রংপুর অঞ্চলে চলতি মৌসুমে আলুর বাম্পার ফলনের আশা করছেন আলু চাষীরা। এখন শেষ মুহূর্তে আলুর পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছেন তারা। তবে আলু উত্তোলনের সময় আলুর কাঙ্খিত দাম নিয়ে শঙ্কায় পড়েছেন চাষিরা।

আলু চাষিদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, গত বছর আলুর আবাদ করতে গিয়ে নানা সমস্যায় পড়েন আলু চাষিরা। প্রথমে আলুর দাম থাকলেও ভরা মৌসুমে আলুর দাম কমে যাওয়ায় অনেককেই লোকসান গুনতে হয়। তবে পূর্বের অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে অনেকেই এবার বেশি পরিমান জমিতে আলু লাগিয়েছেন। রংপুরের মাহীগঞ্জ, কাউনিয়া, পীরগাছা, চৌধুরানীসহ বিভিন্ন এলাকার মাঠজুড়ে এখন বিস্তৃত আলু ক্ষেত।

রংপুরের মাহীগঞ্জ এলাকার আলুচাষি সিরাজুল ইসলাম জানান, আবহাওয়া খারাপ ও আলুর বাজার দর কম হওয়ায় গত বছর আলুতে অনেক লোকসান গুনতে হয়েছে আমাদের। এ বছর বেড়েছে সার, বীজ ও কীটনাশকের দাম। সব মিলে প্রতি বিঘা জমিতে প্রায় ৩০ হাজার টাকা ব্যয় করতে হচ্ছে।

এ বছর এখনো আবহাওয়া অনুকূলে আছে জানিয়ে তিনি বলেন, এবারের আলু ফলনে আমরা বেশ আশাবাদী। দাম ঠিক থাকলে লাভবান হওয়া যাবে।

পীরগাছা উপজেলার আদম সবুজ পাড়া গ্রামের আলুচাষি মোহাম্মদ আলী বলেন, গত বছর প্রায় ২০ বিঘা জমিতে আলুর চাষ করে অনেক লোকসান করেছি। তাই এ বছর শুধু ১০ বিঘা জমিতে আলু লাগিয়েছি। এই সময়ে আলুতে অনেক রোগবালাই দেখা দিলেও এবছর এখনো পর্যন্ত তেমন কোনো রোগ দেখা যায়নি। তবে এবার আলু লাগানোর সময় আলু বীজের দাম বেশি হওয়ায় খরচটাও বেড়ে গেছে।

রংপুর আঞ্চলিক কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ মো. মনিরুজ্জামান জানান, রংপুরে এ বছর আলুর বাম্পার ফলন হওয়ার সম্ভাবনা আছে। চলতি বছরে রংপুর জেলায় ৬ হাজার ৫৬৫ হেক্টর জমিতে দেশি আলু এবং ৪৩ হাজার ৫১৫ হেক্টর জমিতে উফশী আলুর আবাদ হয়েছে যা আবাদের লক্ষ্যমাত্রাকে ছাড়িয়েছে। এবারে ১০ লক্ষ ৭৬ হাজার ৪৬০ মেট্রিক টন আলুর উৎপাদন হবে বলে লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে।

তিনি আরো বলেন, অন্যান্য বছরে আলু ক্ষেতে বিভিন্ন রকমের ভাইরাস দেখা দিলেও এবছর এখনো তেমন কোনো সমস্যায় পড়তে হয়নি কৃষকদের। যে কারণে কৃষকেরা এবার একটু বেশিই আশাবাদী।

"