আজিজুল হাকিম, মানিকগঞ্জ

  ১৮ জানুয়ারি, ২০১৯

বিনা রসিদে দেড় সহস্রাধিক শিক্ষার্থীর কাছে থেকে অর্থ আদায়

মানিকগঞ্জে সরকারি দেবেন্দ্র কলেজের বিরুদ্ধে অভিযোগ

মানিকগঞ্জ সরকারি দেবেন্দ্র কলেজের আসন্ন এইচএসসি পরীক্ষার তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) বিষয়ের ব্যবহারিক পরীক্ষায় অর্থ আদায়ের অভিযোগ পাওয়া গেছে। পরীক্ষার নামে প্রত্যেক শিক্ষার্থীর কাছ থেকে দেড়শ টাকা করে আদায় করছেন আইসিটি বিভাগের কর্তৃপক্ষ। টাকা আদায় করা হলেও শিক্ষার্থীদের কোন প্রকার রশিদ দেওয়া হচ্ছে না। এই বছর ১ হাজার ৬৩৫ জন ব্যবহারিক পরীক্ষায় অংশ নিয়েছে।

কলেজ কর্তৃপক্ষ বলছে, শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে আদায় করা অর্থ আইসিটি শিক্ষকদের সম্মানি ও পরীক্ষার পিছনে ব্যয় করা হয়। শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, রশিদ বিহীন এই টাকা দিতে রাজি না হলে পরীক্ষায় নাম্বার দেওয়া হবে না বলে জানিয়েছে শিক্ষকরা।

গতকাল বৃহস্পতিবার কলেজে গিয়ে দেখা গেছে, এইচএসসি পরীক্ষার শিক্ষার্থীরা আইসিটি বিষয়ে ব্যবহারিক পরীক্ষা দিচ্ছে। এই শিক্ষার্থীরা জানান, ব্যবহারী পরীক্ষার নামে তাদের কাছ থেকে দেড়শ টাকা করে নিয়েছেন কলেজ প্রশাসন।

কলেজের শিক্ষার্থীরা জানান, দেবেন্দ্র কলেজের এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের বিজ্ঞান, মানবিক ও ব্যবসায় শিক্ষা শাখার আইসিটি ব্যবহারিক পরীক্ষায় জন্য প্রতি শিক্ষার্থীর কাছ থেকে দেড়শ টাকা করে আদায় করেছেন শিক্ষকরা। এই টাকা আদায়ের পর আইসিটি বিভাগ ও কলেজ থেকে কোন রশিদ দেওয়া হচ্ছেনা। কলেজে ফরম ফিলাপের সময় যাবতীয় ফি পরিশোধ করা হয়েছে। কিন্তু এখন পরীক্ষার নামে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে এই টাকা আদায় করছেন শিক্ষকরা। এই টাকা দিতে রাজি না হলে পরীক্ষায় নাম্বার দেওয়া হবে না বলে জানিয়েছে শিক্ষকরা। তাই বাধ্য হয়ে এই টাকা দিতে হচ্ছে শিক্ষার্থীদের।

এদিকে এক অভিভাবক দেলোয়ার হোসেন জানান, বেসরকারি কোন কলেজে আইসিটি ব্যবহারীক পরীক্ষার নামে টাকা নিচ্ছে না। অথচ সরকারী দেবেন্দ্র কলেজে প্রত্যেক শিক্ষার্থীর নিকট থেকে টাকা আদায় করছে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের এ অনিয়ম মেনে নেওয়া যায় না।

আইসিটি বিভাগ সূত্রে জানা যায়, কলেজের আইসিটি বিভাগ থাকলেও সেখানে কোনো শিক্ষাক নেই। তাই কলেজের রসায়ন বিভাগের বিভাগীয় প্রধান আখেরুজ্জামান খান, পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক শারমিন আফরোজ জেসমিন, প্রভাষক লুৎফর রহমান, গণিতের প্রভাষক বায়েজিদ হাসান, শফিকুল ইসলাম ও বোটানির প্রভাষক মাসুদ রানা এই বিভাগের পাঠদান করছেন।

আইসিটি বিভাগীয় প্রধানের দায়িত্বে থাকা দুলাল চন্দ্র পোদ্দার বলেন, সারা বছর এসব শিক্ষকরা বিনা পারিশ্রমিকে পড়ান। ব্যবহারীক পরীক্ষায় শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে টাকা নিয়ে শিক্ষকদের সম্মানি ও পরীক্ষার আনুসাঙ্গিক বিষয়ে খরচ করা হয়। তবে তিনি স্বীকার করেন, পরিপত্রে বলা হয়েছে পরীক্ষার ব্যয় সংশ্লিট কলেজ নিজ ব্যবস্থাপনা পরিচালনা করবেন। তাই শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে টাকা নেওয়া হচ্ছে।

কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর মো.সাইদুর রহমান বলেন, বিষয়টি ধারাবাহিকভাবে চলে এসেছে। আইসিটি বিভাগে কোন শিক্ষক না থাকায় অন্য বিভাগের শিক্ষক দিয়ে ক্লাস ও পরীক্ষা পরিচালনা করা হয়। শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে যে টাকা নেওয়া হয়েছে তা শিক্ষকদের সম্মানি ও পরীক্ষার যাবতীয় কাজে ব্যয় হয়।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close