নোবিপ্রবি প্রতিনিধি

  ১৯ ডিসেম্বর, ২০১৮

নিজ জেলার সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠে অবহেলিত বীরশ্রেষ্ঠ রুহুল আমিন

১৯৭১ সালের মহান স্বাধীনতাযুদ্ধে অতুলনীয় সাহস ও আত্মত্যাগের নিদর্শন স্থাপনকারী বীর মুক্তিযোদ্ধাদের স্বীকৃতিস্বরূপ প্রদান করা হয় বীরশ্রেষ্ঠ পদক। স্বাধীনতা যুদ্ধে শহীদ সাতজন মুক্তিযোদ্ধাকে এই পদক প্রদান করা হয়েছে। মুক্তিযুদ্ধের সর্বোচ্চ সম্মাননা পুরস্কার বীরশ্রেষ্ট পদকে ভূষিত সাতজনের মধ্যে একজন ন আর্টিফিশিয়াল মোহাম্মদ রুহুল আমিন। ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে বাংলাদেশ নৌ বাহিনীর গানবোট ‘পলাশকে’ বাঁচানোর চেষ্টায় তিনি শহীদ হয়েছিলেন।

১৯৩৫ সালে নোয়াখালী জেলার সোনাইমুড়ি উপজেলার বাঘপাঁচড়া গ্রামের এক সাধারণ পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। তাঁর পিতা আজহার পাটোয়ারী ও মা জোলেখা খাতুন। নিজ এলাকায় পড়াশোনা শেষ করে তিনি জুনিয়র মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার পদে যোগদান করেন তৎকালীন পাকিস্তান নৌবাহিনীতে। ১৯৭১ সালে রুহুল আমিন চট্টগ্রামে কর্মরত ছিলেন। দেশের টানে তিনি একদিন বের হয়ে পড়েন নৌঘাটি থেকে। বাংলাদেশ নৌবাহিনীর গানবোট ‘পলাশ’র প্রধান ইঞ্জিনরুমে আর্টিফিসার হিসেবে দায়িত্ব গ্রহন করেন মোহাম্মদ রুহুল আমিন। কিন্তু নিজ জেলায় অবহেলিত জাতীর এই বীর সন্তান। দেশের অন্যতম বিদ্যাপীঠ নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (নোবিপ্রবি)। প্রতিষ্ঠানটি প্রতিষ্ঠার ১৪ বছর পার হতে চললেও বিশ্ববিদ্যালয়টিতে বীরশ্রেষ্ঠ রুহুল আমিন এর নামে নেই কোনো স্মৃতিস্তম্ভ। বিশ্ববিদ্যালয়ের কোন হল, ভবন বা ভাস্কর্য কোথাও খুজে পাওয়া যায়না জাতির এই বীর সন্তানের নাম। বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্মাণাধীন দুটি নির্মাণাধীন হলসহ পাঁচটি আবাসিক হল থাকলেও কোনটির নামকরণেই এই বীরশ্রেষ্ঠের নাম ঠাঁই পায়নি।

বিষয়টি নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার প্রফেসর মোমিনুল হকের সাথে আলাপ হলে তিনি জানান, ‘বীরশ্রেষ্ঠ রুহুল আমিন শুধু নোয়াখালী জেলার নয়, গোটা জাতির। তার নাম বিশ্ববিদ্যালয়ে না থাকাটা আসলেই লজ্জা ও দুঃখজনক। তাঁর নামে স্থাপনার নামকরণের প্রস্তাব কয়েকবার উঠেছিল। কিন্তু ‘বঙ্গবন্ধু’ ‘বঙ্গমাতা’ ও ‘হাজী ইদ্রিস’র নামের কাছে পিছে পড়ে যায়।’

বীরশ্রেষ্ঠ রুহুল আমিনের পরিবারের সাথে বিষয়টি নিয়ে কথা হলে তাঁর দৌহিত্র সোহেল চৌধুরী বলেন, আজ হোক আর পঞ্চাশ বছর পর হোক, জাতি ঠিকই এই নামগুলো (বীরশ্রেষ্ঠ) খুঁজে নিবে। তাদের নিজেদের পরিচয়ের জন্য, নিজের ইতিহাসের জন্য।’

নোবিপ্রবি শিক্ষক সমিতির সাবেক সভাপতি সহযোগী অধ্যাপক আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘এ বিশ্ববিদ্যালয়ে উনার (বীরশ্রেষ্ঠ রুহুল আমিন) নামে অবশ্যই একটি স্থাপনা থাকা উচিৎ, নুন্যতম একটি হল হলেও। আমরা যদি অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলো দেখি, সেখানে স্থানীয় বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গদের নামেই সব হলগুলোর নামকরন করা হয়।’

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close