জহুরুল ইসলাম খোকন, সৈয়দপুর (নীলফামারী)

  ২৭ নভেম্বর, ২০১৮

ঝুঁকি নিয়ে রেললাইনের ওপর শীতবস্ত্র কেনাবেচা

নীলফামারীর সৈয়দপুর উপজেলা শহরের রেল লাইনের ওপরে বসা পুরাতন গরম কাপড় কেনার ধুম পড়েছে। রেললাইন এলাকায় জীবনের ঝুঁকি থাকালেও কম মূল্যে ভালো কাপড় কিনতে ভীড় করছে অনেকেই। এছাড়াও গরম কাপড় নিতে লোকজন ভীর করছে শহরের ব্যস্ততম সড়কের ফুটপাত গুলোতে। ক্রেতারা তাদের সাধ্যমত কম মূল্যে শীত বস্ত্র কিনতে পারছে বলেই এ দুই জায়গা উপচে পড়া ভীড়।

রেলবাজার বা অভিজাত প্লাজা মার্কেটে যে জ্যাকেটের মূল্য চাওয়া হচ্ছে ৩ হাজার টাকা সেই জ্যাকেট রেল লাইনে বসা পুরাতন গরম কাপড় মার্কেটে পাওয়া যাচ্ছে মাত্র ৫০০-৭০০ টাকা দরে। শোয়েটার, লংজ্যাকেট ও শর্টকোট পাওয়া যাচ্ছে ২০০-৩০০ টাকা দরে।

জেলা সদর থেকে রেল লাইনে বসা পুরাতন গরম কাপড় বিক্রয় মার্কেটে আসা চামেলী নামের এক যুবতী জানান, অভিজাত দোকান গুলোর তুলনায় এ মার্কেটে কম দামে অনেক ভালো কাপড় পাওয়া যায়। তবে এবারে দাম একটু বেশি। কাপড় কিনার সময় প্রচন্ড ভয়ও হয়। কারণ হঠাৎ ট্রেন চলে আসলে মরা ছাড়া উপায় থাকবে না।

পিংকী নামের অপর এক ক্রেতা জানান, অন্যান্য মার্কেটের চেয়ে রেললাইনে বসা পুরাতন গরম কাপড়ের দাম একেবারেই কম। তবে এবারে দাম কেন জানি কিছুটা বেশি মনে হচ্ছে। শীত শবে মাত্র শুরু হয়েছে। এখনি যে দাম হাকানো হচ্ছে শীত বাড়লে নি¤œ আয়ের মানুষের নাগালের বাইরে যেতে পারে বলে তিনি জানান।

লাভলু, মরিয়ম, রানীসহ একাধিক ক্রেতা জানান, পুরাতন গরম কাপড়ের মার্কেটটা অন্য কোথাও হলে ভালো হতো। কম দামে ভালো কাপড় পাওয়া যায় সত্য। কিন্তু মরণের ভয় থাকে সারাক্ষণ। কাপড় কেনা কাটার সময় হঠাৎ ট্রেন চলে আসলে চিৎকার করার সময়ও পাওয়া যাবে না বলে মন্তব্য করেন তিনি।

কবির হোসেন নামের এক ব্যবসায়ী জানান, রেললাইনে বসা পুরাতন গরম কাপড় ব্যবসায়ীদের কারণে প্রতি বছরই আমাদেরকে লোকসান গুনতে হচ্ছে। ঢাকা বা ভারত থেকে কাপড় কিনে বিক্রি করতে জ্যাকেট প্রতি দুই শত টাকা লাভ করেও আসল টাকাটাও উঠে না। দোকান ভাড়া, পৌর ট্যাক্স, কারেন্ট বিলসহ নাইটগার্ড বেতন দিতে গিয়ে কিছুই থাকছে না। রেললাইনে যারা বসছেন তারা শুধুমাত্র রেল পুলিশদের দৈনিক কিছু দিয়ে অধৈক লাভ ঘরে নিয়ে যাচ্ছেন।

রেলওয়ে থানার ওসি এমদাদুল হক জানান, এলাকার ব্যবসায়ীদের অভিযোগ বানোয়াট ও ভিত্তিহীন। রাজনৈতিক সমর্থক বা নেতার লোকজন পরিচয় দিয়ে তারা দাপটের সঙ্গে ব্যবসায় করে চলেছেন। তাদের উচ্ছেদ করার চেষ্টা করলে বদলী করে দেওয়ার ভয়ও দেখায় তারা। তবে এবারে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবগত করে অনুমতি স্বাপেক্ষে সব গুড়িয়ে দেওয়া হবে বলে তিনি সাংবাদিকদের জানান।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close