে খোয়া-বালি বিছানো রাস্তায় দুর্ভোগ পোচ্ছেন নওগাঁ শহরের মানুষ। সড়কে মাঝখানে থাকা বিদ্যুতের খুঁটি অপসারণ না হওয়া এই সমস্যা তৈরি হয়েছে। প্রকল্প সময়ের মধ্যে খুঁটি অপসারণ না হওয়ার সম্ভাবনা আছে বলে সড়ক ও জনপদ (সওজ) এবং নর্দান ইলেকট্রিসিটি সাপ্লাই কোম্পানি লিমিটেডের (নেসকো) কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে।

সওজ সূত্রে জানা যায়, ৪৮ টাকা ব্যয়ে নওগাঁ থেকে রাজশাহী পর্যন্ত ৭৪ কিলোমিটার আঞ্চলিক মহাসড়ক চারলেনে উন্নীতকরণে কাজ চলছে। এর মধ্যে মহাসড়েরক জন্য ২৫ কোটি টাকা এবং নওগাঁ শহরের প্রায় ১১ কিলোমিটার রাস্তার জন্য ২৩ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এরই মধ্যে মহাসড়কের প্রায় ৭০ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। কিন্তু শহরের অংশের কাজ আটকে আছে নেসকোর বিদ্যুতের খুঁটি অপসারণের জন্য। এজন্য গত বছরের ২১ জানুয়ারি সওজ বিভাগ থেকে নেসকোকে অর্থও পরিশোধ করা হয়। তারপরও খুঁটি অপসারণ হয়নি। গত বছরের মার্চে শুরু হওয়া কাজ চলতি বছরের এপ্রিলে শেষ হওয়ার কথা।

প্রকল্প কর্মকর্তাদের সূত্রে জানা যায়, নওগাঁর শহরের বাইপাস ঢাকার মোড় থেকে শহরের মধ্য দিয়ে শুরু হওয়া মহাসড়ক প্রশস্তকরণ কাজ শুরু হয়। পর্যায়ক্রমে পরবর্তীতে তা জেলার অন্য স্থানেও কাজ শুরু হয়। পরে যেসব স্থানে কাজ শুরু হয়েছে সেগুলোর কাজ এখন প্রায় শেষের পথে। কিন্তু নওগাঁর বাইপাস ঢাকার মোড় থেকে শুরু হয়ে শহরের মধ্য দিয়ে প্রায় ১১ কিলোমিটার রাস্তার কাজ এখনও শেষ হয়নি। রাস্তা প্রশস্তকরণসহ দীর্ঘদিন থেকে খোয়া ও পাথরের কাজ শেষ হলেও নেসকোর বৈদ্যুতিক খুঁটি থাকায় বিটুমিনাস কাজ (ওয়ারিং কোর্স/ সার্ফেসিং) শুরু করা যাচ্ছে না। তাছাড়া খুঁটি অপসারণ করে সড়কের নিচের লেয়ার সমূহে যথাযথ কম্প্যাকশন নিশ্চিত করা ছাড়া বিটুমিনাস সার্ফেসিং কাজ করলে তা টেকসই হবে না।

এদিকে খুঁটি অপসারণ না হওয়ায় দীর্ঘদিন থেকে পড়ে থাকা খোয়া ও পাথরের রাস্তা এখন বেহাল হয়ে পড়েছে। সেগুলো উঠে গিয়ে এখন রাস্তার মাঝে ছোট ছোট খানাখন্দের সৃষ্টি হয়েছে। এতে রাস্তার ধুলোয় পথচারীদের দূর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। প্রশস্ত রাস্তায় চলাচল থেকে বঞ্চিত হচ্ছে নওগাঁবাসী।

স্থানীয়রা বলেছেন, ধুলা বালিতে রাস্তা পাশে থাকা যায় না। বাস-ট্রাক চলাচলে অনেক সময় রাস্তায় ধুলায় অন্ধকার হয়ে যায়। দোকানের মধ্যে ধুলার স্তুপ জমে গেছে। রাস্তায় সকাল-বিকেল ঠিকাদাররা পানি দিলেও কোন কাজেই আসছে না।

নওগাঁ শহরের আরজি-নওগাঁ মহল্লার গোলাম রাব্বানী মার্কেটিং এ চাকুরি করেন। তিনি বলেন, ঢাকার মোড় থেকে নওগাঁ শহরের প্রায় তিন কিলোমিটার রাস্তা মোটর সাইকেল নিয়ে নিয়মিত যাতায়াত করেন। আসা-যাওয়া করতে পোশাকের উপর ধুলোর স্তুপ পড়ে এমন অবস্থা হয় যে চেনাই যায় না। এছাড়া খোয়া উঠে গিয়ে খানাখন্দের সৃষ্টি হয়েছে। এতে করে রাস্তায় ঠিক মতো চলাচলাও করা যায় না। যে কোন সময় দূর্ঘটনা ঘটতে পারে।

খুঁটি অপসারণ প্রসঙ্গে নওগাঁ সওজ প্রকৌশলী মুহাম্মদ হামিদুল হক প্রতিদিনের সংবাদকে বলেন, নওগাঁ থেকে রাজশাহী আঞ্চলিক মহাসড়ক শহরের ১১ কিলোমিটারের মধ্যে নেসকো বিদ্যুতের খুঁটি আছে। গত বছরের জানুয়ারিতে প্রায় ৮ কোটি টাকা নেসকোকে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত খুঁটি অপসারন করা হয়নি। তিনি বলেন, খুঁটি না সরিয়ে কাজ করলে পরবর্তিতে সেখানে আর টিকবে না। অর্থাৎ রাস্তা নষ্ট হয়ে যাবে। যার কারণে খুঁটি সরানো জরুরি হয়ে পড়েছে। এসব বিষয়ে নেসকো অবগত আছেন।

নেসকোর নওগাঁ প্রকৌশলী সুব্রত কুমার দাস বলেন, শুধু আমাদের গাফিলতির কারণে কাজটা হচ্ছে না, এটা ঠিক না। আমাদের ৬০ ভাগ কাজ ইতোমধ্যে হয়ে গেছে। বাকি যে ৪০ ভাগ কাজ হয়ে গেছে তারা সেখানে কাজ করতে পারেন। তিনি বলেন, আমাদের ডিপার্টমেন্ট (বিভাগ) থেকে মালামালের কিছুটা সংকট আছে। যার কারণে পর্যাপ্ত মালামাল বরাদ্দ পাওয়া যাচ্ছে না। এই কারণে কাজের অগ্রগতি হচ্ছে না। সম্পন্ন কাজ শেষ হতে এখনো ২-৩ মাস সময় লাগতে পারে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close